তিস্তার ন্যায্য হিস্যা দাবিতে কাঁথা-কম্বল বিছিয়ে হাজারো মানুষের রাত্রীযাপন
তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা, তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে ‘জাগো বাহে তিস্তা বাঁচাই’-এই স্লোগানে তিস্তা পাড়ে রংপুর বিভাগের পাঁচ জেলার তিস্তার চরের ১১টি স্থানে ১৫ লাখ মানুষের জমায়েত হয়েছে। লালমনিরহাট জেলায় তিস্তার ৬৭ কিলোমিটারের কালীগঞ্জ পয়েন্টে ৪০ হাজার মানুষ কাঁথা-কম্বল নিয়ে পানিশূন্য নদীর বালুতে তাবু গেড়ে বিছানা বিছিয়ে রাত্রীযাপন করেছেন।
গতকাল সোমবার দুপুর থেকে টানা ৪৮ ঘণ্টার লাগাতার কর্মসূচি পালন করার জন্য দূর-দূরান্ত থেকে তিস্তা পাড়ে আসতে শুরু করেন এসব মানুষ। সারাদিন আলোচনা সভা, নাটক, লোকজ গান শেষে, বালু চরে বিছানা পেতে রাত্রীযাপনের প্রস্তুতি নেন। নিজেরা চাল ডাল সংগ্রহ করে রান্না করে দুপুর ও রাতের খাবার সম্পন্ন করেন।
প্রায় ৩০ থেকে ৪০ হাজার মানুষের রাত্রীযাপনের প্যান্ডেল, সমাবেশ ও বিনোদনের জন্য মঞ্চ তৈরি, পর্যাপ্ত লাইটের ব্যবস্থা, পয়ঃনিস্কাশন ব্যবস্থা, বিশুদ্ধ পানির জন্য নলকূপ স্থাপনসহ সব ধরনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
তিস্তায় ৪৮ ঘণ্টা অবস্থান করতে আসা চলবলা ইউনিয়নের দুহুলী এলাকার শাহ আলম বলেন, নদী ভাঙ্গনে সব আবাদি কৃষি জমি বিলীন হয়ে গেছে। কয়েকবার বাড়ি সরাতে হয়েছে, মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে সব জমিতে আবাদ হবে। আগে অনেকবার মহাপরিচালক হওয়ার কথা শুনলেও বাস্তবায়নের করতে পারেনি বিগত সরকার। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে দ্রুত তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবি জানান তিনি।
তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন কমিটির কালীগঞ্জ উপজেলার অন্যতম সমন্বয়কারী, জেলা বিএনপি সহ-সভাপতি রোকন উদ্দিন বাবুল জানান, তিস্তা চুক্তি ও মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন কোনো ব্যক্তি, গোষ্ঠী বা কোনো রাজনৈতিক দলের নয়।এটি রংপুর বিভাগবাসীর আন্দোলন।
৪৮ ঘণ্টার কর্মসূচি বাস্তবায়নে তিস্তার চরে হাজারো মানুষ তাঁবুতে বিছানা করেছে জানিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘তাদের সকলের দাবি তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে হবে। তিস্তার করাল গ্রাস থেকে এই অঞ্চলের মানুষ মুক্তি চায়।’