খাগড়াছড়িতে কারারক্ষীদের আন্দোলনে জেলার অবরুদ্ধ
খাগড়াছড়ি জেলা কারাগারের জেলার আক্তার হোসেন শেখকে তার অফিস কক্ষে সাড়ে ৩ ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখে কারারক্ষীরা। আজ জেলার আক্তার হোসেনের শেষ কর্মদিবস ছিল খাগড়াছড়িতে।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ৩টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত তাকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ এনে এ আন্দোলন করে কারারক্ষীরা।
পরে খবর পেয়ে খাগড়াছড়ি জেলা কারাগারের ভারপ্রাপ্ত জেল সুপার খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী কমিশনার মো. শাহীন আলম এসে কাররক্ষী নাছির উদ্দীনকে নিরস্ত্র করেন। এরপর খাগড়াছড়ির অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. হাসান মারুফ এসে কারারক্ষীদের নিয়ে বসে অভিযোগ শুনে জেলারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
কারারক্ষী নাছির উদ্দীন ও আব্দুস সালাম বলেন, ‘খাগড়াছড়ি জেল সুপার আক্তার হোসেন শেখ সাধারণ কারারক্ষী এবং বন্দী আসামিদের নানান মানসিক অত্যাচার করতেন। যেকোনো কাজের জন্য আমাদের থেকে টাকা দিতে হতো। টাকা ছাড়া তিনি কিছুই বুঝেন না। এসব বিষয় নিয়ে একবার আসামিরা জেলারকে ভিতরে আক্রমণের চেষ্টা করে। পরে আমরা দ্রুত জেলারকে নিরাপত্তা প্রদান করি। এছাড়াও গতবছর সাংবাদিকরা উনার অনিয়মের বিষয়ে নিউজ করলে তা তদন্ত হয়। ইতোমধ্যে উনাকে ওএসডি করে বদলি আদেশ হয়। আজ তার খাগড়াছড়ি ত্যাগ করার কথা। কিন্তু আজ হঠাৎ করে কোনো কারণ ছাড়াই তিনি আমাদের রাজশাহী বদলি করে দেন।’
খাগড়াছড়ি জেলা ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক বাপ্পি দাশ বলেন, ‘এই জেলার আক্তার হোসেন শেখ’র বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ রয়েছে। গত আন্দোলনের সময় ১৭ জুলাই পুলিশ আমাকে অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার করে। পরে জেলে আসলে জেলার আমাকে মানসিকভাবে টর্চার করে দের ফুট জায়গার জন্য ৮-৯ দিনে ৪৬ হাজার টাকা আদায় করে। আমি উনার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করব।’
আব্দুল করিম নামের এক ব্যক্তি অভিযোগ করে বলেন, ‘একটা পারিবারিক মামলায় ২০২৪ সালে আমি ২ মাস ৫ দিন কারাগারে থাকি। তখন ১০-১৫ হাজার টাকা দিয়ে কারাগারের ভিতরে থাকতে হয়। না হলে অত্যাচার, মারধর করা হয়। এটা ভিতরে নিত্যদিনের ঘটনা, এটা প্রতিনিয়ত চলে।’
খাগড়াছড়ি জেলা কারাগারের ভারপ্রাপ্ত জেল সুপার খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী কমিশনার কমিশনার মো. শাহীন আলম বলেন, ‘কারারক্ষীদের নিকট থেকে বিষয়টি শুনে আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সমাধান করার চেষ্টা করব। আসলে বিষয়টি কোনো সমস্যা না, নিজেদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। জেলার অবরুদ্ধ ছিলেন না। উনার বদলি হয়েছে সুতরাং উনি স্বাভাবিকভাবে এখান থেকে যেতে পারবেন।’