বিএনপি নেতাদের সুপারিশে ছাড়া পেলেন স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেত্রীর ছেলে

বাউফল (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২০:০২
শেয়ার :
বিএনপি নেতাদের সুপারিশে ছাড়া পেলেন স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেত্রীর ছেলে

পটুয়াখালীর বাউফলে ডেভিল হান্টে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেত্রীর ছেলেকে আটকের পর বিএনপি নেতাদের সুপারিশে ছেড়ে দেওয়ায় অভিযোগ উঠেছে বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল হোসেনের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যপক সমালোচনা চলছে।

ছেড়ে দেওয়া যুবকের নাম মো. মেহেদী হাসান ওরফে শাকিল হাওলাদার (৩৫)। তিনি উপজেলার শৌলা গ্রামের বাসিন্দা। তার মা মোছা. খায়রুন্নাহার কালাইয়া ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক। তার বাবার নাম মো. বাবুল হাওলাদার।

স্থানীয়রা জানান, শাকিল বখাটে প্রকৃতির। মাদক সেবন ও বিক্রির অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। ফ্যাসিষ্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর তার মা খানিকটা চুপসে গেলেও বিএনপির স্থানীয় কিছু নেতাকর্মীদের ছত্রছায়ায় দাপট অব্যাহত রাখেন শাকিল। সম্প্রতি স্থানীয় আবুল কালাম হাওলাদারের ৬ শতাংশ জমির ধান কাটতে বাধা দেয় শাকিল। এ ঘটনায়ও শাকিলের বিরুদ্ধে বাউফল থানায় গত ২ জানুয়ারি লিখিত অভিযোগ করেছিলেন আবুল কালাম।

স্থানীয়রা আরও জানান, সপ্তাহখানেক আগে প্রতিবেশী মো. রিপন (৩৭) নামের এক কৃষকের জমির বীজ ধান খেয়ে ফেলে শাকিলের গরুতে। এর বিচার চাইতে গেলে ধারালো অস্ত্র নিয়ে রিপনকে ধাওয়া করে শাকিল। জীবন বাঁচাতে রিপন পার্শ্ববর্তী মনির হাওলাদারের বাসভবনে আশ্রয় নিলে সেখানে গিয়ে হামলা চালিয়ে রিপনকে মারধর ও বাসভবন ভাঙচুর করে শাকিল। ওই সময় বাসভবনের মালিক মোছা. সামসুন নাহার বেগমকে (৭০) মেরে ফেলার হুমকি দেন শাকিল।

এ ঘটনায় তার ছেলে মো. মনির হাওলাদার (৪৮) বাদী হয়ে গত সোমবার রাতে বাউফল থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। ওইদিন রাতেই শাকিলকে আটক করে পুলিশ। প্রায় ৭ ঘণ্টা থানায় আটকে রাখার পর গতকাল মঙ্গলবার সকালে তাকে বিএনপি নেতাকর্মীদের সুপারিশে মুচলেকা রেখে ছেড়ে দেওয়া হয়।

থানা সূত্রে জানা যায়, মুচলেকায় স্বাক্ষর করেন কালাইয়া ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক একেএম মনজুর আলম, কালাইয়া ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক জিএম নিউটন ও বিএনপির সক্রিয় কর্মী মো. রিয়াজ রহমান।

এ বিষয়ে বিএনপি নেতা জিএম নিউটন বলেন, যেহেতু ছোট খাটো বিষয়। একই এলাকার মানুষ। তাই তারা ছাড়িয়ে নিয়েছি।

ওসি কামাল হোসেন বলেন, শাকিলের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ ছিল না। তাছাড়া স্থানীয় বিএনপি নেতারাও তাকে ভালো বলে সুপারিশ করেছেন। তাকে অপারেশান ডেভিল হান্টের আওতায় আমরা থানায় এনেছিলাম। মামলা না থাকায় পরিবারের জিম্মায় মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

শাকিলের বিরুদ্ধে মনির হাওলাদারের দেওয়া লিখিত অভিযোগ ও তা মামলা হিসেবে রেকর্ড না করার বিষয়ে তিনি বলেন, অভিযোগকারী একবারও বলেনি যে, সেটা মামলা হিসেবে রেকর্ড করতে হবে। তার অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত চলছে।