ওলামা লীগ নেতাকে ঈদগাহের ইমাম হিসেবে চান না এলাকাবাসী

রাজশাহী ব্যুরো
২৮ মার্চ ২০২৫, ১৬:০৪
শেয়ার :
ওলামা লীগ নেতাকে ঈদগাহের ইমাম হিসেবে চান না এলাকাবাসী

রাজশাহীতে রাজনীতিমুক্ত ঈদগাহ এবং ওলামা লীগ নেতাকে ঈদগাহের ইমাম থেকে অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন মুসল্লিরা। আজ শুক্রবার বাদ জুমা নগর ভবনের সামনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

এ সময় রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলী সদস্য এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটনের পারিবারিক মসজিদের ইমাম এবং ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্রআন্দোলনে হামলার সময় অস্ত্রের যোগানদাতা মাওলানা বারকুল্লাহ বিন দুরুল হোদাকে অপসারণের দাবি জানান তারা।

এ মানববন্ধনে বক্তারা জানান গত ১৫ বছরে নগরীর অন্যতম বৃহৎ হাজী লাল মোহাম্মদ ঈদগাহের ইমাম মাওলানা বারকুল্লাহ বিন দুরুল হোদা ঈদগাহকে রাজনৈতিক ঈদগাহে পরিণত করেছিলেন। উপযুক্ত যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও সাবেক মেয়র লিটনের আশীর্বাদে তিনি বিশ্ববিদ্যালয় চাকরি পেয়েছেন। তার দাপটে আলেম-ওলামারা ভয়ে ও আতঙ্কে থাকতেন। ওলামার লীগের নেতা বারকুল্লাহ ঈদের নামাজের পর মোনাজাতে কেবল আওয়ামী লীগ নেতা লিটন ও তার পরিবারের গুণকীর্তন করে দোয়া করতেন। এতে ঈদগাহের মুসল্লিরা বিরক্ত হলেও লিটনের ভয়ে কেউ মুখ খুলতেন না।

তারা জানান, গত ৪ ও ৫ আগস্ট রাজশাহীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রআন্দোলনে হামলা চালায় আওয়ামী লীগ। ওই সময় নগরীর রানীনগর মাদ্রাসায় মাওলানা বারকুল্লাহর নেতৃত্বে অস্ত্রের মজুদ রাখা হয়। ঐসব অস্ত্র নিয়ে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা শিক্ষার্থীদের উপর হামলা চালায়। মাদ্রাসা থেকেই হামলাকারীদের খাদ্যের যোগানও দেওয়া হয়। আগস্টের গণহত্যায় জড়িত মাওলানা বারকুল্লার ইমামতিতে মুসল্লীরা আর ঈদের নামাজ পড়তে চান না। তাই তাকে অবিলম্বে হাজী লাল মোহাম্মদ ঈদগাহের ইমাম থেকে অপসারণের দাবি তুলেছেন।

মানববন্ধনে বক্তব্য দেন, হাতেম খাঁ আহলে হাদিস জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা শায়খ আমিনুল ইসলাম, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আব্দুল মতিন, আব্দুর রাকিব ও রাজনীতিবিদ গোলাম রাব্বানী।

 আহলে হাদিস জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা শায়খ আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘ঈদগাহ হল সকল মুসলমানের জন্য। এখানে কোন ইমামের রাজনৈতিক সংলাপের সুযোগ। ইবাদত বন্দেগির জন্য পবিত্র স্থানে ঈদগাহ। কিন্তু আওয়ামী লীগের শাসনামলে রাজশাহী জেলা ওলামা লীগের সভাপতি মাওলানা বারকুল্লাহ তৎকালীন মেয়র খায়রুজ্জামান লিটনের পৃষ্ঠপোষকতায় ঈদগাহকে রাজনৈতিক প্রচারণার কেন্দ্রস্থলে পরিণত করেছিলেন। এতদিন মুসল্লিরা ভয়ে প্রতিবাদ করতে পারেননি। এখন তারা ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের দোসর বারকুল্লাহর অপসারণ চান।’

 এর আগে জুমার নামাজের পর কয়েকশ' মুসল্লি হাতেম খাঁ আহলে হাদিস জামে মসজিদ প্রাঙ্গণ থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন।

 এদিকে কয়েকদিন আগে মাওলানা বারকুল্লাহকে অপসারণের দাবিতে সিটি করপোরেশনের প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক এবং রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারকে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে।