অনুমতি পেলো স্থগিত হওয়া লালন স্মরণোৎসব

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি
১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২১:০৯
শেয়ার :
অনুমতি পেলো স্থগিত হওয়া লালন স্মরণোৎসব

হেফাজতে ইসলাম ও কওমি ওলামা পরিষদের নেতাকর্মীদের আপত্তির মুখে স্থগিত হওয়া টাঙ্গাইলের মধুপুরে লালন স্মরণোৎসব উদযাপনের অনুমতি মিলেছে। এরই মধ্যে তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে উৎসবের।

এর আগে গত ১২ ফেব্রুয়ারি মধুপুর বাসস্ট্যান্ডে হওয়ার কথা ছিল লালন স্মরণোৎসব। পড়ে হেফাজতে ইসলাম ও কওমি ওলামা পরিষদের আপত্তির মুখে অনুষ্ঠানটি স্থগিত ঘোষণা করে আয়োজক কমিটি।

অনুষ্ঠানটি আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি মধুপুর অডিটোরিয়ামে রাত সাড়ে ৮টায় অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন মধুপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. জুবায়ের হোসেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ফকির লালন সাঁইয়ের ১৩৪তম তিরোধান দিবস উপলক্ষে বুধবার রাত ৮টায় মধুপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় মধুপুর লালন সংঘের আয়োজনে ‘লালন স্মরণোৎসব-২০২৫’ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা ছিল মধুপুর ইউএনও মো. জুবায়ের হোসেনের। এছাড়াও সহকারী পুলিশ সুপার (মধুপুর-সার্কেল), মধুপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ (ওসি) একাধিক শীর্ষ ব্যক্তিকে অতিথি করা হয়।

কিন্তু হেফাজতে ইসলাম ও কওমি ওলামা পরিষদের নেতারা লালন উৎসবকে ইসলামের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করে অনুষ্ঠান বন্ধের দাবি করেন। একপর্যায়ে অনুষ্ঠানটি স্থগিত ঘোষণা করে আয়োজক কমিটি। বিষয়টি নিয়ে সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশ হয়। এ নিয়ে শুরু হয় সমালোচনা।

এদিকে, বিষয়টি নিয়ে শুক্রবার সন্ধ্যায় মধুপুর ইউএনওর কার্যালয়ে হেফাজত ইসলাম, কওমি ওলামা পরিষদ, বিএনপি ও লালন সংঘের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে ইউএনও মো. জুবায়ের হোসেন, মেজর শোয়েব, মধুপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি জাকির হোসেন সরকার, মধুপুর লালন সংঘের উপদেষ্টা এস এম শহীদ, সাধারণ সম্পাদক গৌতম চন্দ্র সাহা, অনুষ্ঠান উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক সবুজ মিয়া, মধুপুর উপজেলা হেফাজতে ইসলামের সভাপতি মুফতি আনোয়ার হোসেন, সাধারণ সম্পাদক মাহমুদউল্যাহ এবং ক্বারি মোদাচ্ছের হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

সেখানে আগামী রবিবার অনুষ্ঠানটি মধুপুর অডিটোরিয়ামে রাত সাড়ে ৮টায় আয়োজনের সিদ্ধান্ত হয়।

আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক মো. সবুজ মিয়া বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে বৈঠক হয়। সেখানে হেফাজতে ইসলামসহ কয়েকটি দলের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে সমঝোতার মাধ্যমে আগামী রবিবার অনুষ্ঠানটি আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বৈঠকে হেফাজতে ইসলাম প্রতিশ্রুতি দেয় অনুষ্ঠান আয়োজনে তারা কোনো বাধার সৃষ্টি করবে না। সেইসঙ্গে মধুপুর লালন সংঘ থেকে বিতর্কিত কোনো বক্তব্য, তথ্য ও সঙ্গীত উপস্থাপিত হবে না বলেও প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. জুবায়ের হোসেন বলেন, হেফাজতে ইসলাম, বিএনপি, আয়োজক কমিটি, সেনাবাহিনী ও স্থানীয় সাংবাদিকদের নিয়ে বৈঠকে বসা হয়েছিল। এ সময় সমঝোতার মাধ্যমে স্থগিত হওয়া লালন স্মরণোৎসবের নতুন তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। বড় আয়োজনের মধ্য দিয়েই অনুষ্ঠানটির আয়োজন করা হবে।