বেআইনি কর্মকাণ্ডে জড়িতদের বিরুদ্ধে ‘কঠোর নীতি’ ঘোষণা যুবদলের

নিজস্ব প্রতিবেদক
২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৪:৩৪
শেয়ার :
বেআইনি কর্মকাণ্ডে জড়িতদের বিরুদ্ধে ‘কঠোর নীতি’ ঘোষণা যুবদলের

সংগঠনের নাম ব্যবহার করে সন্ত্রাস বা জনস্বার্থ বিরোধী বেআইনি কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর নীতি ঘোষণা করেছে জাতীয়তাবাদী যুবদল। আজ সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন সংগঠনের এই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন। 

তিনি বলেন, ‘সংগঠনের কোনো নেতাকর্মী সন্ত্রাসী কিংবা মানুষের স্বার্থ পরিপন্থী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত হলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে জাতীয়তাবাদী যুব দল। কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী সংগঠনের নাম ব্যবহার করে বেআইনি কর্মকাণ্ড চালানোর সুযোগ পাবে না। ভবিষ্যতে যাতে কেউ সংগঠনের সুনাম ক্ষুণ্ন করতে না পারে, সেজন্য যুবদল কঠোর নীতি গ্রহণ করবে।’

নুরুল ইসলাম নয়ন বলেন, ‘জাতীয়তাবাদী যুবদল কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক থেকে আরম্ভ করে যেকোনো ওয়ার্ডের কর্মী পর্যন্ত প্রত্যেকের কাছে একটি আমরা বার্তা আমরা পৌঁছে দিতে চাই, জাতীয়তাবাদী যুবদলের কোনো নেতাকর্মী যদি কোনো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে কিংবা দেশবিরোধী বা মানুষের স্বার্থ পরিপন্থী কোনো কাজে নিজেকে জড়িয়ে ফেলে দল কিন্তু তাদের কোনো ছাড় দেবে না।’

তিনি আরও বলেন,‘আমাদের সাংগঠনিক অভিভাবক তারেক রহমান দ্ব্যর্থহীন ভাষায় এটা ইতোমধ্যে ঘোষণা করেছেন…আমরা এই বার্তাটি গণমাধ্যমের মাধ্যমে যুবদলের সকল নেতাকর্মীর কাছে পৌঁছে দিতে চাই।’

সংগঠনের নীতিগত সিদ্ধান্ত ব্যাখ্যা করে সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘যুবদল সবসময় সুশৃঙ্খল ও আদর্শিক রাজনৈতিক চর্চায় বিশ্বাসী এবং কোনো রকমের বেআইনি, অনৈতিক ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপ প্রশ্রয় দেয় না। সংগঠনের আদর্শ পরিপন্থী কর্মকাণ্ডের প্রেক্ষাপটে যুবদল কেন্দ্রীয় কমিটি কর্তৃক ইতোমধ্যে সারাদেশে প্রায় ৬০ জনের মতো যুবদল নেতৃবৃন্দকে শোকজ এবং প্রায় ১৪০ জনের মতো নেতৃবৃন্দকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এমনকি অপরাধীদের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন জায়গায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।’

গত ২২ ফেব্রুয়ারি গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলা যুবদলের সদস্য জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার সুস্পষ্ট জড়িত থাকার অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে বলে জানান এই নেতা। তিনি বলেন, ‘সংগঠনের অভ্যন্তরীণ তদন্তের মাধ্যমে অভিযোগের সত্যতা থাকায় তাকে প্রাথমিক সদস্য পদসহ দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। আমাদের অবস্থান এখানে সীমাবদ্ধ নয়। যুবদলের পক্ষ থেকে স্বপ্রণোদিত হয়ে গতকাল রবিবার তার বিরুদ্ধে গাজীপুরের শ্রীপুর থানায় ফৌজদারি মামলাও দায়ের করা হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘অতীতে আমরা লক্ষ্য করেছি দলের কোনো নেতাকর্মী যদি অন্যায় করতো, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়তো তাহলে যে সকল দল সন্ত্রাসীদের আড়াল করার জন্য, অস্বীকার করার জন্য এক ধরনের সংস্কৃতি তৈরি করেছিল। অর্থাৎ কোনো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডকে অস্বীকার করা, অন্যায়কে অস্বীকার করা। প্রকারান্তে অন্যায় ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডকে প্রশ্রয় দেওয়া হতো।’

‘কিন্তু আমরা বলতে চাই, ইতোমধ্যে আমরা যে কয়টি অন্যায়ের খবর পেয়েছি যেখানে আমাদের দলের নেতাকর্মীরা জড়িত ছিল… আমরা কিন্তু কোথাও অস্বীকার করি নাই, আমরা তাদের শাস্তি দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি… কোথাও শোকজ করেছি, কোথাও তাদেরকে আমরা বহিষ্কার করেছি, কোথাও আমরা কমিটি বিলুপ্ত করেছি’, যোগ করেন নুরুল ইসলাম নয়ন। 

তিনি বলেন, ‘সর্বশেষ মনে হয়েছে তাকে (জাহাঙ্গীর আলম) শুধু দল থেকে বহিষ্কার যথেষ্ট নয়। এই কারণে আমরা গতকাল তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়ের করেছি, তাকে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছি এবং গ্রেপ্তারের পরে তার বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আহ্বান জানিয়েছি।’

সংবাদ সম্মেলনে যুব দলের সিনিয়র সহসভাপতি রেজাউল করিম পল, প্রথম যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বিল্লাল হোসেন তারেক, সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুজ্জামান জুয়েল এবং দপ্তর সম্পাদক নুরুল ইসলাম সোহেল উপস্থিত ছিলেন।