সবাইকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের আহ্বান মির্জা ফখরুলের
সবাইকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ শুক্রবার রাজধানীর লেডিস ক্লাবে পেশাজীবীদের সম্মানে বিএনপি আয়োজিত এক ইফতার মাহফিলে দেওয়া বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আজকের এই পেশাজীবী সমাবেশ এটা আমাদের জন্য অত্যন্ত আনন্দের। আনন্দের এই জন্যই যে আমরা অনেক দিনপর প্রায় ১৫ বছর পরে একটা মুক্ত পরিবেশে, ফ্যাসিবাদ মুক্ত পরিবেশে আমরা এই ইফতার মাহফিলে আয়োজন করতে পেরেছি। ’
তিনি বলেন, ‘একটু ভারাক্রান্ত এ জন্য, আজকে আমাদের মধ্যে আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এবং একই সঙ্গে আমাদের দলের চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার উপস্থিত থাকাটা অত্যন্ত প্রত্যাশিতই ছিল, কিন্তু আপনার জানেন, আমাদের নেত্রী চিকিৎসার জন্য দেশে বাইরে আছেন, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানও আছেন। তিনি এখনো বিভিন্ন মামলা সমস্যার কারণে বিদেশে নির্বাসিত অবস্থাতেই আছেন। দেশে এখনো ফিরে আসতে পারছেন না শিগগিরই।’
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আপনারা সবাই এখানে যারা উপস্থিত আছেন, তারা দেশের অত্যন্ত উচ্চশিক্ষিত এবং জাতির বিবেক, এবং আপনারাই দেশের মত-অভিমতকে প্রভাবিত করেন। আমরা আজকে একটা অত্যন্ত কঠিন সময় অতিক্রম করছি। আপনারা সবাই জানেন, যে একটা ভয়াবহ ফ্যাসিস্ট সরকারের হাত থেকেই ছাত্র - জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে তাদেরকে পরাজিত করে, বিতাড়িত করে আজকে একটা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়েছে এবং একটা নতুন গণতান্ত্রিক পার্লামেন্ট এবং সরকার গঠিত হবে সে প্রত্যাশা এ দেশের জনগণ অপেক্ষায়। বিশ্বাস করি, এই সময়টা আমরা সবাই যে যেখানে আছি। আমরা দায়িত্বশীলতার সঙ্গে আমাদের ভূমিকা আমরা পালন করব।’
আরও পড়ুন:
রাজধানীতে কিশোরীসহ ২ জনের মরদেহ উদ্ধার
তিনি বলেন, ‘আমরা যারা রাজনীতি করছি, তারা যারা বিভিন্ন পেশাতে আছি, তারা যারা বিভিন্নভাবে সরকার অথবা জনগণের সঙ্গে সম্পৃক্ত আছি, তারা সবাই আমরা এমনভাবে কথা বলব, কাজ করব তা যার আমাদের এই গণতন্ত্রের উত্তরণের পথকে আরও সুগম করে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আপনারা সবাই জানেন যে সংস্কারের জন্য রাষ্ট্র ব্যবস্থা যে ভেঙে পড়ছে, সেই কারণেই আমরা প্রায় দুই বছর আগে আমাদের নেতা তারেক রহমান সাহেব সংস্কারের জন্য একত্রিশ দফা কর্মসূচি দিয়েছেন। সেই কর্মসূচির মধ্যে আমাদের সংস্কারের যে কথাগুলো বলা আছে, সেই কাজ গুলো আমরা মনে করি যথেষ্ট দেশের পরিবর্তনের জন্য।’
তিনি বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সংস্কার কমিশন গঠন করেছে। আমরা তাদের সঙ্গে সম্পূর্ণ যোগাযোগ রাখছি এবং তাদের যে প্রস্তাব সে প্রস্তাবগুলোকে আমরা পর্যবেক্ষণ করছি এবং আমাদের মতামতগুলো সেইভাবে প্রদান করছি।’
আরও পড়ুন:
নির্বাচন নিয়ে কী ভাবছে এলডিপি?
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আবেগের মধ্য দিয়েও সমস্যার সমাধান করা যাবে না। আমাদেরকে বাস্তববাদী চিন্তা করে, ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করতে হবে। পরিবর্তনকে সামনে নিয়ে একটা নতুন বাংলাদেশ, গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার জন্যই আমাদেরকে ওই লক্ষ্যে কাজ করতে হবে। আমি সবাইকে আবার অনুরোধ করব, আপনার সবাই অত্যন্ত সচেতনতার সঙ্গে, সতর্কতার সঙ্গে আপনাদের ভূমিকা পালন করবেন। বিশেষ করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের সঙ্গে যারা আমরা জড়িত আছি, তারা যেন আমরা এমন কোনো পদক্ষেপ না নেই, যে পদক্ষেপ আমাদেরকে কোনো ভুল পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে।’
ইফতার মাহফিলে যোগ দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহউদ্দিন আহমদ, সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারপারসন শামসুজ্জামান দুদু, অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, উপদেষ্টা ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার প্রমুখ।
পেশাজীবীদের মধ্যে অংশ নেন যায়যায়দিনের সম্পাদক শফিক রেহমান, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ও কালের কণ্ঠ সম্পাদক কবি হাসান হাফিজ, অর্থনীতিবিদ মাহবুব উল্লাহ, যুগান্তর সম্পাদক কবি আবদুল হাই শিকদার, সিনিয়র সাংবাদিক এম এ আজিজ, আবদাল আহমেদ, চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন প্রমুখ।