ঘুমাতে গেলে চোখ বুজতেই তার মুখটা দেখতে পাই: তাসনিম জারা
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা রাজবাড়ীতে একদিনে বিভিন্ন গ্রামে ১০০ কিলোমিটার পাড়ি দিয়েছেন বলে দাবী করেছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার তার এক ফেসবুক পোস্টে রাজবাড়ীতে এক দিনের সফর নিয়ে বিস্তারিত তথ্য জানান।
ফেসবুক পোস্টে তিনি জানান, ঈদের পরদিন রাজবাড়ীতে ছিলাম। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এক শত কিলোমিটারেরও বেশি পথ পাড়ি দিয়েছি। এক গ্রাম থেকে আরেক গ্রামে, এক উঠোন থেকে আরেক উঠোনে গিয়েছি। কোনো মঞ্চ ছিল না, কোনো মাইক্রোফোন ছিল না। আমরা গোল হয়ে বসেছি মানুষের ঘরের উঠোনে। কখনো খোলা আকাশের নিচে, কখনো টিনের চালার নিচে, আবার কখনো গাছতলায়। আশেপাশের বাড়ির মানুষরা এসে বসেছেন। বলেছেন তাদের জীবনের গল্প, ছোট ছোট সমস্যার কথা যার সমাধান হলে জীবনটা হয়তো একটু সহজ হয়ে উঠত।
ফেসবুকে তিনি লেখেন, এর মধ্যে একটা বৈঠকে পারভীন আপা এমন একটা গল্প বললেন যা আমি সহজে ভুলতে পারবো না। উনি দুই মাস আগে স্বামীকে হারিয়েছেন। গ্রামের সরু, ভাঙা পথে গাড়ি চলার উপায় নেই, তাই গাড়ি দিয়ে স্বামীর মরদেহ বাড়িতে আনতে পারেননি। আনতে হয়েছে ভ্যানে করে। কথাগুলো বলার সময় পারভীন আপা কেঁদে ফেললেন। তার কথায় ছিল গভীর এক অসহায়ত্ব। পারভীন আপার এই কথাগুলো বারবার মনে পরে। ঘুমাতে গেলে চোখ বুজতেই তার মুখটা দেখতে পাই। সেই অসহায় চোখ, যেখানে সম্মান হারানোর কষ্ট বড় ক্ষত হয়ে বসে গেছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা দুর্নীতি নিয়ে অনেক কথাই বলি। বলি যে দেশ থেকে হাজার কোটি টাকা লুট হয়েছে। কিন্তু সেদিন আমি নিজের চোখে দেখে এসেছি, কার কাছ থেকে টাকাগুলো লুট করা হয়েছে। সেই টাকা লুট করা হয়েছে পারভীন আপাদের মতো মানুষের কাছ থেকে, যারা সামান্য একটু রাস্তা, একটু সম্মান ছাড়া আর কিছুই চান না। অথচ সেটুকুও তারা পান না।’
তিনি ফেসবুকে আরও বলেন, ‘যারা দেশটাকে লুট করেছে, আমার মনে হয় না কখনো তারা পারভীন আপার মতো কারও উঠানে বসে জীবনের গল্প শুনেছেন। শুনলে হয়তো তারাও রাতে ঘুমাতে পারতেন না।’