ফরিদপুরে বঙ্গবন্ধু স্মৃতিস্তম্ভ ভাঙচুর করেছে বিক্ষুব্ধ জনতা
ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে পুলিশের বাঁধা উপেক্ষা করে 'বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা স্মৃতিস্তম্ভ’ এক্সকেভেটর দিয়ে ভেঙে দিয়েছে বিক্ষুব্ধ বিএনপির অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। এ নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।
আজ শনিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে পৌরসদরের চৌরাস্তায় স্বাধীনতা চত্বরে নৌকায় বসা শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল সম্বলিত স্মৃতিস্তম্ভটি একটি এক্সকেভেটর (ভেকু) দিয়ে আংশিক ভাঙচুর করা হয়। এ সময় বিএনপির অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীসহ বিভিন্ন পর্যায়ের বিক্ষুব্ধ জনতাদের উল্লাস করতে দেখা যায়।
এর আগে, গত বছরের ৫ আগস্ট বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশত্যাগ করলে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা স্মৃতিস্তম্ভটি আংশিক ভাঙচুর করে ছাত্র-জনতা।
ভাঙচুরের খবর পেয়ে বোয়ালমারী থানা পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে বাঁধা দেওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় বিক্ষুব্ধ ছাত্র দলের নেতাকর্মীরা আওয়ামী লীগ বিরোধী নানা স্লোগান দিতে থাকে। পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে বিক্ষুব্ধরা ভাঙচুর চালিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।
জানা যায়, ২০১৪ সালে তৎকালীন ফরিদপুর-১ সাবেক সংসদ সদস্য মো. আব্দুর রহমান শহরটির সৌন্দর্য বর্ধন ও স্বাধীনতা সংগ্রামের স্মৃতি সংরক্ষণে পৌরসদরের প্রাণকেন্দ্র চৌরাস্তায় স্বাধীনতা স্তম্ভটি নির্মাণের প্রকল্পটি উদ্বোধন করেন। স্থানীয় সরকার সরকারের অর্থায়নে ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে এ স্তম্ভটি নির্মাণ করা হয়। নির্মাণ শেষে প্রকল্পটি নাম দেওয়া হয় 'বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা স্মৃতিস্তম্ভ'।
ভাঙচুর নেতৃত্ব দেওয়া জিয়া প্রজন্ম দলের সাধারণ সম্পাদক ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মী মো. জাকারিয়া বলেন, 'গণ অভ্যুত্থানে শহীদ ভাইদের রক্তের দাগ এ মাটিতে এখনো শুকায়নি। অথচ পালিয়ে যাওয়া হাসিনা ভারতের মাটিতে বসে এ দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। এলাকার মুক্তিকামী ছাত্র-জনতার বিরুদ্ধে অনলাইনে ভাষণ দেওয়ার দুঃসাহসের প্রতিবাদে এই ভাঙচুর করা হয়েছে।'
উপজেলা ছাত্রদলের নেতা দাবি করে প্রবাস ফেরত দাদপুর গ্রামের বাসিন্দা বোরহান হোসাইন বলেন, 'আমরা এ দেশের মাটিতে ফ্যাসিবাদ শেখ হাসিনার রেখে যাওয়া শেকড় উপড়ে ফেলব।'
ঘটনাস্থলে আসা মাছুম বিল্লাহ নামে একজন বলেন, আমরা এমন কিছু চাই যা জাতিধর্ম ভেদাভেদ ভুলে মানুষের কল্যাণে নির্মিত হোক। কোনো দলের এজেন্ডা বাস্তবায়নের লক্ষ্য নয়।'
থানার উপপরিদর্শক শরীফ আব্দুর রশিদ বলেন, 'স্থাপনাটি ভাঙচুরকালে প্রধান সড়কে যানজট সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে স্থাপনাটি ভাঙচুর নিবৃত করার চেষ্টা করি।'
বোয়ালমারী নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানভীর হাসান চৌধুরী বলেন, 'ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে ভাঙচুরের বিষয়টি অবগত করা হয়েছে। বর্তমানে ওই এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ওখানে স্থানীয় গণ্যমান্যদের সাথে কথা বলে সৌন্দর্য বন্ধনের জন্য ভালো কিছু করা হবে।'