মিঠাপুকুরে বিএনপির কমিটিতে যুবলীগ নেতা
রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার ভাংনী ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ড কমিটিতে ওই ওয়ার্ডের যুবলীগের ওয়ার্ড সভাপতি ও স্থানীয় জাতীয় নির্বাচনে নৌকা মার্কার পক্ষে ভোট ডাকাতির নেতৃত্বদানকারী ব্যক্তিকে অর্থের বিনিময়ে কমিটিতে রাখার অভিযোগ উঠেছে।
গতকাল শুক্রবার রাতে এ সংক্রান্ত একটি পোস্ট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর তীব্র সমালোচনা সৃষ্টি হয়েছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ভাংনী ইউনিয়নের বিএনপির ২ নং ওয়ার্ড কমিটি গঠিত হয় গত মাসের ১৫ ফেব্রুয়ারি। তৎকালীন বিএনপির ভাংনী ইউনিয়ন আহ্বায়ক মাহবুব আলম ও সদস্য সচিব আব্দুল হামিদ হাই স্বাক্ষরিত এই কমিটিতে ওই ওয়ার্ডের যুবলীগের সভাপতি রওজার হোসেন শয়নকে যুগ্ম সম্পাদক ও বিগত সংসদ ও স্থানীয় নির্বাচনের সময়ে আওয়ামী লীগের দলীয় ক্যাডার ও রাশেক রহমান গ্রুপের ভাংনী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সেক্রেটারি কামরুল কাহাসানের নেতৃত্বাধীন ভোট ডাকাতি গ্রুপের নেতৃত্বদানকারী ইদ্রিস আলী লায়নকে ২ নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক করা হয়। মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে এই কমিটি দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভাংনী ইউনিয়ন বিএনপির এক নেতা জানান, রওজার হোসেন শয়ন ও ইদ্রিস আলী লায়ন দুইজনেই আওয়ামী লীগের ক্যাডার। এটা সবাই জানেন। কিন্তু এবারের সেক্রেটারি পদপ্রার্থী মোসলেম ও সভাপতি মাহবুব আলম দলীয় নির্বাচনে তাদের ভোট বাড়ানোর জন্য আওয়ামী লীগের এই দুই ক্যাডারকে কমিটিতে পদ দিয়েছিলেন।
স্থানীয়রা জানান, বিগত নির্বাচনকালীন সময়ে জোর করে নৌকা মার্কায় একাই ২০০/৩০০ করে সিল মেরেছিলেন ইদ্রিস আলী মন্ডল লায়ন। তাকে সবাই আওয়ামী লীগের ক্যাডার বলেই জানেন। এখন হঠাৎ করে টাকার বিনিময়ে কীভাবে বিএনপিতে ঢুকলেন, তা আমাদের অজানা। সর্বশেষ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির ২ নং ওয়ার্ডের নেতৃত্বে ছিলেন রওজার হোসেন শয়ন ও ক্যাডার বাহিনীর নেতৃত্বে ছিলো ইদ্রিস আলী লায়ন। এখন শুনছি লায়ন নাকি আগে থেকেই বিএনপি করেন।
এ বিষয়ে ভাংনী ইউনিয়নের তৎকালীন বিএনপির সদস্য সচিব আব্দুল হামিদ হাই মুঠোফোনে এই প্রতিবেদককে জানান, কমিটির সবকিছু সভাপতি করেছেন। আমি এদেরকে ভালভাবে চিনি না।
ভাংনী ইউনিয়ন বিএনপির তৎকালীন আহবায়ক ও বর্তমান সভাপতি মাহবুব আলম জানান, রওজার হোসেন শয়নের ব্যাপারে আমি ভালোভাবে জানি না। যারা তাকে কমিটিতে রাখার বিষয়ে সুপারিশ করেছেন, তাদের সঙ্গে কথা বলে তার বিষয়ে জানাতে পারব। আর ইদ্রিস আলী মন্ডল লায়ন ২০১০ সাল থেকেই ওই ওয়ার্ডের বিএনপির সেক্রেটারি ছিলেন। বিএনপির সেক্রেটারি আগে থেকে থাকলে রাশেক রহমানের আস্থাভাজন হিসেবে এতদিন বছরের পর বছর কীভাবে নৌকার পক্ষে ভোট ডাকাতিতে নেতৃত্ব দিলেন, প্রতিবেদকের এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি তেমন কিছু জানি না। হয়তো লায়নের আত্মীয় স্বজন কেউ ভোটে দাড়িয়েছিলেন।’
মিঠাপুকুর উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব মোতাহারুল ইসলাম নিক্সন (পাইকার) বলেন, ‘আওয়ামী লীগের লোক বিএনপিতে পুনর্বাসন হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এ বিষয়ে আমরা তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’