পীরগাছা সরকারি কলেজ /
মৃত্যুর ১ বছর পর অধ্যক্ষ হলেন মৃত অধ্যাপক মুত্তালিব
প্রায় এক বছর আগে মৃত্যুবরণ করা অধ্যাপক আব্দুল মুত্তালিবকে রংপুরের পীরগাছা সরকারি কলেজে অধ্যক্ষ হিসেবে পদায়ন করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
গত মঙ্গলবার মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের এক প্রজ্ঞাপনে তার এ পদায়নের বিষয়টি উঠে আসে। এ ঘটনা প্রকাশ হলে বিভিন্ন মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা গেছে।
এদিন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের উপসচিব মাহবুব আলম স্বাক্ষরিত ওই প্রজ্ঞাপনে ৩৫ জন অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার পদায়নের তালিকা প্রকাশ করা হয়। ওই তালিকার ২৭ নম্বরে রয়েছেন অধ্যাপক আব্দুল মুত্তালিবের নাম, যিনি পীরগাছা সরকারি কলেজে সংযুক্ত অধ্যক্ষ ও ওএসডি হিসেবে পদায়িত হয়েছেন।
এর পরপরই প্রশ্ন উঠেছে, মৃত্যুর এক বছর পরেও কীভাবে একজন মৃত ব্যক্তির নাম সরকারি পদায়নের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হলো? বিষয়টিকে প্রশাসনিক অব্যবস্থাপনা বলছেন অনেকেই।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, অধ্যাপক আব্দুল মুত্তালিব রাজশাহী জেলার নবাবগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা হলেও বসবাস করতেন রাজশাহী শহরের হেলেনাবাদ এলাকায়। তিনি রংপুর কারমাইকেল কলেজের ইতিহাস বিভাগে দীর্ঘদিন অধ্যাপনা করেছেন। পরবর্তীতে রাজশাহীর বানেশ্বর সরকারি কলেজে অধ্যক্ষ হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন। ২০২৩ সালের ১৬ ডিসেম্বরের একটি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের পর নাস্তা করার সময় হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। পরে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে আবার একই প্রজ্ঞাপনের ১৪ নম্বরে থাকা এস এম আশাদুল ইসলামকে গাইবান্ধা সরকারি কলেজ থেকে ফুলছড়ি ডিগ্রি কলেজে বদলি দেখানো হয়েছে। যিনি ২০২৩ সাল থেকে পীরগাছা সরকারি কলেজে অধ্যক্ষ হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। এ নিয়েও বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে।
পীরগাছা সরকারি কলেজের বর্তমান অধ্যক্ষ এস এম আশাদুল ইসলাম জানান, আমার ধারণা, তথ্য হালনাগাদ না থাকার কারণেই এ বিভ্রাট হয়েছে। বিষয়টি আমি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাব।
পীরগাছা সরকারি কলেজের উপাধ্যক্ষ শাহ ফাহমিদ হাসান রনু বলেন, ‘২০২৩ সালের নভেম্বরে এস এম আশাদুল ইসলামকে এখানে এবং অধ্যাপক মুত্তালিবকে বানেশ্বর কলেজে পদায়ন করা হয়েছিল। মুত্তালিব স্যার এক বছর আগে মারা গেছেন। এখন কীভাবে তার নাম পদায়ন তালিকায় এলো! আমরা জানি না।’
বানেশ্বর সরকারি কলেজের উপাধ্যক্ষ খোরশেদ আলম জানান, ২০২৩ সালের ১৬ ডিসেম্বর অফিসে নাস্তা খাওয়ার সময় স্যার হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং চেয়ারে বসেই অচেতন হয়ে যান। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পর তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
কারমাইকেল কলেজের ইতিহাস বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হাবিবুর রহমান বলেন, ‘মুত্তালিব স্যার এক বছর তিন মাস আগেই মারা গেছেন। এতদিন পর তার নাম বদলির তালিকায় দেখে আমরা হতবাক!’
রংপুর অঞ্চলের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের পরিচালক অধ্যাপক মো. আমির আলী বলেন, ‘অধ্যাপক আব্দুল মুত্তালিব জীবিত অবস্থায় বদলির আবেদন করেছিলেন। এরপর কি হয়েছে, সে বিষয়ে আমরা অবগত নই। এসব পদায়নে আমাদের ভূমিকা সীমিত।’