বাংলাদেশের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য বন্ধু চীন: চীনা রাষ্ট্রদূত

কূটনৈতিক প্রতিবেদক
১১ মার্চ ২০২৫, ০০:১৭
শেয়ার :
বাংলাদেশের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য বন্ধু চীন: চীনা রাষ্ট্রদূত

চীন বাংলাদেশের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য ও বিশ্বাসযোগ্য বন্ধু বলে জানালেন চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন। গতকাল সোমবার রাতে গুলশানে এক নৈশভোজ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। সম্প্রতি চীন সফর করা ‘বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ ডেলিগেশন’-এর সদস্যদের সঙ্গে রাষ্ট্রদূতের এ নৈশভোজ অনুষ্ঠিত হয়।

চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘বাংলাদেশের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য ও সত্যিকারের বন্ধু চীন। আমরা সবসময় বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে বন্ধুত্ব ও সুসম্পর্ক বজায় রাখার নীতিতে অটল ছিলাম এবং ভবিষ্যতেও থাকব।’

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ৬ মার্চ পর্যন্ত ২১ সদস্যের বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ ডেলিগেশন চীন সফর করে। চীনের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিসি) আমন্ত্রণে অনুষ্ঠিত এই সফরের মূল উদ্দেশ্য ছিল দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক জোরদার করা এবং পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধি করা।

সফর শেষে নৈশভোজ আয়োজন করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সফরকারী দলের প্রধান ড. মঈন খান এবং তার স্ত্রী রোকসানা খন্দকার। অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন ও তার স্ত্রী বিশেষ আমন্ত্রিত অতিথি ছিলেন।

সফর নিয়ে অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে প্রতিনিধিদলের সদস্যরা বলেন, তারা চীনা জনগণের আন্তরিকতা ও উষ্ণ অভ্যর্থনায় মুগ্ধ হয়েছেন। সফরটি তাদের চীন-বাংলাদেশ সম্পর্কের গভীরতা সম্পর্কে নতুন ধারণা দিয়েছে।

রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেন, ‘আমি নিশ্চিত যে আপনারা চীনা জনগণের ভালোবাসা ও বন্ধুত্বপূর্ণ মনোভাব অনুভব করেছেন। এই সফর দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক আরও গভীর করবে এবং ভবিষ্যতে সহযোগিতার নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।’

বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ ডেলিগেশনের দলনেতা ড. মঈন খান চীন সফরের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলেন, ‘সফরটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ছিল।’ তিনি চীনা কর্তৃপক্ষের আতিথেয়তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

মঈন খান বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, শিক্ষার্থী, গবেষক, সাংবাদিকসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ নিয়ে এই সফর করেছি। এতে দুই দেশের সম্পর্ক আরও গভীর করার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, চীন-বাংলাদেশ সম্পর্কের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো জনগণের সঙ্গে জনগণের সংযোগ। ভবিষ্যতে এই সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

চীনা কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে জানা গেছে, সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিবর্তনের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশে বহুদলীয় সম্পর্ক জোরদার করতে চীন নতুন কৌশল গ্রহণ করেছে। এই সফর সেই কৌশলের অংশ হিসেবেই আয়োজন করা হয়েছিল।

চীন সবসময় বাংলাদেশকে একটি গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত অংশীদার হিসেবে দেখে এসেছে। বিশেষ করে অর্থনৈতিক ও অবকাঠামোগত উন্নয়নে চীনের বিনিয়োগ বাংলাদেশে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছে।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত সবাই চীন-বাংলাদেশ সম্পর্কের ভবিষ্যৎ নিয়ে আশাবাদী মনোভাব প্রকাশ করেন। বিশেষ করে বাণিজ্য, বিনিয়োগ, প্রযুক্তি স্থানান্তর এবং সাংস্কৃতিক বিনিময়ের মাধ্যমে দুই দেশের সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে বলে মত দেন তারা।

প্রতিনিধিদলের সদস্যরা বলেন, তারা চীন থেকে এমন একটি বার্তা নিয়ে ফিরেছেন, যা দুই দেশের সম্পর্ককে আরও এগিয়ে নিতে সাহায্য করবে।

রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেন, ‘বাংলাদেশ ও চীনের সম্পর্ক শুধু সরকার-পর্যায়ে নয়, বরং জনগণের মধ্যেও গভীর বন্ধন তৈরি হয়েছে। এই সম্পর্ক আগামী দিনে আরও সুদৃঢ় হবে বলে আমি বিশ্বাস করি।’

এই সফর দুই দেশের কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক সম্পর্ক আরও শক্তিশালী করবে বলে কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।