ঢাকায় টিউলিপের পঞ্চম সম্পত্তির সন্ধান
দ্য টেলিগ্রাফের প্রতিবেদন
বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার গুলশানে অবস্থিত একটি বিলাসবহুল ১০ তলা টাওয়ারের বাসিন্দা হিসেবে টিউলিপ সিদ্দিকের নাম তালিকাভুক্ত ছিল। গতকাল শনিবার যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফের এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য জানানো হয়েছে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, আদালতের নথিপত্র ও অন্যান্য তথ্যের ভিত্তিতে এটি বাংলাদেশে টিউলিপের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট পঞ্চম সম্পত্তি। তবে যুক্তরাজ্যের লেবার পার্টির সূত্রগুলো বলছে, বাংলাদেশে টিউলিপের কোনো সম্পত্তি নেই এবং তাই এ বিষয়ে তিনি কোনো প্রশ্নের জবাব দেওয়ার দায়বদ্ধ নন।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ‘সিদ্দিকস’ নামে ঢাকার এই অ্যাপার্টমেন্ট কমপ্লেক্সটি তার পরিবারের নামে নিবন্ধিত ছিল এবং ২০১৪ সালে এটি তার ‘স্থায়ী ঠিকানা’ ছিল। সে সময় তিনি যুক্তরাজ্যের উত্তর লন্ডনের ক্যামডেন কাউন্সিলের কাউন্সিলর ছিলেন।
টিউলিপ সিদ্দিক যুক্তরাজ্যের লেবার পার্টির পার্লামেন্ট সদস্য (এমপি) এবং দেশটির সাবেক দুর্নীতিবিরোধী মন্ত্রী। তিনি বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগ্নি।
আরও পড়ুন:
রাজধানীতে কিশোরীসহ ২ জনের মরদেহ উদ্ধার
সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের সিটি মিনিস্টারের পদ থেকে পদত্যাগ করেন টিউলিপ সিদ্দিক। তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের তদন্তের জেরে তিনি এ সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হন। তদন্তে উঠে আসে, শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পৃক্ত এক ব্যক্তির কাছ থেকে পাওয়া একটি ফ্ল্যাট নিয়ে টিউলিপ অসাবধানবশত জনগণকে বিভ্রান্ত করেছেন। উল্লেখ্য, ৭৭ বছর বয়সী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের দীর্ঘতম মেয়াদের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। গত বছরের আগস্টে এক রক্তক্ষয়ী দমন-পীড়ন চালানোর পর তিনি গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতা হারান।
বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) গাজীপুরের কানাইয়া এলাকায় ‘টিউলিপস টেরিটরি’ নামে একটি পারিবারিক অবকাশযাপনের বাড়ি নিয়েও তদন্ত করছে। এ তথ্য সামনে আসার পর গুলশানের সম্পত্তির সঙ্গে টিউলিপের যোগসূত্রের তথ্য প্রকাশ পায়।
আরও পড়ুন:
নির্বাচন নিয়ে কী ভাবছে এলডিপি?
একটি আনুষ্ঠানিক নথিতে দেখা যায়, গুলশানের সম্পত্তিটি টিউলিপের ‘বর্তমান’ ও ‘স্থায়ী’ উভয় ঠিকানা হিসেবেই বিবেচিত হয়েছিল। ২০১৪ সালের মে মাসে টিউলিপ লন্ডনের ক্যামডেনের কাউন্সিলর পদ থেকে সরে দাঁড়ান। নথিটিতে এর তিন সপ্তাহ পরের তারিখ লেখা। প্রতিবেদনে বলা হয়, গুলশানের ওই ভবনটি ২০১০ সালের দিকে নির্মিত হয় এবং এতে খোলা ছাদ, বারান্দাযুক্ত ফ্ল্যাটসহ অন্যান্য আধুনিক সুবিধা রয়েছে। তবে ভবনটি টিউলিপের বাবা শফিক আহমেদ সিদ্দিক, টিউলিপের দাদা নাকি পুরো পরিবারের নামে, তা স্পষ্ট নয়।
এই ভবনটির মালিকানার বিষয়ে অবগত এক ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে দ্য টেলিগ্রাফকে বলেন, এটি পরিবারের এক সদস্যের মালিকানাধীন জমির ওপর নির্মাণ হয়। তবে পরিবারটি এখনও ওই ভবনের কোনো ফ্ল্যাটের মালিক কিনা বা ভবনটির নামকরণ কার নামে হয়েছে-এ বিষয়ে লেবার পার্টি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। টিউলিপ সিদ্দিকের মুখপাত্র জানিয়েছেন, তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের কোনো প্রমাণ নেই এবং তিনি এসব অভিযোগ সম্পূর্ণভাবে অস্বীকার করেন।
টিউলিপ সিদ্দিকের বাবা শফিক আহমেদ সিদ্দিক ‘সাম্প্রতিক সময়’ পর্যন্ত ওই ভবনে বসবাস করতেন বলে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে তার বায়োতে লেখা ছিল। শফিক আহমেদ শেখ রেহানার স্বামী। রেহানা বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বোন।