গণঅভ্যুত্থানকে ‘দ্বিতীয় স্বাধীনতা’ বলা প্রসঙ্গে ফরহাদ মজহারের প্রশ্ন
বিশিষ্ট লেখক, দার্শনিক, গবেষক ও বুদ্ধিজীবী ফরহাদ মজহার জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে নিয়ে একটি প্রশ্ন উত্থাপন করেছেন তার ফেসবুক পোস্টে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে কেন 'দ্বিতীয় স্বাধীনতা' বলা হয়? এমনই এক প্রশ্ন উত্থাপন করেছেন তিনি। সেই সঙ্গে ওই প্রশ্নের উত্তরটিও তিনিই বাতলে দিয়েছেন একই স্ট্যাটাসের মাধ্যমে।
আজ বৃহস্পতিবার ভোর ৫টা ৫৮ মিনিটে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে তিনি এমনই এক প্রশ্নোত্তরমূলক এক স্ট্যাটাস দেন।
তার স্ট্যাটাসটি হুবুহু তুলে ধরা হলো -
‘‘প্রশ্ন: জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে কেন 'দ্বিতীয় স্বাধীনতা' বলা হয়?
আরও পড়ুন:
রাজধানীতে কিশোরীসহ ২ জনের মরদেহ উদ্ধার
উত্তর: কারণ একাত্তরে হানাদার পাকিস্তানীদের হাত থেকে মুক্ত বাংলাদেশ ছিনতাই হয়ে যায় এবং বাংলাদেশ আরও কঠোর ও কঠিন ভারতীয় আধিপত্য ও ভারতীয় আগ্রাসনের কবলে পতিত হয়। যার ফল হচ্ছে দিল্লির অদৃশ্য অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক এবং রাজনৈতিক শৃংখলের অধীনে বাংলাদেশের চলে যাওয়া।
ইসলামাবাদকে আমরা নয় মাসে পরাস্ত করেছি, কিন্তু দিল্লিকে পরাজিত করতে আমাদের অর্ধ শতক লেগেছে। একাত্তরের বাকি 'ভেজাল' সম্পর্কে সেই সময়ের তরুণ ছাত্র নেতা আব্দুর রাজ্জাকের মুখে শুনুন (লিংক কমেন্টে)।
বাংলাদেশকে একটি রাজনৈতিক জনগোষ্ঠির ঐতিহাসিক আবির্ভাব, ব্যর্থতা, আবার লড়াই, সংগ্রাম, আত্মোপলব্ধি এবং আত্মবিকাশের ইতিহাস হিশাবে পাঠ করতে শিখুন। যার যা সম্মান ও স্বীকৃতি প্রাপ্য কড়ায়গণ্ডায় সেটা মিটিয়ে দিন, কার্পন্য করবেন না। একাত্তরের ছাত্র-তরুণদের অবদান ভুলত্রুটিসহ স্বীকার করুন। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের নেতৃত্বদের অবদান জনগণ অবশ্যই ভুলত্রুটিসহ স্বীকার করবে। আমরা যেন আসলেই ইতিহাসের সন্তান হয়ে অমর থাকি।
আরও পড়ুন:
নির্বাচন নিয়ে কী ভাবছে এলডিপি?
ছাত্র-তরুণদের জানিয়ে দিন আমরা আবার গণতন্ত্রের নামে নির্বাচন ব্যবসা চাই না, কিম্বা সার্বভৌমত্বের নামে রাষ্ট্রের কিম্বা পার্লামেন্টের তথাকথিত সার্বভৌমত্ব চাই না। আমরা চাই জনগণের সার্বভৌম ক্ষমতা।
গণতন্ত্রের সারাৎসার গণসার্বভৌমত্ব। আমরা গণসার্বভৌমত্ব কায়েম চাই। অর্থাৎ ক্ষমতা, প্রশাসন ও নীতি নির্ধারণসহ রাষ্ট্রের সকল ক্ষেত্রে ও স্তরে জনগণের কার্যকর অংশগ্রহণই গণতন্ত্র। 'জনগণের ক্ষমতা' কথাটার রাজনৈতিক ও আইনী তাৎপর্য ছাত্র-তরুণদের বুঝতে হবে।
আমাদের অবশ্যই বাংলাদেশে গণসার্বভৌমত্ব (Popular Sovereignty) কায়েম -- অর্থাৎ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা এবং বৈশ্বিক রাষ্ট্র ব্যবস্থায় নিজেদের ইজ্জত ও শক্তি নিয়ে হাজির থাকতে হবে। হাজির থাকার নীতি ও কৌশলের প্রশ্নে দৃঢ় থাকতে হবে। বাংলাদেশের ইতিহাসের পরিপ্রেক্ষিতে 'সেকেন্ড রিপাব্লিক' নামক ধারণা ফালতু ও অন্তঃসারশূন্য। এসব ধারণা বাদ দিয়ে আমরা যেন আমাদের লক্ষ্য অর্জনের সঠিক নীতি ও কৌশল নির্ণয়ের জন্য পড়াশুনা করি এবং সতর্ক থাকি কেউ যেন বাংলাদেশকে আবার এলন মাস্ক ও ট্রাম্পের কাছে বেঁচে না দেয়!
ই ন কি লাব জি ন্দা বা দ ’’