ইসরায়েলি ৪ জিম্মির মরদেহ হস্তান্তর হামাসের, ৬০০ ফিলিস্তিনির মুক্তি
চার ইসরায়েলি জিম্মির মরদেহ হস্তান্তর করেছে হামাস। ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ বিষয়টি নিশ্চিত করে জানিয়েছে, স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার ভোরে এ হস্তান্তরের ঘটনা ঘটে। মূলত ইসরায়েল ৬০০ ফিলিস্তিনি কারাবন্দীকে মুক্তি দেওয়ার কিছু পরেই ফিলিস্তিনি এই চার জিম্মির মরদেহ হস্তান্তর করে।
এদিকে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে, চারজন জিম্মির মরদেহবাহী কফিন তারা পেয়েছে। আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের মরদেহ শনাক্তকরণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
অপরদিকে রামাল্লায় অবস্থানরত এএফপির সাংবাদিকদের বরাতে জানা গেছে, ৬০০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি কারাবন্দীর দলকে বাস থেকে নামতে দেখা গেছে। সম্ভবত ওই সকল বন্দীদের গত সপ্তাহেই মুক্তি দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু জিম্মিদের সঙ্গে ‘অসৌজন্যমূলক আচরণের’ অভিযোগে নাকি তাদের মুক্তি স্থগিত করে রেখেছিল ইসরায়েল।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার ভোরে রামাল্লায় ৬০০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি বন্দীকে বাসে নিয়ে আসা হয়। মুক্তি পাওয়া পর ফিলিস্তিনিদের মধ্যে বাঁধভাঙ্গা আনন্দ উল্লাস করতে দেখা যায়। তারা স্বজনকে জড়িয়ে ধরেন। তাদের অনেকে বন্ধু বা স্বজনদের সঙ্গে আলিঙ্গন করছিলেন, চুমু খাচ্ছিলেন। কেউ আবার বিভিন্ন গণমাধ্যমকে সাক্ষাৎকারও দিচ্ছিলেন। এস সময় বেশ সংখ্যক নারীদেকে অতি আনন্দে কাঁদতেও দেখা গেছে।
আরও পড়ুন:
রোগীর পেটে জীবন্ত মাছি!
এদিকে ইসরায়েলের কাছে হামাস যে চারজন জিম্মির মরদেহ হস্তান্তর করেছে, তারা হলেন ওহাদ ইয়াহালোমি, সাচি ইদান, ইতজিক এলগারাত ও সোলোমো মনসুর। ইসরায়েলি গণমাধ্যম তাদের পরিচয় নিশ্চিত করেছে।
প্রসঙ্গত, গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তির শর্ত অনুযায়ী গত শনিবার ছয় ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেয় হামাস। তাদের সঙ্গে চার জিম্মির মৃতদেহও হস্তান্তর করা হয়। এর বিনিময়ে ৬২০ ফিলিস্তিনি কারাবন্দীকে মুক্তি দেওয়ার কথা ছিল ইসরায়েলের। কিন্তু মুক্তি দেওয়ার সময় হামাস নাকি জিম্মিদের সঙ্গে ‘অসম্মানজনক আচরণ’ করছে, এমন এক অভিযোগ এনে বন্দীদের মুক্তি স্থগিত করে দিয়েছিল ইসরায়েল।
আরও পড়ুন:
২৫ জিম্মিকে মুক্তি দিল হামাস
এ সময় হামাসের পক্ষ থেকে এর তীব্র প্রতিবাদে প্রস্তাব রাখা হয়, যদি আগে ফিলিস্তিনি কারাবন্দীদের মুক্তি দেওয় হয়, তাহলে গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তির পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে ইসরায়েলের সঙ্গে আলোচনা করবে হামাস।
দ্বিতীয় ধাপের যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা
আজ জিম্মি ও বন্দিবিনিময়ের মধ্য দিয়ে গত ১৯ জানুয়ারি শুরু হওয়া যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপ শেষ হতে চলেছে। এখন দুই পক্ষের মধ্যে দ্বিতীয় ধাপের যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা শুরু হতে হবে বলে জানিয়েছে মধ্যস্থতাকারী দেশগুলো।
আরও পড়ুন:
২৫ জিম্মিকে মুক্তি দিল হামাস
উল্লেখ্য, গাজা যুদ্ধবিরতির মধ্যস্থতাকারী দেশগুলোর অন্যতম দেশ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফ গতকাল এক অনুষ্ঠানে বলেন, ‘দ্বিতীয় ধাপের যুদ্ধবিরতি নিয়ে আমরা অনেক দূর এগিয়েছি। এজন্য ইসরায়েল একটি প্রতিনিধিদল পাঠিয়েছে। এই প্রতিনিধিদল কাতারের রাজধানী দোহা নয়তো মিসরের রাজধানী কায়রোয় যাবে। সেখানে মিসর ও কাতারের মধ্যস্থতাকারীদের মধ্যে আবার আলোচনা শুরু হবে।’