ষষ্ঠ শ্রেণির ২ ছাত্রীকে গণধর্ষণ, চেয়ারম্যানের হস্তক্ষেপে মিমাংসার চেষ্টা

নরসিংদী প্রতিনিধি
০৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:৫৭
শেয়ার :
ষষ্ঠ শ্রেণির ২ ছাত্রীকে গণধর্ষণ, চেয়ারম্যানের হস্তক্ষেপে মিমাংসার চেষ্টা

ষষ্ঠ শ্রেণির ২ ছাত্রী প্রেমিকদের সঙ্গে ঘুরতে গিয়ে গণধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। 

গত সোমবার সন্ধ্যায় জেলার রায়পুরা উপজেলার চরআড়ালিয়া ইউনিয়নের বাঘাইকান্দী গ্রামে আট বন্ধু মিলে এই গণধর্ষণের ঘটনা ঘটিয়েছে। ধর্ষিতা উভয়েই পূর্ব বাঘাইকান্দি এসইএসডিপি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী ও বাঘাইকান্দী গ্রামের বাসিন্দা।

ধর্ষিতা দ্বয়ের পিতা ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, সোমবার বিকেলে বাঘাইকান্দী গ্রামের কাইয়ুম (২১) ও মুন্না (২২) এর সঙ্গে নৌকাযোগে ঘুরতে যায় দুই বান্ধবী। নৌকা দিয়ে ঘুরে ফিরে নদীতে সময় কাটিয়ে কৌশলে কাইয়ুম ও মুন্না বেলা গড়িয়ে সন্ধ্যায় নৌকা তীরে ভিড়ান এবং তাদেরকে পূর্ব বাঘাইকান্দি এসইএসডিপি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের পিছনে নির্জন স্থানে নিয়ে যান। পরে কাইয়ুম ও মুন্না তাদের আরও ছয় বন্ধুকে ডেকে আনেন। বন্ধুরা এলে সকলে মিলে ভয়ভীতি দেখিয়ে দুই নাবালিকা ছাত্রীকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে ফেলে রেখে চলে যান। এখান থেকে ধর্ষিতারা কোনোভাবে নিজ বাড়ি ফিরে গেলে তাদের অবস্থা দেখে পরিবারের সদস্যরা ঘটনা জানতে চাইলে ধর্ষণের ঘটনা প্রকাশ পায়। 

অভিযুক্ত কাইয়ুম চরআড়ালিয়া গ্রামের সেন্টু মিয়ার পুত্র এবং মুন্না একই গ্রামের শাহ মিয়া পুত্র। এছাড়া কাইয়ুম ও মুন্নার ডেকে আনা বন্ধুরা হলেন বাঘাইকান্দী গ্রামের কাদির মিয়ার ছেলে সাইফুল মিয়া, একই গ্রামের খলিল মিয়ার ছেলে রমজান মিয়াসহ অজ্ঞাত আরও ৪ জন।

এ ব্যাপারে এক ধর্ষিতার পিতা বলেন, ‘আমরা চেয়ারম্যানের কাছে বিচার চেয়েছি। চেয়ারম্যান বলেছেন, বিচার করে দেবেন। আমরা বিচারের অপেক্ষায় আছি। থানা-পুলিশ, এসব ঝামেলায় যেতে চাইনা। তাছাড়া মেয়ের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তা করছি।’

অপর ধর্ষিতার পিতা বলেন, ‘রাতে বাড়ি ফিরে ঘটনা শুনেই আমি অজ্ঞান হয়ে যাই। ধর্ষণকারীরা প্রভাবশালী। আমরা তাদের সঙ্গে পারব না। তাছাড়া মেয়েকে ভবিষ্যতে বিয়ে দেওয়ার বিষয়টি চিন্তা করে এলাকার চেয়ারম্যানের কাছে বিচার দিয়েছি। চেয়ারম্যান যে বিচার করবেন, আমি তাই মেনে নেব। আমি গরীব মানুষ। দিন আনি দিন খাই। থানা-পুলিশ করার মত সমর্থ আমার নেই।’

এ ব্যাপারে চরআড়ালিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাসুদা জামান সরকার বলেন, ‘তারা আমাকে ঘটনাটি জানিয়েছেন। আমি ঘটনা শুনেছি। সকল বিষয় চিন্তা করে আমি তদন্তের জন্য লোক পাঠিয়েছি। ঘটনার বিস্তারিত জেনে বিষয়টি নিয়ে এলাকার গণ্যমান্যদের নিয়ে বিচারে বসব।’

তবে, ধর্ষণের ঘটনা গ্রাম আদালতে মিমাংসা যোগ্য কিনা এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোনো মন্তব্য করেননি।

এছাড়া বিচারে বসতে বিলম্ব হলে ধর্ষণের আলামত নষ্ট হয়ে যাবে, তখন বিচার কিভাবে করবেন এ প্রশ্নের জবাবেও তিনি কোনো উত্তর দেননি।

এ ব্যাপারে রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আদিল মাহমুদ বলেন, ‘ধর্ষণের ঘটনা সম্পর্কে আমি অবগত নই। তাছাড়া কেউ থানায় কোনো লিখিত অভিযোগ দায়ের করেনি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’