চলন্ত বাসে ডাকাতি-শ্লীলতাহানি, দায়িত্ব অবহেলার অভিযোগে ওসি প্রত্যাহার
যাত্রীবাহী বাসে ডাকাতি ও নারী যাত্রীকে শ্লীলতাহীন ঘটনায় মামল না নেওয়াসহ দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে নাটোরের বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুল ইসলামকে পুলিশ লাইনে প্রত্যাহার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় নাটোরের বড়াইগ্রাম থানা পরিদর্শনে এসে সিরাজুল ইসলামকে পুলিশ লাইনসে প্রত্যাহার করেন রাজশাহী রেঞ্জ ডিআইজি মোহাম্মদ শাহজাহান।
ডিআইজি মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, বাসে ডাকাতি ও নারী যাত্রীদের শ্লীলতাহানীর ঘটনায় ভুক্তভোগীরা থানায় সেবা নিতে গিয়ে সেবা না পাওয়ার অভিযোগ করেন। এ ছাড়া বিষয়টি তিনি (ওসি) কেন সঠিক সময়ে তার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানাতে পারেনি। পুলিশের কাছে সেবা না পাওয়া দায়িত্ব অবহেলা। এ কারনে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলামকে বিষয়টির কৈফিয়ত চাওয়া হয়েছে এবং সাময়িকভাবে তাকে নাটোর পুলিশ লাইনসে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
তিনি বলেন, এ ছাড়া বিষয়টি তদন্ত করা হবে। তদন্তে অভিযুক্ত হলে সিরাজুলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, গত সোমবার রাতে রাজধানীর গাবতলী থেকে নাটোরের উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়া ইউনিক রোড রয়েলস পরিবহনের একটি বাসে ডাকাতি ও শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থানায় একটি মামলা করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, গত সোমবার রাত ১১টা ২৫ মিনিটের দিকে ঢাকার গাবতলী বাসস্ট্যান্ড থেকে নাটোরের বড়াইগ্রাম যাওয়ার উদ্দেশ্যে টিকিট কেটে রাজশাহীগামী ইউনিক রোড রয়েলস পরিবহনের ওই বাসে উঠি। বাসটি রাত সাড়ে ১১টার দিকে রাজশাহী যাওয়ার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে। ছাড়ার সময় বাসটিতে ৩০ থেকে ৩৫ জন যাত্রী ছিল। রাত ১টার দিকে বাসটি গাজীপুরের কালিয়াকৈর চন্দ্রা বাইপাসে এসে চা পানের বিরতির দেয়। এ সময় সেখান থেকে আরও ৩-৪ জন নতুন যাত্রী উঠলে বাসটি আবার রাজশাহীর উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়। রাত দেড়টার দিকে গাজীপুরের কালিয়াকৈর থানার হাইটেক সিটি পার্ক সংলগ্ন খাড়াজোড়া ফ্লাইওভার ব্রিজ অতিক্রম করার ৫-৬ মিনিট পর হঠাৎ বাসে ৮/৯ জন ডাকাত একসঙ্গে দাঁড়িয়ে যায় এবং ধারাল চাকু ও চাপাতি দিয়ে প্রাণে মেরে ফেলার ভয় দেখিয়ে সবাইকে চুপ থাকতে বলে। এর মধ্যে তিনজন চালকের গলায় ধারাল চাকু ঠেকিয়ে বাসটির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়।
একপর্যায়ে তারা ধারাল চাকু ও চাপাতি দিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে গাড়িতে থাকা সব যাত্রীর কাছ থেকে টাকা, মোবাইল ফোন, স্বর্ণালংকার লুটে নিতে থাকে। এ সময় ২ থেকে ৩ জন ডাকাত গাড়িতে থাকা অজ্ঞাতনামা দুই নারী যাত্রীর স্পর্শকাতরস্থানে হাত দিয়ে শ্লীলতাহানি করে। পরে ডাকাতরা বাসটি দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা গাজীপুরের বিভিন্ন স্থান ঘুরিয়ে পুনরায় চন্দ্রা বাইপাস এলাকার একটি তেলপাম্পের কিছুটা দুরে রেখে তারা নেমে যায়।