মায়ের প্ররোচনায় বাবার ওপর কিশোর গ্যাং-এর হামলা
গাজীপুরের শ্রীপুরে মায়ের প্ররোচনায় বাবাকে মারতে কিশোর গ্যাং নিয়ে হামলা করে ছেলে। স্থানীয়রা কিশোর গ্যাংয়ের চার সদস্যকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন।
গতকাল সোমবার রাতে উপজেলার বরমী ইউনিয়নের সাতখামাইর গ্রামের আজিমপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এদিনই রাত ১টার দিকে পুলিশ আটকদের উদ্ধার করে।
ভুক্তভোগী মো. আসাদ মিয়া উপজেলার দূর্লভপুর গ্রামের নায়েব আলীর ছেলে। অটকরা হলেন আসাদ মিয়ার ছেলে আরিব (১৭), শ্রীপুর গ্রামের ওয়াদ্দাদা দিঘী পাড় এলাকার রতন মিয়া ছেলে মো. জাহিদ (১৭), সাতখামাইর গ্রামের জহিরুল ইসলামের ছেলে জিহাদ (১৭), টেংরা গ্রামের হাবিজ উদ্দিনের ছেলে মারুফ (১৮)।
স্থানীয়রা জানান, সোমবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে ১২ থেকে ১৫ জনের কিশোর গ্যাং সাতখামাইর রেলস্টেসনের পাশে অন্ধকার স্থানে আসাদের ওপর হামলা চালায়। হামলাকারীরা তার কাছ থেকে নগদ ৩ হাজার ৭০০ টাকা ছিনিয়ে নেয়। সেই সঙ্গে তাকে বেধরকত মারধর করে তারা। এ সময় আসাদের ডাক চিৎকার শুনে স্থানীয়রা ধাওয়া করে চার কিশোর গ্যাং সদস্যকে আটক করেন। খবর পেয়ে মধ্যরাতে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে আটক কিশোর গ্যাং সদস্যদের উদ্ধার করে। রবে, ছেলে আবির মারধরে অংশ নেয়নি। তার মোবাইল চেক করে দেখা গেছে, সে দূরে থেকে পুরো বিষয় মোবাইল মেসেজের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করছে। মেসেজ আদান প্রদানের মাধ্যমে সকলের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করছিল ভুক্তভোগীর আসাদের ছেলে আবীর।
আসাদ অভিযোগ করে জানান, তার প্রথম স্ত্রী পারুল তাকে ছেড়ে বিদেশ চলে যান। এক বছর পর তিনি শিউলীকে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। দুই বছর পূর্বে প্রথম স্ত্রী দেশে ফিরে অশান্তি শুরু করেন। তার বাড়িঘর দখল করেন। বৃদ্ধা মাসহ তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেন। তিনি এখন ভাড়া বাড়িতে থাকেন। প্রথম স্ত্রী তার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছেন। ওই মামলায় তিনি এখন জামিনে আছেন। প্রথম স্ত্রী বিভিন্ন সময় তাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দিত।
জানা গেছে, গতকাল সোমবার সকালে তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে পারুল তাকে মারার পরিকল্পনা করে। তার বোনের ছেলে জিহাদকে মারপিটের দায়িত্ব দেন পারুল। এরপর ছেলে আবির ও জিহাদ শরণাপন্ন হয় কিশোর গ্যাং লিডার শ্রীপুর গ্রামের ওয়াদ্দাদিঘীর পাড় এলাকার জাহাঙ্গীরের ছেলে জাকারিয়ার। এদিকে ওইদিন রাত সাড়ে ৯টার দিকে বাজারে যাচ্ছিলেন আসাদ। পথে কিশোর গ্যাং তার ওপর হামলা করে ৩ হাজার ৭০০ টাকা ছিনিয়ে নেয়। মারধরের কারণে তিনি অচেতন হয়ে পরেন। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করেন।
আটক জিহাদ বলে, তার খালা পারুল তাকে দায়িত্ব দিয়েছিল খালুকে সাইজ করতে। এজন্য জাকারিয়ার নেতৃত্বে ১২ থেকে ১৫ জন মিলে খালুর ওপর হামলা করে।
অভিযুক্ত পারুল জানান, স্বামীর নির্যাতনে তিনি সামান্য সাইজ করতে চেয়েছিলেন। মারধর করতে চাননি।
বরমী ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য রনি আকন্দ জানান, কিশোর গ্যাং আসাদের ওপর হামলা করেছিল। হামলায় জড়িত আসাদের ছেলে আবিরসহ চার জনকে স্থানীয়রা আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছেন।
শ্রীপুর থানা পরিদর্শক অপারেশন নয়ন কর জানান, খবর পেয়ে রাতে ঘটনাস্থল থেকে চার কিশোরকে আটক করা হয়। এ বিষয়ে ভুক্তভোগীর অভিযোগের ভিত্তিতে পরবর্তীতে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।