ছাত্রদের দল গঠন নিয়ে যা বললেন হাফিজ উদ্দিন আহমদ

অনলাইন ডেস্ক
১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৮:২৮
শেয়ার :
ছাত্রদের দল গঠন নিয়ে যা বললেন হাফিজ উদ্দিন আহমদ

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি মিলে যে নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করতে যাচ্ছে তাকে স্বাগতম জানিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ বলেছেন, সরকারে থেকে রাজনৈতিক দল গঠন করলে তা সমীচীন হবে না। একটি বেসরকারি টিভিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ মন্তব্য করেন তিনি।   

 হাফিজ উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘ছাত্ররা একটি নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করতে যাচ্ছে এবং প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস তাদের উৎসাহিত করেছেন এ দল করার জন্য, এটি আমাদের কাছে কিছুটা বেখাপ্পা লাগছে। ছাত্ররা দল করতে পারলে আমরা তাদের স্বাগতম জানাই এবং দল করে তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক। ’

তিনি বলেন, ‘তাদের রাজনীতিতে অংশগ্রণেরে মাধ্যমে নিশ্চয় আমরা ভালো কিছু আশা করতে পারি। তারুণ্যের এক পশলা বাতাস তারা নিয়ে আসবেন তাদের রাজনীতিতে অংশগ্রহণের সাথে সাথে, কিন্তু সরকারে থেকে রাজনৈতিক দল গঠন করাটা সমীচীন হবে না এবং এই অন্তর্বর্তী সরকারের নিরপেক্ষতা ক্ষুণ্ন হবে বলে আমরা মনে করি। আমরা আশা করি, এই যে তিনজন বা চারজন ছাত্র উপদেষ্টা আছেন, তারা সরকার থেকে পদত্যাগ করে জোরেসোরে রাজনৈতিক দল গঠনে এগিয়ে যাক এবং তারপরে জাতীয় নির্বাচন হলে অন্য দলগুলোর সঙ্গে তারাও অংশগ্রহণ করুক। ’

নতুন দলের ভবিষ্যৎ কেমন, জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, ‘এ দলের নিশ্চয় ভবিষ্যত আছে, কিন্তু যদি ক্ষমতায় থেকে তারা রাজনৈতিক দল গড়ে তবে তাদের ভবিষ্যত অন্ধকারাচ্ছন্ন বলেই সাধারণ মানুষ মনে করে। ’

বিএনপির সঙ্গে তারা জোট করতে চাইলে বিএনপির অবস্থান কী হবে জানতে চাইলে হাফিজ উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘দল গঠনের পরে যদি বিএনপিকে অ্যাপ্রোচ করে, বিএনপির সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে চায়- সেটি নিশ্চয় আমাদের দল বিবেচনা করবে। সকলের প্রতি আমাদের সমান সুদৃষ্টি থাকবে এবং আমরা সবাইকে রাজনৈতিক মাঠে ওয়েলকাম করি। আশা করি, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ আরও উজ্জ্বল হবে। ’

নতুন দল জনসমর্থন পাবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘কী ধরনের জনসমর্থন তারা পাবে তা আগাম বলা মুশকিল। তবে ছাত্রদেরন এ দলটি নিশ্চয় ভালো করবে। এ ছাড়া জামায়াতে ইসলামী যদি এককভাবে নির্বাচন করে, তারাও ভালো করতে পারে। তো, সবকিছুর মূল নিয়ন্ত্রক তো জনগণ। জনগণ ভোট দেবে, যারা জনগণের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারবে ম্যানিফেস্টোর মাধ্যমে জনগণ নিশ্চয় তাদের ভোট দেবে। ’

বিএনপির নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ের এ নেতা বলেন, ‘নির্বাচন খুবই প্রয়োজন, অবিলম্বে নির্বাচন দেওয়া উচিত, যাতে আমরা সবাই মিলে, সব রাজনৈতিক দল একই সুরে কথা বলতে পারি। সে জন্য একটা সময়ও আমরা দিচ্ছি। এ ছাড়া মাঝে মাঝে অনেক কিছু উঠে আসে যেমন কতগুলো সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে। সরকার কয়েকটি বিষয় নিয়ে সংস্কার প্রস্তাব আহ্বান করেছে এবং কমিটি করে দিয়েছে। কমিটিগুলোর অধিকাংশই ইতোমধ্যে সংস্কার প্রস্তাব জমা দিয়েছে। এটা নিয়েও আমরা আলাপ-আলোচনা করছি।’

হাফিজ উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আমরা দলীয়ভাবে এবং তার সঙ্গে আমাদের যে মিত্র দলগুলো রয়েছে, জোটসঙ্গী রয়েছে, তাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করছি।  একটি বিষয় ইতোমধ্যেই আমাদের অ্যাক্টিং চেয়ারম্যান জানিয়েছেন যে, ‘‘নির্বাচনে যদি বিএনপি সংখ্যাঘরিষ্ঠতা লাভ করে তাহলে আমরা অন্যান্য দলগুলোকে সাথে নিয়ে একটি জাতীয় সরকার গঠন করতে চাই।’’’এবার সেজন্য বিভিন্ন বিষয় নিয়ে যাতে আমরা একমত হতে পারি সে জন্য বিএনপি লিয়াঁজো কমিটি গঠন করেছে এবং অনেকগুলো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করছে। এর মধ্যে রয়েছে ইসলামী দলগুলো, এর মধ্যে রয়েছে বামপন্থী দলগুলো, ডানপন্থী দলগুলো এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আমরা আলাপ-আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি।’