শুধু রাজনৈতিক দল নয়, নাগরিকরাও ভোট দিতে চায়: আলী রীয়াজ
শুধু রাজনৈতিক দল নয়, এই মুহূর্তে দেশের নাগরিকরাও ভোট দিতে চায় বলে মনে করেন সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান ও জাতীয় ঐক্যমত কমিশনের ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ। রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা বাসসকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ড. আলী রীয়াজ বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলো সংস্কার প্রক্রিয়া গ্রহণের প্রতিশ্রুতি দেওয়ায় এ বছরের ডিসেম্বরে জাতীয় নির্বাচন সম্ভব হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আমি আশাবাদী যে বড় পরিসরে এটি (সংস্কার) করা সম্ভব। এটি অসম্ভব নয় এবং আমি আরও আশাবাদী কারণ রাজনৈতিক দলগুলো এ ব্যাপারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি আমাদের আশাবাদী হওয়া উচিত’, যদিও অনেকেই এ বিষয়ে খুবই হতাশাবাদী এবং কেউ কেউ সংশয় প্রকাশ করেছেন। শুধু রাজনৈতিক দল নয়, বাংলাদেশের জনগণও ভোটের অপেক্ষায় আছে, কারণ তারা গত ১৭ বছরে ভোট দিতে পারেনি। এটি একটি আদর্শ রূপরেখা। আমি মনে করি (সংস্কারের মাধ্যমে) নির্বাচন সম্ভব, কারণ এই মুহূর্তে শুধু রাজনৈতিক দল নয়, নাগরিকরাও ভোট দিতে চায়।’
আরও পড়ুন:
রাজধানীতে কিশোরীসহ ২ জনের মরদেহ উদ্ধার
আলী রীয়াজ বলেন, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও তার অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যতটুকু প্রয়োজন তার একদিনও বেশি ক্ষমতায় থাকতে চায় না।’
জাতীয় ঐক্য কমিশনের কর্মপরিকল্পনার বিষয়ে এ কমিশনের ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, কমিশনের প্রথম কাজ হবে রাজনৈতিক দলগুলোকে ছয়টি কমিশনের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন সরবরাহ করা, যা ইতোমধ্যে প্রধান উপদেষ্টার কাছে জমা দেওয়া হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলো এসব প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে মূল প্রস্তাবগুলো চিহ্নিত করবে এবং কোন সুপারিশগুলো বাস্তবায়নের জন্য জরুরি তা নির্ধারণ করবে।
আরও পড়ুন:
নির্বাচন নিয়ে কী ভাবছে এলডিপি?
তিনি জানান, এখন পর্যন্ত এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য কোনো নির্দিষ্ট সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়নি, তবে রাজনৈতিক দলগুলো এবং কমিশন উভয়েই এর অপরিহার্যতা স্বীকার করেছে।
আলী রীয়াজ বলেন, ‘আমরা এই প্রক্রিয়ায় তাড়াহুড়ো করতে চাই না, কারণ ফলপ্রসূ আলোচনা নিশ্চিত করতে এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস এটিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দ্বিতীয় পর্যায় হিসেবে উল্লেখ করেছেন, যেখানে সংলাপ ও পদক্ষেপ একসঙ্গে এগিয়ে যেতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘ছয়টি কমিশন তাদের সুপারিশ প্রদান করেছে, তবে রাজনৈতিক দলগুলোর নিজস্ব বিকল্প প্রস্তাবও থাকতে পারে, যা তাদের নীতির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। কারণ শেষ পর্যন্ত, নির্বাচিত প্রতিনিধিদের হাতেই শাসনভার থাকবে। রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত জাতীয় স্বার্থের সঙ্গে তাদের রাজনৈতিক অগ্রাধিকারগুলোর মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করা।’