সোনারগাঁও-এ ব্যবসায়ীকে অপহরণের ঘটনায় রহস্য

সোনারগাঁ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি
০৫ মার্চ ২০২৫, ০৯:১৮
শেয়ার :
সোনারগাঁও-এ ব্যবসায়ীকে অপহরণের ঘটনায় রহস্য

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও পৌরসভার ষোলপাড়া এলাকায় জমি দেখতে এসে অপহরণের শিকার হয়েছেন জাহাঙ্গীর আলম নামের এক ব্যবসায়ী। আর এই অপহরণের ঘটনায় নানা রহস্যেরও সৃষ্টি হয়েছে। যদিও পরে মুক্তিপন আদায়ের মাধ্যমে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। 

জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার ওই ব্যবসায়ী অপহরণের শিকার হন। পরে এক পর্যায়ে ওই ব্যবসায়ীকে মারধর করে ১ লাখ ৩৭ হাজার টাকায় মুক্তিপন আদায় করা হয়। বিকাশের মাধ্যমে মুক্তিপন পেয়ে ওই ব্যবসায়ীকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানা যায়। 

তবে, ঘটনার পর দিন ওই ব্যবসায়ী বাদি হয়ে ওই দিনই ১২ জনকে আসামী করে সোনারগাঁও থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। যদিও এ ঘটনায় এখনো মামলা দায়ের করা হয়নি, এমনটাই জানিয়েছেন ওই ব্যবসায়ী। 

এদিকে পুলিশ মঙ্গলবার দুপুরে ওই এলাকায় অভিযান চালিয়ে কামাল হোসেন নামে অপহরণকারী চক্রের এক সদস্যকে আটক করেছে ।

সোনারগাঁও থানায় দায়ের করা অভিযোগ থেকে জানা যায়, মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার বড় রায়পাড়া গ্রামের আব্দুল হামিদের ছেলে কনফেকশনারী ব্যবসায়ী মো. জাহাঙ্গীর আলম সোনারগাঁও পৌরসভার ষোলপাড়া এলাকায় গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জমি ক্রয় করার জন্য জমি দেখতে আসেন। এ সময় উত্তর ষোলপাড়া গ্রামের নুরুল ইসলামের নেতৃত্বে আক্তার হোসেন, আবুল হোসেন, সোহেল, রবি, নিরব, কামালসহ ১২-১৫জনের একটি দল জাহাঙ্গীর আলমের মাথায় ও চোখে গামছা পেঁচিয়ে একটি অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে মারধর করেন। এক পর্যায়ে তার গোপনাঙ্গে লাথি দিয়ে তাকে অজ্ঞান করে ফেলেন। পরে তার জ্ঞান ফিরে আসলে তার মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে দশ লাখ টাকা মুক্তিপন দাবি করেন তারা। টাকা না পাঠালে তাকে হত্যা করে লাশ গুম করারও হুমকি দেওয়া হয়। পরে ওই ব্যবসায়ীর আত্মীয়-স্বজন স্থানীয় দুটি বিকাশের দোকানের নাম্বারে ১ লাখ ১ হাজার টাকা মুক্তিপন দেন। এছাড়া তার সঙ্গে থাকা ৩৬ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেন ওই অপহরণকারীরা। টাকা পাওয়ার পর রাত সাড়ে ১০টার দিকে একটি মাইক্রোবাসে করে তাকে মেঘনা ব্রীজ এলাকায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করেন ওই ব্যবসায়ী।

অপহৃত ব্যবসায়ী মো.জাহাঙ্গীর আলম জানান, তিনি একজন কনফেকশনারী ব্যবসায়ী। সোনারগাঁও পৌরসভার ষোলপাড়া এলাকায় জমি দেখতে এসে তিনি অপহরণের শিকার হন। তার পরিবারের কাছে দশ লাখ টাকা মুক্তিপন চাওয়া হয়। পরে এক লাখ ৩৭ হাজার টাকায় তিনি মুক্ত হন। অপহৃতরা তাকে মারধর করেন। সোনারগাঁও থানায় ১২ জনের নামে অভিযোগ দিলেও পুলিশ এখনো মামলা নেয়নি। 

তবে, অভিযুক্ত নুরুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, কয়েকদিন পর পর এখানে নারী নিয়ে আসেন ওই লোক। এলাকার কয়েকজন তাকে নারীসহ ধরে কয়েকটি চর থাপ্পড় দিয়েছেন। টাকা আদায়ের বিষয়টি আমার জানা নেই।

সোনারগাঁও থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ইকরামউজ্জামান বলেন, ‘দু’দফায় ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত করা হয়েছে। সেখানে নারীঘটিত ঘটনায় ব্যবসায়ীকে মারধর করা হয়েছে। যারা ওই ব্যবসায়ীকে আটক করেছেন, তারা তার পরিবারের কাছ থেকে বিকাশে টাকা নিয়েছেন। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে পুলিশ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। বাদি মামলা করতে না চাইলে কিভাবে মামলা রুজু হবে?’

সোনারগাঁও থানার ওসি মোহাম্মদ আব্দুল বারী বলেন, ‘অভিযোগ দেওয়ার পর পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে একাধিকবার তদন্ত করেছে। কামাল হোসেন নামে এক অপহরণকারীকেও আটক করা হয়। বাকি অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে পুলিশ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।’