ভাতিজার বিরুদ্ধে চাচাকে অপহরণের অভিযোগ
কুড়িগ্রামের উলিপুরে আদালতে স্বাক্ষী দিয়ে ফেরার পথে চাচাকে অপহরণের অভিযোগ উঠেছে ভাতিজার বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় আজ বৃহস্পতিবার উলিপুর থানায় মামলা হয়েছে। পরে পুলিশ অপহরণে ব্যবহৃত মাইক্রোবাসসহ একজনকে আটক করে।
গতকাল বুধবার কুড়িগ্রাম আদালত থেকে উলিপুরে ফেরার পথে উপজেলার দূর্গাপুর ইউনিয়নের পাঁচপীর হালা বটতলা নামক এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ধরনীবাড়ী ইউনিয়নের আলসিয়া শেখের ছেলে আব্দুর রহমানের (৬৫) সঙ্গে ভাতিজা ফুল মিয়ার (৪০) জমি-জমা নিয়ে বিরোধের কারণে আদালতে মামলা চলমান রয়েছে। ফুল মিয়া বিভিন্ন সময় আব্দুর রহমানকে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য ভয়ভীতি দেখিয়ে আসছিল।
আজ বুধবার আব্দুর রহমান ও তার জামাতা জহুরুল হক (৪৫) ওই মামলার স্বাক্ষী দিতে কুড়িগ্রামে আদালতে যান। ওই দিন দুপুরে আদালত থেকে ফেরার পথে উপজেলার দূর্গাপুর ইউনিয়নের পাঁচপীর হালা বটতলা নামক এলাকায় আব্দুর রহমান ও তার জামাতা অটোরিকশাযোগে পৌঁছালে ফুলু মিয়া ও তার লোকজন মাইক্রোবাস (ঢাকা মেট্রো-চ-১১-৮৬১৯) দিয়ে তাদের গতিরোধ করেন। এ সময় চাচা আব্দুর রহমানকে অটোরিকশা থেকে নামিয়ে অপহরণের উদ্দেশে মারধর করে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে চলে যান।
ঘটরা সময় সঙ্গে থাকা জামাতা জহুরুল হক বিষয়টি আত্বিয়-স্বজনদের জানান। পরবর্তীতে বিকেলে পৌরসভার নারিকেলবাড়ি পন্ডিত মহির উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় মাইক্রোবাসটিকে আটক করেন স্বজনরা। এ সময় ফুলু মিয়া ও তার লোকজন কৌঁশলে পালিয়ে যান।
এদিকে আব্দুর রহমানের অবস্থা গুরুত্বরত হওয়ায় তাকে উলিপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক শারীরিক অবস্থার অবনতি দেখে কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে রেফার্ড করেন। বর্তমানে তিনি চিকিৎসাধীন রয়েছে। পরবর্তীতে খবর পেয়ে মাইক্রোবাসসহ চালক মনজুরুল হককে (৪৮) আটক করে পুলিশ।
ভূক্তভোগী আব্দুর রহমানের দ্বিতীয় মেয়ে আরজিনা বেগম (৪০) বলেন, ‘আমাদের কোনো ভাই নেই। আমরা তিন বোন, সবাই বিবাহিত। আমার জ্যাঠাতো ভাই ফুল মিয়া আমাদের সম্পত্তি গ্রাস করার জন্য দীর্ঘদিন থেকে আমার বৃদ্ধ পিতাকে হুমকি ধামকি ও ভয়ভীতি দেখিয়ে আসছিলেন। ফুল মিয়া আমাদের দেড় একর জমির কিছু অংশ দখল করে নেন এবং বাকি জমিও দখল করতে চান। এ কারণে আদালতে মামলা চলমান রয়েছে। আমার পিতাকে হত্যা করার জন্য অপহরণ করা হয়েছিল। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।
এ ঘটনায় আব্দুর রহমানের জামাতা জহুরুল হক বাদী হয়ে ফুল মিয়া ও মাইক্রোবাস ড্রাইভারসহ তিনজনের নাম উল্লেখ করে এবং চারজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে আজ বৃহস্পতিবার থানায় মামলা করেন।
উলিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিল্লুর রহমান জানান, আটক মাইক্রোবাস চালক মনজুরুল হককে গ্রেপ্তার দেখিয়ে বৃহস্পতিবার আদালতে পাঠানো হয়েছে। অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।