ভাইরাল ছবিটি মাগুরায় ধর্ষণের শিকার শিশুটির নয়, যা জানা গেল

অনলাইন ডেস্ক
০৯ মার্চ ২০২৫, ১০:৩৭
শেয়ার :
ভাইরাল ছবিটি মাগুরায় ধর্ষণের শিকার শিশুটির নয়, যা জানা গেল

মাগুরা শহরে কয়েক দিন আগে আট বছরের এক শিশু তার বড় বোনের (শ্বশুর) বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অচেতন অবস্থায় গত ৬ মার্চ বেলা ১১টার দিকে শিশুটিকে মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরবর্তী সময়ে শিশুটিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইতোমধ্যে ভাইরাল হয়েছে।

তবে এ ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর থেকে ফেসবুকে এক শিশুর ছবি ভাইরাল হয়েছে। ওই ছবিটিকে ভুক্তভোগী সেই শিশুর ছবি বলে দাবি করা হচ্ছে। ফেসবুকের বিভিন্ন আইডি ও গ্রুপ থেকে ছবিটি প্রচার করে এমন দাবি করা হয়েছে।

ভাইরাল ছবিটিতে দেখা যায়, আনুমানিক ৭ থেকে ৮ বছর বয়সী এক শিশুর দেহ মেঝেতে পড়ে আছে। লাল রঙের একটি গামছা দিয়ে তার শরীর ঢেকে রাখা হয়েছে।এ ছাড়া শিশুটির পাশে শাঁখা-চুরি ও লাল শাড়ি পরিহিত এক নারীর হাতও দেখা গেছে।

তবে ভাইরাল হওয়া ছবিটির সঙ্গে মাগুরায় ৮ বছর বয়সী সেই শিশুর ধর্ষণের কোনো সম্পর্ক নেই বলে জানিয়েছে তথ্যের সত্যতা যাচাইকারী প্রতিষ্ঠান রিউমর স্ক্যানার। বরং ভাইরাল হওয়া শিশুর ছবিসহ অন্য ছবিগুলো একজন আলোকচিত্রীর ধারণামূলক ফটোশুটের অংশ।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে অনিন্দ্য দে নামের একজন আলোকচিত্রীর ফেসবুক অ্যাকাউন্টে গত ২৩ ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত একটি পোস্টে একই ছবি খুঁজে পাওয়া যায়। অপরদিকে মাগুরায় ৮ বছর বয়সী শিশু ধর্ষণের আলোচিত ঘটনাটি ঘটেছে চলতি মার্চ মাসে। অর্থাৎ প্রচারিত ছবিটি ধর্ষণের ঘটনাটি ঘটার আগে থেকেই অনলাইনে বিদ্যমান।

উল্লেখ্য, অনিন্দ্য দে কর্তৃক প্রচারিত ছবিগুলো এর আগে গত ফেব্রুয়ারিতে চট্টগ্রামে এতিম কিশোরী ধর্ষণের ঘটনার ছবি দাবিতেও প্রচার করা হয়েছে। সে বিষয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদনও প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার টিম। সে সময় এ বিষয়ে জানতে আলোকচিত্রি অনিন্দ্য দে’র সঙ্গে যোগাযোগ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। তিনি জানান, এটি কনসেপচুয়াল ফটোগ্রাফি বা ধারণামূলক আলোকচিত্র। 

২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে একটি শিশু অপহরণের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তিনি ছবিগুলো তুলেছিলেন এবং সে সময় নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে প্রকাশ করেন। তবে সাম্প্রতিক পরিস্থিতির কারণে ছবিগুলো নতুন করে পোস্ট করার পর তা ভাইরাল হয়ে যায়।

তিনি আরও জানান, ছবিতে ধর্ষকের চরিত্রে অভিনয় করেছেন অন্তু, আর ভুক্তভোগী কিশোরীর ভূমিকায় রয়েছেন অর্পিতা। তারা দুজনই অনিন্দ্য দে’র ছোট ভাই-বোন।

পরবর্তী সময়ে অনিন্দ্য দে’র ফেসবুক আইডি থেকে ২০২৪ সালের ২১ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত একটি ফেসবুক পোস্টে একই ছবিগুলো খুঁজে পাওয়া যায়। 

সুতরাং সম্প্রতি মাগুরায় ৮ বছরের শিশু ধর্ষণের ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কিত দাবি করে একজন আলোকচিত্রীর পুরনো মঞ্চস্থ ফটোশুটের ছবি প্রচার করা হয়েছে, যা বিভ্রান্তিকর বলেই জানিয়েছে রিউমর স্ক্যানার।