ফুটবল খেলা নিয়ে দুই গ্রামবাসীর সংঘর্ষ
মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে ২ গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে সাবেক ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্যসহ উভয় পক্ষের অন্তত ৮ জন আহত হয়েছেন।
আজ বুধবার সকাল ৮টার দিকে উপজেলার বাউশিয়া ইউনিয়নের চর কুমারিয়া গ্রামে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। থেমে থেমে প্রায় ২ ঘণ্টা ধরে এই সংঘর্ষ চলে বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা।
সংঘর্ষে আহতরা হলেন, চর কুমারিয়া গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য সাফিক প্রধান (৪৬), জয়নাল আবেদীন মমিন (৫২), মায়া বেগম (৪৫), সোহেল মমিন (২২), কাদির খাঁ (৩৫) ও শাহ আলম (৪০), বাউশিয়া পূর্ব নয়াকান্দি গ্রামের জামাল (৩০) ও জিলানী (৩৫)।
স্থানীয়রা জানান, গতকাল ঈদের দ্বিতীয় দিন বাউশিয়া ইউনিয়নের চর কুমারিয়া ও বাউশিয়া পূর্ব নয়কান্দি গ্রামের মধ্যে ফুটবল খেলা অনুষ্ঠিত হয়। চর কুমারিয়া গ্রামের মাঠে অনুষ্ঠিত এই খেলায় চর কুমারিয়া জয়লাভ করে। খেলার সময় চর কুমারিয়া গ্রামের কয়েকজন তরুণের সঙ্গে বাউশিয়া পূর্ব নয়কান্দি গ্রামের কয়েকজন তরুণের কথা কাটাকাটির ও হাতাহাতি হয়। এই ঘটনার জেরে আজ সকালে বাউশিয়া পূর্ব নয়াকান্দি গ্রামের দুই শতাধিক মানুষ চর কুমারিয়া গ্রামে হামলায় চালায়। হামলায় দুটি বসতঘর ভাঙচুর এবং উভয়পক্ষের ৮ জন আহত হয়েছেন।
কুমারিয়া গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য সাফিক প্রধান বলেন, ‘গতকালের ঘটনাটি আমরা বসে শান্তিপূর্ণভাবে সমাধান করে দেওয়ার কথা দিয়েছিলাম। কিছু অতি উৎসাহী লোকের প্ররোচনায় তা আর হলো না। আজ সকালে অন্তত দুই শতাধিক মানুষ আমাদের গ্রামে হামলা এবং লুটপাট চালায়। নগদ তিন লাখ টাকা লুট, জয়নাল আবেদীন ও সাদেক মিয়ার দুটি বসত ঘরে ভাঙচুর চালানো হয়। এতে প্রায় ২০ লাখ টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। হামলায় আমিসহ আমার গ্রামের ৬ জন আহত হয়েছেন।’
আরেক প্রত্যক্ষদর্শী চর কুমারিয়া গ্রামের বাসিন্দা সোহেল মমিন বলেন বলেন, ‘আজ সকাল সাতটা থেকে তারা সংঘটিত হতে শুরু করে। সকাল আটটার দিকে আমাদের বাড়িঘরে হামলা করে। তাদের হামলায় আমার মাসহ আমাদের পরিবারের তিন সদস্য আহত হয়েছেন। শুধু ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে নয় পূর্ব শত্রু তার জেরেও এ হামলা হতে পারে।’
এদিকে, পূর্ব নয়াকান্দি গ্রামের বাসিন্দা মো. জিলানী বলেন, ‘আজ সকালে আমাদের গ্রামের কিছু তরুণ চর কুমারিয়া গ্রামে যায়। আমরা তাদেরকে বুঝিয়ে নিয়ে আসতে সেখানে গিয়েছিলাম। কিন্তু চর কুমারিয়া গ্রামের লোকজন জড়ো হয়ে আমাদের ওপর হামলা চালায়। এই ঘটনায় আমাদের গ্রাম থেকে নারী-পুরুষ বের হয়ে চর কুমারিয়া গ্রামে গেলে উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ’
গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা.আশ্রাফুল আলম শুভ বলেন, ‘সংঘর্ষের ঘটনায় আহত হয়ে আমাদের হাসপাতালে ৮ জন রোগী এসেছে। তাদের মধ্যে জামাল খাঁ নামে এক রোগী গুরুতর আহত হওয়ায় তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকা পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। বাকিদের মধ্যে এক নারীসহ তিনজনকে হাসপাতালে ভর্তি রাখা হয়েছে। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। ’
বিষয়টি সম্পর্কে গজারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনোয়ার আলম আজাদ বলেন, ‘এরকম একটি খবর আমিও পেয়েছি। খবর পাওয়া মাত্রই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত। এ ব্যাপারে এখনো কেউ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ’