আশা ছাড়ছেন না সিমন্স
২০১৭ চ্যাম্পিয়নস ট্রফির সেমিফাইনাল খেলেছিল বাংলাদেশ দল। এবারের আসরকে ঘিরেও বড় স্বপ্নই দেখছেন জাতীয় দলের প্রধান কোচ ফিল সিমন্স। নিজেদের সেরাটা দিতে পারলে শিরোপা জেতার ভালো সম্ভাবনাও দেখছেন তিনি। গতকাল বাংলাদেশের ক্যারিবিয়ান কোচ বলেন, ‘যদি এটা বিশ্বাস (চ্যাম্পিয়নস ট্রফি জেতা) না করতাম, তাহলে এখানে থাকতাম না। যখনই আপনি কোনো টুর্নামেন্টে খেলতে যাবেন, সম্ভাব্য সেরা প্রস্তুতিটাই নেওয়ার চেষ্টা করতে হবে এবং নির্দিষ্ট দিনে নিজের সেরাটা খেলার চেষ্টা করতে হবে। প্রতিটি উপলক্ষে আমিও দলকে সেই জায়গায় নিয়ে যেতে চাই।’
আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হবে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির আসর। এবার টুর্নামেন্টের আয়োজক দেশ পাকিস্তান ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। ৮ দলের এই টুর্নামেন্টে ‘এ’ গ্রুপে বাংলাদেশ। তাদের সঙ্গী ইন্ডিয়া, নিউজিল্যান্ড ও পাকিস্তান। আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি দুবাইয়ে ইন্ডিয়া ম্যাচ দিয়ে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি অভিযান শুরু করবে বাংলাদেশ দল। গ্রুপপর্বের বাকি দুটি ম্যাচ পাকিস্তানে; ২৪ ও ২৭ ফেব্রুয়ারি রাওয়ালপিন্ডিতে নিউজিল্যান্ড ও স্বাগতিক পাকিস্তানের মুখোমুখি হবেন টাইগাররা। চ্যাম্পিয়নস ট্রফির জন্য গত রবিবার থেকে অনুশীলন শুরু করেছেন কয়েকজন ক্রিকেটার। মিরপুরে ফ্লাডলাইটের নিচেও নিজেদের ঝালিয়ে নিচ্ছেন তারা; অনুশীলন চলবে ১২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। তবে গ্রুপের অন্য দলগুলো (ভারত, পাকিস্তান ও নিউজিল্যান্ড) যেভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছে, বাংলাদেশ দলের প্রস্তুতি কি তেমনটা হচ্ছে? চ্যাম্পিয়নস ট্রফির আগে টিম ইন্ডিয়ার ব্যস্ততা ইংল্যান্ড সিরিজ নিয়ে। নিউজিল্যান্ড, পাকিস্তান ও সাউথ আফ্রিকা খেলছে ত্রিদেশীয় সিরিজ। বাংলাদেশের প্রস্তুতি বলতে কুড়ি ওভারের টুর্নামেন্ট বিপিএল আর মিরপুরে পাঁচ দিনের চলমান ক্যাম্প। টাইগাররা সর্বশেষ ওয়ানডে খেলেছেন গত বছরের ডিসেম্বরে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে। ফিল সিমন্স জানান, চ্যাম্পিয়নস ট্রফির জন্য তাদের ‘সেরা’ প্রস্তুতি হচ্ছে না। তবে প্রস্তুতিতে ঘাটতি হলেও খুব বেশি সমস্যা হবে না বলেই তার বিশ^াস। তিনি বলেন, ‘তারা ক্রিকেট খেলবে আর সেটা সাদা বলেই। আমরা তাদের পারফর্ম (বিপিএল) করতে দেখেছি, এখন কেবল তাদের মানসিকতাটা হতে হবে ওয়ানডের জন্য।’
চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে বাংলাদেশ দলকে নেতৃত্ব দেবেন নাজমুল হোসেন শান্ত। ইনজুরির কারণে সবশেষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের দলে ছিলেন না এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। সর্বশেষ বিপিএলে ফরচুন বরিশাল একাদশে তিনি খুব একটা সুযোগ পাননি। সাইড বেঞ্চে বসে থাকতে হয়েছে বাংলাদেশ অধিনায়ককে। বরিশালের হয়ে ৫ ম্যাচে ১১.২০ গড়, ১১৯.১৪ স্ট্রাইকরেটে ৫৬ রান করেছেন শান্ত। সর্বোচ্চ ৪১। অফফর্মে থাকা নাজমুলের ব্যাপারেও আত্মবিশ^াসী ফিল সিমন্স। তিনি বলেন, ‘সে কঠোর পরিশ্রম করছে। আর এখন ৫০ ওভারের খেলা। অধিনায়ক এই ফরম্যাটে খেলেনি এমন কিন্তু নয়। আমার মনে হয় তার একটা শক্ত মানসিক অবস্থা প্রয়োজন, যেটা তার আছেও।’ ফিল সিমন্স কথা বলেছেন লিটন দাসকে নিয়েও। টানা অফফর্মে থাকার কারণে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির দলে জায়গা পাননি এই ক্ল্যাসিক্যাল ব্যাটসম্যান। তবে বিপিএলে ঢাকা ক্যাপিটালসের হয়ে কিছু ম্যাচে ঝলক দেখিয়েছেন লিটন। ১১ ম্যাচে ৩৬.৮০ গড়, ১৪৩.১৯ স্ট্রাইকরেটে ৩৬৮ রান করেছেন। সর্বোচ্চ ১২৫*। টুর্নামেন্টে সপ্তম সর্বাধিক রান করা লিটনকে নিয়ে সিমন্স বলেন, ‘বিপিএল চলাকালেই তাকে কিছুটা ফর্মে ফিরতে দেখেছি আমরা। তার মতো একজনকে মিস করতেই হবে। তবে আমরা জানি যে, সে এটি মেনে নিয়েছে, দল বাছাইয়ের সময় রান করছিল না। তাই এটি হয়েছে। তবে আমি আপনাদের বলতে পারি, ফেরার জন্য সে কঠোর পরিশ্রম করছে।’
আরও পড়ুন:
স্পিনে ভরসা রাচিনের
এদিকে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির দলে রাখা হয়নি সাকিব আল হাসানকেও। তার ইচ্ছে ছিল, চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে খেলে এই সংস্করণকে বিদায় জানানো। তবে বোলিংয়ে নিষিদ্ধ হওয়া এই অলরাউন্ডারকে শুধু ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে বিবেচনা করেনি গাজী আশরাফ হোসেন লিপুর নির্বাচক কমিটি। বোলিংয়ে নিষেধাজ্ঞা কাটলে সাকিবকে কি জাতীয় দলে ফেরানো হবে? এমন প্রশ্নের জবাবে বল নির্বাচকদের কোটেই ঠেলে দিয়েছেন ক্যারিবিয়ান কোচ। তিনি বলেন, ‘এই প্রশ্নের উত্তর দিতে পারব না।’
আরও পড়ুন:
সূর্যর সাফল্যের মন্ত্র