ফতুল্লায় শিশু মুস্তাকিন হত্যার রহস্য উদঘাটন
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় ৭ বছর বয়সী শিশু মো. মুস্তাকিনকে অপহরণের পর হত্যাকাণ্ডের মূল রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। একই সঙ্গে এই ঘটনায় দুই আসামিকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
নিহত মুস্তাকিন ফতুল্লা থানাধীন লামাপাড়া এলাকার মো. হাসিম হোসেনের (২৮) ছেলে।
পুলিশ জানিয়েছে, মুস্তাকিনের বাবার সঙ্গে পূর্ব শত্রুতার জেরে এবং মুক্তিপণ পাওয়ার আশায় শিশুটিকে অপহরণ করা হয়েছিল। পরবর্তীতে ঘটনা জানাজানির ভয়ে আসামিরা মুস্তাকিনকে হত্যার পর মরদেহ গুমের জন্য ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা এলাকায় ফেলে পালিয়ে যান।
এ ঘটনায় আজ বৃহস্পতিবার সকালে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গত ৫ জানুয়ারি বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ফতুল্লার লামাপাড়া এলাকার ভাড়া বাসা থেকে শিশু মো. মোস্তাকিন নিখোঁজ হয়। এ ঘটনায় পরের দিন মোস্তাকিনের বাবা মো. হাসিম হোসেন থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন। পরে অপহরণকারীরা মোস্তাকিনের বাবার কাছে মুক্তিপণ দাবি করলে গত ১৪ ফেব্রুয়ারি ফতুল্লা থানায় মামলা দায়ের করেন তিনি। মামলার পর ফতুল্লা থানা পুলিশ মোস্তাকিনকে উদ্ধার এবং আসামি গ্রেপ্তারে কাজ শুরু করে।
নারায়ণগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদার জানিয়েছেন, মুস্তাকিনকে অপহরণের ঘটনায় তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় গত ১৮ মার্চ সকালে প্রথমে আসামি নুর মোহাম্মদ ওরফে শাহ আলমকে ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্যমতে, একই দিন দুপুরে ফুলবাড়িয়া থানাধীন কাচিজোড়া এলাকা থেকে অপর আসামি মো. তানজিল আহমেদ মোল্লাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আসামিদের প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানিয়েছে, মো. হাসিম হোসেনের সঙ্গে পূর্ব শত্রুতার জেরে ও মুক্তিপণ পাওয়ার আশায় শিশু মুস্তাকিমকে অপহরণ করে আসামিরা। পরবর্তীতে ঘটনা জানাজানির ভয়ে তারা অপহৃত মুস্তাকিনকে হত্যা করে মরদেহ গুম করার উদ্দেশ্যে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা এলাকায় ফেলে পালিয়ে যান।
পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদার জানান, গত ১৮ জানুয়ারি দুপুরে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানাধীন কুন্ডা ইউনিয়নের কাওটাইল ৫নং ওয়ার্ডের বাইতুল জান্নাত জামে মসজিদের সামনের জঙ্গল থেকে এক শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। কিন্তু তাৎক্ষণিকভাবে নিহতের পরিচয় না পাওয়ায় অজ্ঞাত মরদেহ উদ্ধার হিসেবে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করে পুলিশ। পরে খবর পেয়ে পরিহিত কাপড় চোপড় দেখে মুস্তাকিমের লাশ শনাক্ত করে তার পরিবার।
তিনি আরও জানান, গ্রেপ্তারের পর ওই দিন বিকেলেই আসামি মো. তানজিল আহমেদ মোল্লাকে নিয়ে অভিযান চালিয়ে ফতুল্লা থানাধীন লামাপাড়া (পশ্চিম) দরগাহ বাড়ি মসজিদ সংলগ্ন আব্দুল সালামের বাড়ির টিনশেড ঘর থেকে হত্যার কাজে ব্যবহৃত ১টি স্টিলের বাটযুক্ত সুইচ গিয়ার চাকু উদ্ধার করা হয়। ওই ঘরেই ভাড়া থাকতেন আসামি মো. তানজিল।
এদিকে আসামিরা নিজেদের দোষ স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন বলে জানা যায়।