গড়াই নদীতে কুমির, আতঙ্কে নদীতীরের মানুষ
ঝিনাইদহের শৈলকুপার গড়াই নদীর খুলুমবাড়ি ঘাট এলাকায় ২ মাসেরও বেশি সময় ধরে কুমিরের দেখা মিলছে। প্রতিদিনই কখনো ১টা, কখনো ৩টা কুমির দেখেছেন স্থানীয়রা। কুমিরগুলো প্রতিদিন ৩ থেকে ৪ বার পানির ওপর ভেসে উঠছে। এতে আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন নদী পাড়ের বাসিন্দারাসহ মৎস্যজীবিরা।
দৈনন্দিন কাজে নদীর পানি ব্যবহার করলেও এখন কুমির আতঙ্কে নিজেদের গোসল ও গরু-ছাগলের গোসল করাতে ভয় পাচ্ছেন তারা।
উপজেলার হাকিমপুর ইউনিয়নের খুলুমবাড়ি গ্রামের ঘাট এলাকায় ঘুরে জানা যায়, গড়াই নদীতে পানি কমে যাওয়ায় কুমির হরহামেশাই দেখা মিলছে। এই জায়গায় ৩-৪ টি কুমির বিচরণ করছে। নদীর পানিতে কুমির অবলীলায় খেলা করে চলেছে বলে স্থানীয়রা জানান। কুমির দেখতে নদী পাড়ে ভীড় করছে স্কুল শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা দর্শনার্থীরা। নদীতে কাউকে গোসল ও গরু-ছাগলের গোসল করাতে দেখা যায়নি। নদী পাড়ের বাসিন্দাদের মধ্যে চরম আতঙ্কে দেখা দিয়েছে। জেলেরা নদীতে মাছ স্বীকার করছে সতর্কতা অবলম্বন করে। এদিকে, উপজেলার খুলুমবাড়িয়া, মাদলা,শাহবাড়িয়া, গাংকুলা, চরপাড়া, নলখোলাসহ কয়েক গ্রামের নদী পাড়ের বাসিন্দরা কুমির আতঙ্কে আছে।
খুলুমবাড়ি ঘাটের চম্পক কুমার দাস মাঝি বলেন, ‘২ মাস ধরে গড়াই নদীতে প্রতিদিনই কুমির দেখা যাচ্ছে। কখনো ১টি, আবার কখনো ৩টি কুমির দেখা যাচ্ছে। আমাদের ধারণা নদীতে যখন পানি বেশি ছিল তখন এখানে কুমির এসেছে। এখন নদীর পানি কমে গেছে। এ কারণে প্রতিদিনই কুমিরের দেখা মিলছে। প্রতিদিন ৩-৪ বার পানির ওপরে ভেসে উঠছে। কুমির দেখতে প্রতিদিনই দুর-দুরান্ত থেকে লোকজন এখানে ভীড় করছেন।’
খুলুমবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা জুয়েল রানা বলেন, ‘প্রায় ২মাসের বেশি সময় ধরে এখানে কুমিরগুলো দেখা যায়। গতকালও দুই থেকে তিন বার নদীতে কুমির ভাসতে আমি দেখেছি। প্রতিদিন এলাকার শতশত মানুষ এ নদীতে গোসল, জামা-কাপড় ধোয়াসহ দৈনন্দিন জীবনের বিভিন্ন কাজ করতো। এখন কুমির আতঙ্কে কেউ নদীতে নামতে পারছে না। সরকারিভাবে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানাই।’
ওলিয়ার রহমান নামের এক জেলে বলেন,‘গত রবিবার বিকেলে নৌকা নিয়ে মাছ ধরার সময় ৮-১০ হাতের মতো একটি মা কুমির দেখতে পেয়েছি। আমি কাছাকাছি গিয়ে নৌকার বৈঠা দিয়ে আঘাত করলে পানির নিচে চলে যায়। কুমিরের সঙ্গে ২টা বাচ্চা কুমির ছিল। এখন আমরা খুবই আতঙ্কের মধ্যে আছি।’
উপজেলা মৎস্য অফিসার মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমি ওই এলাকায় গিয়েছিলাম এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেছি। ওখানে মাঝেমধ্যেই কুমির দেখা যায় বলে জানতে পেরেছি। আমি এলাকার বাসিন্দাদের সতর্ক থাকতে বলেছি।’
শৈলকুপা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সিগ্ধা দাস বলেন, ‘গড়াই নদীতে কুমির ভাসছে বিষয়টি আমি শুনেছি, তবে সরেজমিনে যাওয়া হয়নি। নদী পাড়ের বাসিন্দাদের সতর্ক থেকে নদীতে যেতে হবে, গভীর পানিতে যাওয়া যাবে না। ’