ত্রিপুরা পল্লীর সংযোগ ব্রিজ বিচ্ছিন্ন, বাসিন্দাদের ভোগান্তি

চুনারুঘাট (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি
১৩ মার্চ ২০২৫, ১১:৫০
শেয়ার :
 ত্রিপুরা পল্লীর সংযোগ ব্রিজ বিচ্ছিন্ন, বাসিন্দাদের ভোগান্তি

হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলার সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানের ত্রিপুরা পল্লীতে প্রবেশের ব্রিজটি দীর্ঘদিন ধরে পাহাড়ি ঢলে ভেঙে পড়েছে।

গতকাল বুধবার সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ত্রিপুরা পল্লীর একাধিক বাসিন্দারা। তারা এই প্রতিনিধিকে বলেন, ‘পাহাড়ি ঢলে এ ব্রিজটি ভেঙ্গে পড়ে আছে। নানা সময়ে পাহাড়ি ঢলে ভেঙে পড়লেও জোড়াতালি দিয়ে চলছে আমাদের যোগাযোগ ব্যবস্থা। তবে সরকার পতনকে কেন্দ্র করে বিচ্ছিন্ন এ ব্রিজ নিয়ে কারো কোনো মাথাব্যথা নেই। ভাঙন অব্যাহত থাকায় পাহাড়ে থেকে যাওয়া প্রায় ২০টি ত্রিপুরা পরিবারের সদস্যরা আমরা আতঙ্কিত অবস্থায় দিন কাটাচ্ছি। আমাদের কারো প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা বা দৈনন্দিন চলাচলের ভোগান্তির অন্ত নেই।’

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, এক শ্রেণির অসাধু চক্র দীর্ঘদিন ত্রিপুরা পল্লীর টিলার পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া ছড়া থেকে নানা সময়ে বালু উত্তোলন করে আসছেন। এতে ক্রমশ দুর্বল আর আলগা হয়ে গেছে টিলার মাটি। এর ফলে গত কয়েক বছরে বর্ষায় টিলাগুলোতে অল্প অল্প করে ধস শুরু হয়। এ বছরও বর্ষায় ছড়ার পাশে থাকা টিলার অনেকাংশ ধসে পড়েছে। এর মধ্যেই ঝুঁকি নিয়ে ত্রিপুরা পরিবারের লোকজন সেখানে বসবাস করছেন। ব্রিজটি হেলে পড়ায় পল্লীবাসীর যাতায়াতে সমস্যা দেখা দিলে নানা সময় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসন জোড়াতালি দিয়ে প্রাথমিক যোগাযোগ ব্যবস্থা চলমান রাখলেও স্থায়ী সমাধানের দাবি বরাবরই উপেক্ষিত। ব্রীজ সংস্কারে কোনো বরাদ্দ আসছে না। কবে আসবে তাও জানা নেই। তাই ধসে পড়ছে পাহাড়ি টিলা। এরই মধ্যে আদি বসতভিটা হারিয়েছে ৫টি পরিবার। বাকী ১৯টি পরিবার টিলা রক্ষায় বরাদ্দের জন্য প্রতীক্ষার প্রহর গুণছেন। এবার ভেঙে পড়েছে চলাচলের ব্রীজটি দীর্ঘদিন। এখন শঙ্কায় আছেন সেখানকার বসবাসকারীরা।

টিলা ধসের আক্ষেপ নিয়ে ত্রিপুরা সমাজকর্মী জনক দেব বর্মা জানান, বৃষ্টিপাতের কারণে ২০১৭ সালে পল্লীর টিলা ধসে যায়। ওই মৌসুমে তিন আদিবাসী পরিবারকে নিজেদের ভিটা ছাড়তে হয়েছে। পর্যায়ক্রমে আরও ২ পরিবারকে নিজেদের ভিটা ছাড়তে হয়। বর্তমানে পুরো টিলাই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। টিলাগুলো সংরক্ষণ করা না গেলে এখানে বাস করা মানুষগুলো বাড়িহারা হয়ে যাবে। তাছাড়া টিলাগুলো জীববৈচিত্র রক্ষায় বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। টিলা ধসে গেলে তা পরিবেশের ওপরও বিরূপ প্রভাব ফেলবে। তাই টিলা রক্ষায় আশু পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান তিনি। সেই সঙ্গে চলাচলের জন্য নতুন ব্রিজ নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন পল্লীবাসী।

এ বিষয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রবিন মিয়া বলেন, ‘এ ব্রিজটি পাহাড় ধ্বসে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে একাধিকবার।আমরা এখানে স্থায়ী সমাধানে প্রস্তাবে মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়েছে। দ্রুত সমাধান করা হবে।’