প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে গণধোলাইয়ে প্রেমিক নিহত
চাঁদপুরে প্রেমিকার বাড়িতে দেখা করতে গিয়ে প্রেমিক নূর মোহাম্মদ তূষার (২৫) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় প্রেমিকাসহ দুজনকে আটক করেছে পুলিশ।
গতকাল রবিবার রাতে উপজেলার গোহট দক্ষিণ ইউনিয়নের রাজাপুর গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। প্রেমিক নূর মোহাম্মদ মনোহরপুর গ্রামের মিজানুর রহমানের ছেলে।
এই ঘটনায় প্রেমিকা ফিমা আক্তার (১৮) এবং তার মা হাছিনা বেগমকে (৪৫) আটক করেছে কচুয়া থানা পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানা যায়, উপজেলার মনোরপুর গ্রামের নকড়া বাড়ির মৃত মিজানুর রহমানের ছেলে নূর মোহাম্মদ তুষার। একই উপজেলার গোহট দক্ষিণ ইউনিয়নের রাজাপুর গ্রামের আব্দুল মান্নানের মেয়ে প্রেমিকা ফিমা আক্তার (১৮) সাথে রবিবার রাতে দেখা করতে যান। এসময় প্রেমিকার পরিবার ও বাড়ির লোকজন প্রেমিক তুষারকে আটক করে গণধোলাই দেয়।
পরে তুষারের মা তাছলিমা বেগমকে প্রেমিকার বাড়ির লোজকন খবর দিয়ে ছেলেকে তার মায়ের কাছে তুলে দেয়। এ সময় তার সারা শরীর, মুখ ও মাথায় রক্তাক্ত অবস্থা দেখে রাতেই কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করানো হয়। পরে আজ সোমবার সকাল থেকে অবস্থার অবনতি হয়ে হাসপাতালেই চিকিৎসারত অবস্থায় দুপুরে তুষারের মৃত্যু হয়।
নিহতের মা তাসলিমা বেগম জানান, আমার ছেলে তুষার ও ফিমা আক্তারের সাথে ফেইসবুকে পরিচয় হয়। পরবর্তীতে তাদের দুজনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। তাদের প্রেমের সম্পর্ক আমি জানতাম। রবিবার রাতে ফিমার বাড়ি থেকে আমাকে ফোন দিয়ে তাকে নিয়ে যাওয়ার জন্য বলে। তুষারকে তাদের বাড়িতে আটকে রাখা হয়েছে। পরে আমি রাজাপুর গ্রামের ওই বাড়িতে গিয়ে ছেলেকে রক্তাক্ত ও অজ্ঞান অবস্থায় দেখতে পাই। পরে দ্রুত ছেলেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করাই।
পরবর্তীতে আজ দুপুরের দিকে চিকিৎসারত অবস্থায় তুষারের মৃত্যু হয়। ছেলেকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবী করেন নিহতের মা তাসলিমা।
এ বিষয়ে কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা ডাঃ জাহিদ হোসাইন জানান, তুষারকে যখন হাসপাতালের জরুরী বিভাগে আনা হয় তখন তিনি অজ্ঞান অবস্থায় ছিলেন। তার অবস্থার অবনতি দেখে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। কিন্তু রোগীর সাথে আসা তার মা ও লোকজন তার কি হয়েছে? তা গোপন করে হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে দিতে বলে।
ডা. জাহিদ আরও বলেন, রোগীর অবস্থা খুবই খারাপ বার বার বলার পরেও রোগীর সাথে আসা লোকজনরা হাসপাতালে ভর্তি করানোর জন্য চাপ প্রয়োগ করলে আমরা হাসপাতালে ভর্তি করি। পরে আজ সকালে রোগীর অবস্থা আরো অবনতি দেখে রোগীকে দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার জন্য বললে রোগীর স্বজনরা কর্নপাত করেনি। তার মাথায় ইনজুরির কারণে তার মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
কচুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আজিজুল ইসলাম বলেন, হত্যাকাণ্ড সন্দেহে প্রেমিকা ফিমা আক্তার ও তার মা হাছিনা বেগমকে জিজ্ঞাসাবাদ করা জন্য আটক করা হয়েছে। আর নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।