অর্থ আত্মসাতে সম্পৃক্ত জয়-পলক
আলোচিত ‘এসপায়ার টু ইনোভেট’ (এটুআই) প্রকল্পে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির তথ্য পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অভিযোগ উঠেছে, নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে বারবার কাজ প্রদান, অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প গ্রহণ এবং ভুয়া বিল-ভাউচার তৈরি করে প্রকল্পের অর্থ আত্মসাৎ করা হয়েছে। এসব অর্থ লোপাটের সঙ্গে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা ও ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় এবং তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের যোগসাজশের প্রাথমিক তথ্য মিলেছে বলে জানা গেছে।
সম্প্রতি রাজধানীর আগারগাঁও আইসিটি টাওয়ারে এটুআইয়ের অফিসে অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন নথিপত্র সংগ্রহ করেছে দুদকের এনফোর্সমেন্ট টিম। এক দুদক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ঠিকাদারদের সঙ্গে যোগসাজশ করে অর্থ আত্মসাতের প্রমাণ মিলেছে। আমরা বিস্তারিত নথি সংগ্রহ করেছি এবং তা বিশ্লেষণ করে কমিশনে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।
অভিযান পরিচালনাকারী দুদকের সহকারী পরিচালক রাজু আহমেদ বলেন, আমরা প্রকিউরমেন্ট সংক্রান্ত কিছু অনিয়ম পেয়েছি। প্রায় ১৫০টির বেশি প্রকিউরমেন্ট পর্যালোচনা করেছি, যেখানে বেশ কিছু অনিয়ম ধরা পড়েছে।
আরও পড়ুন:
রাজধানীতে কিশোরীসহ ২ জনের মরদেহ উদ্ধার
সূত্র জানিয়েছে, ইতোমধ্যে এটুআইয়ের অভ্যন্তরীণ তদন্তে অনিয়মের প্রমাণ পাওয়ায় ১৪ জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি সজীব ওয়াজেদ জয় ও জুনাইদ আহমেদ পলকের সম্পৃক্ততা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) অর্থায়নে ‘অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন’ (এটুআই) কর্মসূচি শুরু হয়। ২০১৮ সালে এটিকে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের অধীনে আনা হয় এবং ২০২০ সালে এর নাম পরিবর্তন করে ‘এসপায়ার টু ইনোভেট’ (এটুআই) রাখা হয়।
আরও পড়ুন:
নির্বাচন নিয়ে কী ভাবছে এলডিপি?
দুদকের তথ্যমতে, প্রকল্পের প্রাথমিক ব্যয় নির্ধারিত ছিল ৪৮৫ কোটি ৪৫ লাখ টাকা, যা পরবর্তী সময় প্রায় দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়ায় ৮৫৫ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। এই অতিরিক্ত ব্যয়ের কারণ হিসেবে প্রকল্প সংশোধন, নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে বারবার কাজ প্রদান এবং অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প গ্রহণের বিষয়টি উঠে এসেছে।
এটুআই প্রকল্প সূত্র জানায়, প্রকল্পটি ২০২০ সালের জানুয়ারিতে অনুমোদিত হয় এবং ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত মেয়াদ নির্ধারিত ছিল। পরবর্তী সময় এটি সংশোধন করে ২০২৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয় এবং বাজেট ৮৫৫ কোটি ৪৭ লাখ টাকায় উন্নীত করা হয়। ২০২০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে প্রকল্পে সর্বমোট ৫৬৮ কোটি ৫৪ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে।