কিস্তিতে ঘুষ নেওয়া সেই এসআই প্রত্যাহার

বিশ্বনাথ (সিলেট) প্রতিনিধি
১৯ মার্চ ২০২৫, ২১:১৩
শেয়ার :
কিস্তিতে ঘুষ নেওয়া সেই এসআই প্রত্যাহার

কিস্তিতে ঘুষ নিয়ে ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া সিলেটের বিশ্বনাথ থানার আলোচিত সেই উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আলীম উদ্দিনকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাতে সিলেট পুলিশ সুপারের আদেশে বিশ্বনাথ থানা থেকে তাকে জেলা পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়।

এর আগে, মঙ্গলবার বিকেলে এসআই আলীম উদ্দিনের কিস্তিতে ঘুষ নেওয়ার ভিডিও ফেসুবকে ছড়িয়ে পড়ে।

ভিডিওতে দেখা যায়, থানা কম্পাউন্ডের বৈঠকখানায় বসে গুনে দেওয়া ঘুষের কিস্তি হাসিমুখে পকেটে পুরছেন এসআই আলীম। টাকা পকেটস্থ করে তাকে বলতেও শোনা যায়, চার্জশীটের জন্য লাগবে পুরো ২০ হাজারই।

অন্য আরেকটি ভিডিওতে দেখা যায়, মামলার এমসির জন্য অন্য কিস্তির পুরো ২০ হাজারের জন্য দেন-দরবার করছেন তিনি।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত বছরের ২০ আগস্ট উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের আনরপুর গ্রামের মকবুল আলী ও জুনেদ হোসেন গংদের মধ্যে পূর্ববিরোধের জেরে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় মকবুল আলী প্রতিপক্ষ জুনেদ গংদের নামে মামলা (থানার এফআইআর নাম্বার ২০, তারিখ ২৮.০৮.২০২৪) দেন।

ক্রমান্বয়ে এ মামলার তদন্তভার পান এসআই আলীম উদ্দিন। আসামীপক্ষ তাদের আপন তালতো ভাই, উপজেলার দেওকলস ইউনিয়নের দাউদপুর গ্রামের মৃত আব্দুস সালামের ছেলে ফয়ছল আহমদকে দায়িত্ব দেন মামলার বিষয়টি তাদের হয়ে দেখভালের জন্য। এর সুবাধে তিনি মামলার বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ ও আইনি সহায়তা নিতে যোগাযোগ করেন এসআই আলীম উদ্দিনের সঙ্গে।

নিয়মিত যোগাযোগের একপর্যায়ে তার সঙ্গে মামা-ভাগ্নের সম্পর্ক পাতেন চতুর আলীম। ফয়ছলকে মামলার বিভিন্ন বিষয়ে ছাড় দেওয়ার লোভনীয় অফার দেন তিনি। প্রত্যেকটির জন্য বিনিময়ে দাবি করেন পৃথক পৃথক অনৈতিক সুবিধা (ঘুষ)। বিভিন্ন সময়ে ২০ হাজার করে ৪ কিস্তি ও ১০ হাজার করে ২ কিস্তিতে কৌঁশলে আদায় করে নেন লাখ টাকা। পরে, কথামতো কাজ না হওয়ায় টাকা ফেরত চাইলে ভয়-ভীতি দেখিয়ে ফয়ছলকেই ফাঁসানোর হুমকি দেন উল্টো।

হুমকি পেয়ে এসআই আলীম উদ্দিনের বিরুদ্ধে গতকাল মঙ্গলবার সিলেট পুলিশ সুপার বরাবরে লিখিত অভিযোগ দেন ফয়ছল আহমদ।

এসআই আলীম উদ্দিনকে প্রত্যাহার করে নেওয়ার তথ্য নিশ্চিত করে বিশ্বনাথ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এনামুল হক চৌধুরী বলেন, ‘এ বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।