হাসিনার আস্থাভাজন আমলাদের অপসারণ দাবি ছাত্রসমাজের
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আস্থাভাজন আমলাদের অপসারণ ও শাস্তির দাবিতে মশাল মিছিল ও সমাবেশ করেছে করেছে ছাত্রসমাজ। সোমবার ফ্যাসিবাদবিরোধী শিক্ষার্থীবৃন্দের ব্যানারে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এক সমাবেশ থেকে এ দাবি জানান তারা। সমাবেশ শেষে শাহবাগ অভিমুখে একটি মশাল মিছিল করে ছাত্র জনতা।
স্বৈরাচার শেখ হাসিনার আস্থাভাজন এসব কর্মকর্তার মধ্যে তাদের ব্যানারে স্থান পান সাতজন আমলা। তারা হলেন- আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব নাজমা মোবারেক, পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সচিব ফারহিনা আহমেদ, কৃষি সচিব এমদাদ উল্লাহ মিয়ান, ইউজিসি সচিব ফখরুল ইসলাম, সিনিয়র সহকারী সচিব শাহানুর আলম, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু হেনা মোরশেদ জামান ও জাতীয় বার্ণ ইনস্টিটিউটের পরিচালক ডা. নাছির উদ্দিন।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আসাদ বিন রনি, ফ্যাসিবাদ বিরোধী শিক্ষার্থীবৃন্দ ব্যানারে আন্দোলনের সংগঠক নজরুল ইসলাম তুহিন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, ঢাকা মহানগরের সিনিয়র যুগ্ম সদস্যসচিব ফারহান, জাতীয় নাগরিক কমিটির শাহবাগ থানার প্রতিনিধি রফিকুল ইসলাম বর্মন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জসীমউদ্দিন হলের সমন্বয়ক খালেদ সাইফুল্লাহ প্রমুখ।
আরও পড়ুন:
রাজধানীতে কিশোরীসহ ২ জনের মরদেহ উদ্ধার
বক্তারা বলেন, ‘আমরা গত ১৬ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রের উপর মহলে কথা বলেছি যাতে প্রশাসনে থাকা হাসিনার দোসরদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়৷ কিন্তু এখনো কোনো ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। আমরা তাদের ১ সপ্তাহের সময় দিয়েছিলাম। ১ সপ্তাহ পার হয়ে যাওয়ায় আমরা আবার আন্দোলনে নামতে হয়েছে। আমরা দেখতে পারছি দেশের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির নাজুক অবস্থা।’
তারা বলেন, ‘আমাদের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বরাবরই এটাকে এড়িয়ে যেতে চান আওয়ামী লীগের উপর দায় চাপিয়ে, কিন্তু এর বিরুদ্ধে কার্যকরী কোনো পদক্ষেপ নিতে আমরা দেখছি না। রাষ্ট্রের একদম গুরুত্বপূর্ণ স্থানে আছে, এমন লোকদের মাঝে যারা আওয়ামী চিন্তা ধারণার লোক তারা খুব স্বাভাবিক ভাবেই চাইবে না এই রাষ্ট্র ঠিক মতো ফাংশন করুক৷ কিন্তু তাদের ব্যাপারে কোনো বড় পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না। গুটিকয়েক দোসরকে অপসারণ করা হচ্ছে কিন্তু বৃহত্তর পরিসরে তা হচ্ছে না।’
বক্তারা বলেন, ‘যারা আওয়ামী লীগের আমলে সচিব হয়েছে তারা শেখ হাসিনার চামচামি করেই সচিব হয়েছেন, কিন্তু এই সরকার তাদের মাঝে কি এমন ইফিসিয়েন্সি দেখতে পারছেন আমাদের বুঝে আসে না। কেন তাদের গুরুত্বপূর্ণ সব জায়গায় বসিয়ে রাখা হয়েছে! শেখ হাসিনার আমলে কিন্তু তারা প্রশাসনে ঘাপটি মেরে বসে ছিল। এখন তারা সক্রিয় হচ্ছে, রাষ্ট্রকে অচল করার জন্য তারা তাদের ষড়যন্ত্রের গুটি চালিয়ে যাচ্ছেন। আমরা সরকারকে বলব- যাদেরকে বসিয়ে রেখেছেন তাদের অতি দ্রুত অপসারণ করুন।’
আরও পড়ুন:
নির্বাচন নিয়ে কী ভাবছে এলডিপি?
এ সময় সরকারের বেশ কয়েকজন আমলার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ধরেন বক্তারা। কৃষি ডিজি সাইফুল ইসলামের হাসিনাপ্রীতির কথা তুলে ধরে বক্তারা বলেন, ‘যিনি ৪ আগস্ট হাসিনার পক্ষে শান্তি সমাবেশ করেছেন, একবার ভাবুন এমন একজন লোক যিনি হাসিনাকে টিকিয়ে রাখার অপচেষ্টায় লিপ্ত ছিল সে যে ভবিষ্যতে তাকে পুনর্বাসন করার চেষ্টা করবে না তার কোনো নিশ্চয়তা আছে? এরা যে সেক্টরগুলোকে ধ্বংস করবে না তার কোনো নিশ্চয়তা আছে? তারা বলেন, আমরা যদি মরতে হয় তাও রাজি আছি। আমরা তো ৫ তারিখেই মরে গেছি। আমরা অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়ে যাব তাতে যদি আমাদের জীবনও বিলিয়ে দিতে হয় দেব।’