ছিনতাইকারীর কবলে অভিনেতা
দেশে আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে ছিনতাইকারীদের উৎপাত। শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছিনতাই, ছিনতাইয়ে বাধা দেওয়ায় ছুরিকাঘাত- এমনি হত্যারও খবর পাওয়া যাচ্ছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তবুও যেন লাগাম টানা যাচ্ছে না।
এবার ছিনতাইকারীর কবলে পড়লেন অভিনেতা হারুন রশিদ। গতকাল শনিবার রাত ১১টার দিকে শুটিং শেষে ফেরার পথে ছিনতাইয়ে শিকার হন তিনি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষয়টি জানিয়ে এই অভিনেতা লিখেছেন, ‘কাঞ্চন ৩০০ ফিট থেকে কুড়িল বিশ্বরোড রাত বিরাতে সাবধানে। আজকে আমি কট খেয়েছি কাল আপনি খেতে পারেন। ওই রোডে রাতে সিএনজি স্টার্ট বন্ধ হলে ধরে নেবেন আপনি কট। যেমনটা আমার হয়েছে। শরীরের উপর দিয়া যায় নাই টাকার ওপর দিয়ে গেছে। নাটক করি বলে মোবাইলটা দিয়া গেছে। ধন্যবাদ ছিনতাইকারী ভাইয়েরা।’
হারুন রশিদ জানান, ৩০০ ফিট থেকে কমলাপুর যাওয়ার জন্য কাঞ্চন ব্রিজ থেকে একটা সিএনজিতে উঠেছিলেন তিনি। পাঁচ মিনিট যাওয়ার পরই অন্ধকারাচ্ছন্ন এক জায়গায় গাড়ির স্টার্টজনিত সমস্যার কথা বলে দাঁড়িয়ে যায় ড্রাইভার। এরপরই কয়েক ছিনতাইকারী এসে ঘিরে ধরে অভিনেতাকে। এ সময় তার সঙ্গে থাকা ৯ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয় ছিনতাইকারীরা।
আরও পড়ুন:
ওটিটি প্ল্যাটফরম আমার জন্য বেশ লাকি
সেই ঘটনার বিস্তারিত জানিয়ে অভিনেতা বলেন, ‘কাঞ্চন থেকে পাঁচ-সাত মিনিট যাওয়ার পর নীলা মার্কেট পার হওয়ার আগে বাম দিকের রাস্তাটায় একটু অন্ধকার। ওখানেই ঘটনাটি ঘটেছে। আমি সিএনজিতে ছিলাম। ওই জায়গায় সিএনজিটা থামায়। ৩০-৪০ সেকেন্ডের মধ্যে দুটি বাইক চলে আসে। সিএনজি চালক বলছিলেন, গ্যাসের সমস্যা হয়েছে, গাড়ি স্টার্ট নিচ্ছে না। এ রকম ঘটনা আগে অনেক শুনেছি। তাই যখনই সে বলছিল, স্টার্ট নিচ্ছে না তখনই কু ডাকছিল। ভাবছিলাম আমি বোধহয় বিপদে পড়লাম। তখনই বাইক দুটি আসে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ওদের হাতে চাপাতি ছিল। শুনেছি, চাপাতি দিয়ে কোপ টোপ দেয়। সে কারণে ওরা বলার সঙ্গে সঙ্গে মানিব্যাগ, মোবাইল দিয়ে দিই। সঙ্গে ব্যাগ ছিল। খুব স্মার্ট ছেলেপেলে। বলছিল, ব্যাগে জামা কাপড় ছাড়া কিছু নাই। অন্য এক ছেলে বলছিল উনি তো অভিনয় করেন। ওনার মোবাইলটা নিস না। নিলে আমরা ঝামেলায় পড়ব। টাকাগুলো নিয়ে ওনাকে বিদায় কর। আমাকে শুনিয়েই কথাগুলো বলছিল। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই কাজটি হয়ে গেল। এরপর ওরা বাম দিকের রোড দিয়ে ঝড়ের বেগে চলে গেল।’
আরও পড়ুন:
নানাকে নিয়ে পরীর আবেগঘন পোস্ট
হারুন রশিদ বলেন, ‘এরপর আমি নির্বাক হয়ে ফুটপাতে বসে রইলাম। অনেক গাড়ি যাচ্ছিল। কিন্তু হাত নাড়া সত্ত্বেও থামছিল না। পরে একটি বাইক থামে। ঘটনা খুলে বললে তিনি আমাকে পৌঁছে দেন।’
এই ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা নেবেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘নিয়ে কিছুই হবে না। আমি নীলা মার্কেটের সামনে পুলিশের গাড়িও দেখেছি। তাদের সঙ্গে কথা বলিনি। চলে এসেছি। এগুলো এখন অহরহ হচ্ছে। আমার কাছে খুব স্বাভাবিক ব্যাপার মনে হয়েছে। তবে ভয় পেয়েছি। কেননা কোপ টোপ যদি দেয়, এই ভয় ছিল। ট্রমাটাইজড হয়ে গিয়েছিলাম। আধঘণ্টা রাস্তার মধ্যে বসে ছিলাম। কাউকে যে ফোন করব, ব্যাগটা নিয়ে যে হাঁটব, অন্ধকার থেকে একটু আলোতে যাব সেই শক্তিও ছিল না।’
আরও পড়ুন:
‘এভাবে বিয়ে করা নাকি অর্থহীন’
উল্লেখ্য, ছোটপর্দার জনপ্রিয় অভিনেতা হারুন রশিদ। কাজ করেছেন সিনেমাতেও। বিশেষ করে নাটকে হাস্যরসাত্মক চরিত্রে তাকে বেশি দেখা যায়।