গাজায় ইসরায়েলি হামলায় আরও ২৯ ফিলিস্তিনি নিহত
গাজাজুড়ে ইসরায়েলের বর্বরোচিত হামলায় নতুন করে আরও ২৯ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এর পাশাপাশি নতুন হামলা ও হতাহতের খবরও পাওয়া যাচ্ছে।
সংবাদমাধ্যম আলজাজিরাকে অবরুদ্ধ ভূখণ্ডটির চিকিৎসা সূত্রগুলো এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলের গাজা আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৫০ হাজার ৮৮৬ ফিলিস্তিনি নিহত এবং এক লাখ ১৫ হাজার ৮৭৫ জন আহত হয়েছেন।
তবে সরকারী গণমাধ্যম কার্যালয় জানিয়েছে, মৃত্যু সংখ্যা ৬১ হাজার ৭০০ ছাড়িয়ে গেছে এবং ধ্বংসস্তুপের নিচে নিখোঁজ হাজার হাজার মানুষকে মৃত বলে ধরা হচ্ছে।
আরও পড়ুন:
রোগীর পেটে জীবন্ত মাছি!
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ভোরে গাজার শাসকগোষ্ঠী হামাসের নেতৃত্বাধীন হামলায় ইসরায়েলে অন্তত ১,১৩৯ জন নিহত হয় এবং ২০০-র বেশি মানুষকে বন্দি করে গাজায় নিয়ে যাওয়া হয়। এই ঘটনার কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে গাজায় ভয়াবহ হামলা শুরু করে তেল আবিব।
গত ১৯ জানুয়ারি গাজায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় ইসরায়েল। তারপর প্রায় দু’মাস গাজায় কম-বেশি শান্তি বজায় ছিল; কিন্তু গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহারের প্রশ্নে হামাসের মতানৈক্যকে কেন্দ্র করে মার্চ মাসের তৃতীয় গত সপ্তাহ থেকে ফের গাজায় বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, গত ১৮ মার্চ থেকে গাজায় নতুন করে শুরু হওয়া ইসরায়েলি বিমান হামলায় এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৫২২ ফিলিস্তিনি নিহত এবং আরও ৩ হাজার ৮০০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। ইসরায়েলের বর্বর এই হামলা চলতি বছরের জানুয়ারিতে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভেঙে দিয়েছে।
আরও পড়ুন:
২৫ জিম্মিকে মুক্তি দিল হামাস
জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েলের বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছিলেন। এছাড়া অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।
এদিকে, ইসরায়েলি দখলদার বাহিনী অবরুদ্ধ গাজায় কেবল সামরিক নয়, চিকিৎসা ব্যবস্থার ওপর চাপ অব্যাহত রেখেছে। গাজা উপত্যকার অন্য প্রান্তে, বিশেষ করে খান ইউনিস শহরে, অস্থায়ী তাবু ও আবাসিক বাড়িগুলোর ওপর ক্রমাগত হামলা চালানো হচ্ছে।
ইহুদিবাদী ইসরায়েল পদ্ধতিগতভাবে গাজার গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল ও ভূমির একাধিক অংশকে বিচ্ছিন্ন করে তথাকথিত ‘বাফার জোন’ বিস্তৃত করার অপচেষ্টা করছে। তবে ব্যাপারটা শুধু সামরিক চাপেই সীমাবদ্ধ নয়, এখন এতে যুক্ত হয়েছে চিকিৎসা খাতকে বিচ্ছিন্ন করা।
আরও পড়ুন:
২৫ জিম্মিকে মুক্তি দিল হামাস
এদিকে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক টেড্রোস আধানম গেব্রেয়েসুস সতর্ক করে বলেছেন, গাজায় ত্রাণ প্রবেশে ইসরায়েলের অবরোধের কারণে সেখানে আরও রোগব্যাধি এবং মৃত্যুর আশঙ্কা বাড়ছে। বর্তমানে গাজায় ১০ হাজারের বেশি মানুষকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য সরিয়ে নেওয়া জরুরি।