বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ বইমেলা

নিজস্ব প্রতিবেদক
২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
শেয়ার :
বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ বইমেলা

ফ্রাংকফুর্ট বইমেলা: ফ্রাংকফুর্ট বইমেলা বিশ্বের সবচেয়ে বড় ও পুরনো বইমেলা। গুটেনবার্গের মুদ্রণযন্ত্র আবিষ্কারের পর ১৭ শতক পর্যন্ত এটি ইউরোপের গুরুত্বপূর্ণ বইমেলা ছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ১৯৪৯ সালে পুনরায় শুরু হয়। অক্টোবর মাসে অনুষ্ঠিত পাঁচ দিনব্যাপী এ মেলায় প্রথম তিন দিন প্রকাশক ও ব্যবসায়ীদের জন্য, পরের দুই দিন পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত থাকে।

প্যারিস বইমেলা: ১৯৮১ সালে যাত্রা শুরু করা প্যারিস বইমেলা আন্তর্জাতিক সাহিত্য ও শিল্পচর্চার মিলনমেলা। ফরাসি লেখকদের বই প্রকাশের অন্যতম ক্ষেত্র এটি। ফ্রান্সসহ ইউরোপ, আমেরিকা, লাতিন আমেরিকা ও এশিয়ার অনেক দেশ এতে অংশ নেয়। বইয়ের পাশাপাশি চিত্রকলা ও অন্যান্য শিল্পকলা প্রদর্শিত হয়।

টোকিও বইমেলা: ১৯৫১ সালে শুরু হওয়া টোকিও বইমেলা এশিয়ার বৃহত্তম বইমেলা। প্রযুক্তি ও সাহিত্যের সমন্বয়ে এখানে ই-বুক, অডিও বুক ও ডিজিটাল প্রকাশনার ওপর বিশেষ সেশন হয়। বিশ্ববিদ্যালয়, গবেষণা প্রতিষ্ঠান এবং নাটক, চলচ্চিত্র ও সংগীতের প্রদর্শনী এটিকে অন্যান্য বইমেলা থেকে স্বতন্ত্র করেছে।

মস্কো আন্তর্জাতিক বইমেলা: ১৯৭৭ সালে শুরু হওয়া মস্কো আন্তর্জাতিক বইমেলা প্রতিবছর ৩-৭ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হয়। শিশুদের জন্য ‘লেটস রিড’ কর্নারসহ সাহিত্য ও প্রকাশনার বিশাল আয়োজন এটি। রুশ সাহিত্যের প্রসারের পাশাপাশি এখানে দুই শতাধিক প্রকাশনী অংশ নেয়।

কায়রো বইমেলা: আরববিশ্বের বৃহত্তম বইমেলা কায়রোতে জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে শুরু হয়ে তিন সপ্তাহ চলে। আরবি, ইংরেজিসহ বহু ভাষার বই পাওয়া যায়। ১৯৬৯ সালে কায়রোর এক হাজার বছরপূর্তি উপলক্ষে এ মেলার সূচনা হয়। বর্তমানে ৭৭টি দেশের ১২০০ প্রকাশনী অংশ নেয়।

লন্ডন বইমেলা: বিশ্বের অন্যতম বড় বইমেলা লন্ডন বইমেলা, যা ১৯৭১ সালে শুরু হয়। প্রতিবছর এপ্রিল মাসে আয়োজিত এ মেলায় ১০০টিরও বেশি দেশ অংশ নেয়। ইউরোপীয় প্রকাশক, বিক্রেতা ও এজেন্টদের জন্য এটি গুরুত্বপূর্ণ। তিন দিনব্যাপী মেলায় সাহিত্য ও প্রকাশনার ২০০টির বেশি ইভেন্ট অনুষ্ঠিত হয়।

বুক এক্সপো আমেরিকা: ১৯৪৭ সালে ওয়াশিংটন ডিসিতে ‘আমেরিকান বুকসেলার অ্যাসোসিয়েশনের কনভেনশন অ্যান্ড ট্রেড শো’ নামে শুরু হয় বই নিয়ে এ আয়োজন। ১৯৭১ সালে নাম বদলে ‘বুক এক্সপো আমেরিকা’ রাখা হয়। দেশটির বড় বড় শহরে পালাক্রমে চলে এ বইমেলা। এ মেলার অন্যতম আকর্ষণ হলো ‘দ্য বুককর্ন’; যা মূলত গল্প বলা ও সংস্কৃতি প্রদর্শন।

আবুধাবি: সাহিত্য ও ঐতিহ্য রক্ষার্থে ফ্রাংকফুর্ট বইমেলার সহযোগে আবুধাবি কর্তৃপক্ষ এ মেলার আয়োজন করে। এর মাধ্যমে আরব আমিরাত প্রকাশনাজগতের বৈশ্বিক প্রধান কেন্দ্র হিসেবে নিজেকে তৈরি করতে চায়। বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে বড় বইমেলা এটি।

মেক্সিকো: মেক্সিকান শহর গুয়াদালাজারা স্প্যানিশ ভাষার এ বইমেলার আয়োজন করে। এ মেলা বইয়ের জগতের পেশাদারদের জন্য সবচেয়ে ভালো বাণিজ্যিক পরিবেশ নিশ্চিত করে। পাঠকদের মনেও অনন্য অভিজ্ঞতার জন্ম দেয়। এটি স্প্যানিশভাষীদের জন্য প্রখ্যাত বইমেলা।

তেহরান: ইরানের রাজধানী তেহরানে ২৪ বছর ধরে অনুষ্ঠিত হয় তেহরান আন্তর্জাতিক বইমেলা। ইসলাম, ইরান, বিশ্ব ও শিল্প-সাহিত্যের ইতিহাস এবং প্রতিরক্ষাযুদ্ধ সংক্রান্ত বইয়ের জন্য এ বইমেলা বিখ্যাত। বাংলাদেশের বইমেলার সঙ্গে এ মেলার একটি বিশেষ মিল রয়েছে। তেহরান বইমেলাও ইরানিদের কাছে প্রাণের মেলার মতো। লেখক-পাঠক আর গ্রন্থানুরাগীদের ভিড়ে প্রতিদিনই মেলা থাকে জাঁকজমকপূর্ণ।

চীন: চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে প্রতিবছর বেইজিং আন্তর্জাতিক বইমেলা অনুষ্ঠিত হয়। মেলায় চীনা সাহিত্যের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সাহিত্যও গুরুত্ব পায়। এখানে চীনা লেখক ও কবিদের নতুন কাজের পাশাপাশি প্রথিতযশা সাহিত্যিকদের পুরনো কাজও স্থান পায়। মেলায় চীনের সাহিত্যিক ঐতিহ্য প্রদর্শনীর মাধ্যমে তুলে ধরা হয়।