শান্তি চুক্তির মানে ইউক্রেনের আত্মসমর্পণ নয়: ম্যাক্রন
শান্তি প্রতিষ্ঠা মানে ইউক্রেনের আত্মসমর্পণ করা নয় বলে মন্তব্য করেছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রন। সেই সঙ্গে তিনি জানান, ইউক্রেনের যেকোনো শান্তি চুক্তি অবশ্যই নিরাপত্তা গ্যারান্টিসহ হতে হবে।
ফরাসি প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রন যুক্তরাষ্ট্রের হোয়াইট হাউসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে ইউক্রেন যুদ্ধের বিষয়ে আলোচনার পর যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান।
আজ মঙ্গলবার ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।
হোয়াইট হাউসে স্থানীয় সময় সোমবার বৈঠকের পর ট্রাম্পকে পাশে রেখে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রন বলেন, ‘এই শান্তি অর্জন মানে ইউক্রেনের আত্মসমর্পণ হওয়া উচিত নয়। কোনো ধরনের নিশ্চয়তা ছাড়া যুদ্ধবিরতিও হওয়া উচিত নয়।’
আরও পড়ুন:
রোগীর পেটে জীবন্ত মাছি!
এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কোনো ধরনের নিরাপত্তা গ্যারান্টির কথা উল্লেখ না করে বলেন, ‘ইউক্রেনে শান্তি রক্ষার খরচ এবং বোঝা ইউরোপীয় দেশগুলোকেও বহন করতে হবে, কেবল যুক্তরাষ্ট্র এটা করবে না।’
ট্রাম্পের এ কথার জবাবে ম্যাক্রন বলেন, ‘ইউরোপ নিরাপত্তার বোঝা আরও ন্যায্যভাবে ভাগ করার প্রয়োজনীয়তা বুঝতে পেরেছে। এছাড়া রাশিয়ার আক্রমণের তৃতীয় বার্ষিকীতে আলোচনা আরও এগিয়ে যাওয়ার পথ দেখিয়েছে।’
এর আগে গত মাসে ক্ষমতায় ফিরে আসার পর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করা প্রথম ইউরোপীয় নেতা হচ্ছেন ইমানুয়েল ম্যাক্রন। এদিকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ফরাসি প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রনকে ‘আমার দৃষ্টিতে একজন বিশেষ মানুষ’ বলে অভিহিত করেছেন।
এই বৈঠকে ইউক্রেনের শান্তি প্রক্রিয়া এবং ইউরোপের ভূমিকা নিয়ে আলোচনায় ম্যাক্রন বলেন, ‘উভয় নেতা একটি দৃঢ় ও দীর্ঘস্থায়ী শান্তি চান।’
আরও পড়ুন:
২৫ জিম্মিকে মুক্তি দিল হামাস
এছাড়া ইউরোপ প্রসঙ্গে তিনি ঘোষণা দেন, ইউরোপ প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় বৃদ্ধি করতে প্রস্তুত। এছাড়া ইউরোপ শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েন করতেও প্রস্তুত রয়েছে।
এদিকে ট্রাম্প বলেন, ‘রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন যুদ্ধের সমাপ্তির জন্য একটি সম্ভাব্য চুক্তির গ্যারান্টি হিসেবে ইউক্রেনে ইউরোপীয় শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েন করতে রাজি আছেন।’
এর আগে গত সপ্তাহে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে স্বৈরশাসক হিসেবে অভিহিত করলেও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে স্বৈরশাসক বলতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন। আর এদিন ম্যাক্রন বলেছেন, ‘এটা পরিষ্কার যে, এই সংঘাতে রাশিয়া হচ্ছে আগ্রাসী।’
আরও পড়ুন:
২৫ জিম্মিকে মুক্তি দিল হামাস
তবে ট্রাম্প যত দ্রুত সম্ভব যুদ্ধ বিরতির জন্য আশা প্রকাশ করে জানান, তিনি রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধবিরতির জন্য চেষ্টা চালাচ্ছেন। চুক্তি নিয়ে সমঝোতা হলে তিনি মস্কোতে পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।
অপরদিকে প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রন আরও ধীরগতির প্রচেষ্টার আহ্বান জানান। তবে, যুদ্ধবিরতি দিয়ে শুরু করে এরপর নিরাপত্তা গ্যারান্টিসহ শান্তি চুক্তির দিকে এগিয়ে যাওয়া উচিত বলে তিনি মনে করেন।