পুলিশের ডিআইজির ‘শয়তান ভাবনা’
পুলিশের ডিআইজি এস এম আক্তারুজ্জামান নানা ইস্যু নিয়ে নিজের ফেসবুক আইডিতে পোস্ট করে থাকেন। পুলিশিং, দেশের অর্থনীতি, সমাজ ব্যবস্থাসহ নানা বিষয় উঠে আসে তার লেখনিতে। গতকাল মঙ্গলবার তিনি নিজের ফেসবুক আইডিতে ’শয়তান ভাবনা’ নামে একটি লেখা পোস্ট করেছেন। নিচে তার লেখাটি হুবহু তুলে ধরা হলো-
মুসলিমদের মধ্যে বহুল প্রচলিত যে, রমজান মাসে শয়তান বন্দী থাকে। এতে মুসলিমগন একটু রিলাক্সে থাকেন, কারন শয়তান হলো তাদের শত্রু।
শয়তান বন্দি থাকার পরও মুসলিমদের বিশেষ করে ব্যাবসায়ীদের মজুমদারি, পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি, চুরি, ডাকাতি, অন্যায় এবং অশ্লীলকাজের হিড়িক দেখে অনেকেই প্রশ্ন করেন, শয়তান বন্দি হলে রমজানে এত পাপ, জুলুম, অশ্লীলতা এবং অপরাধ কে করে বা করাচ্ছে? এরা আবার কোন শয়তান?
আমার বিশ্বাস- শয়তান রেজিমের প্রধান হল ইবলিশ যে প্রথম আল্লাহর আদেশকে উনার আরশে অমান্য করেছে। শয়তান নামে কোন আলাদা প্রাণি বা সৃষ্টি নেই। জিন এবং মানুষের মধ্য থেকেই শয়তান উদ্ভব হয়। শয়তান হল শ্রষ্টার হুকুমের বা ইচ্ছার বিপরীত বা বিচ্যুত অপ্রকাশিত ইচ্ছা বা শ্যাডো ইচ্ছা। যেহেতু স্রষ্ঠা একক, তার অংশ বা সমকক্ষ নেই, তাই উনার বিপরীত শক্তি বা হুকুম বা ইচ্ছা থাকতে পারে না। আসমান-জমীনে সমস্ত সৃষ্টি এক আল্লাহর আদেশে সমর্পিত জিন এবং মানুষ ছাড়া।
আরও পড়ুন:
রাজধানীতে কিশোরীসহ ২ জনের মরদেহ উদ্ধার
যেহেতু মানুষ এবং জিনকে আল্লাহ জ্ঞান এবং ইচ্ছাশক্তি দিয়েছেন তাই তারা আল্লাহর হুকুমের বা ইচ্ছার বাহিরে যেতে পারে। এই সুযোগে তাদের মধ্যেই শয়তানের অপ্রকাশিত ইচ্ছা বা সফটওয়ার ইন্সটল হয়ে যায় যদি প্রতিরোধ না করা যায়। আর মানুষ এবং জিনের সদস্যরাই হয়ে যায় শয়তান।
আর শয়তান থেকে রক্ষা পেতে এনটি-ভাইরাস হিসেবে আল্লাহর কাছে পানাহ চাওয়ার বিধান বা দোয়া এসেছে কোর'আন অধ্যয়নে পুর্বে "আউযুবিল্লাহি মিনাশ শায়তানের রাজীম" এর মাধ্যমে। শয়তানের সফটওয়ার যাতে লোড না হয়ে যায় এজন্য আল্লাহকে স্মরন করতে বলা হয়েছে।
আল-কোরআনের সর্বশেষ সুরা নাস এ বলা হয়েছে, মানুষ এবং জিনের কুমন্ত্রণা বা ম্যালওয়্যার থেকে মানুষকে পরিত্রান পেতে আল্লাহর সাহায্য কামনা করতে।
আরও পড়ুন:
নির্বাচন নিয়ে কী ভাবছে এলডিপি?
সুতরাং মুসলিমগন যদি মনে করে শয়তান বন্দী বা দুরের অন্য কিছু তাহলে তারা বিপদগ্রস্থ হবে। ইবলিশ বন্দি হতে পারে, তবে শয়তানের দল আছে, সৈন্যবাহিনী আছে, বংশধর আছে, ভাই আছে, মিত্র আছে, অনুসারি আছে যারা মুক্ত। তারা বর্তমানে বুক উঁচিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে, শত্রুতা জাহির করে বেড়াচ্ছে। আল্লাহর বিধানকে কলংকিত করাচ্ছে মুসলিমদের মাধ্যমেই।
তাই, সতর্ক থাকুন। প্লিজ।