চব্বিশের গণহত্যার বিচার আগে, পরে অন্যকাজ: জামায়াত আমির
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘চব্বিশের গণহত্যার বিচার অবশ্যই আগে করতে হবে, তারপরে অন্যকাজ। তা না হলে শহীদের রক্তের সাথে বেইমানি করা হবে।’
এ সময় তিনি বলেন, ‘ধর্ম যার যার, বাংলাদেশ হবে সবার।’
আজ শনিবার দুপুরে কক্সবাজার সরকারি কলেজ মাঠে আয়োজিত জামায়াতের এক কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, প্রধান বিচারপতির এজলাস ভাঙচুরকারী, যারা আদালতের দরজায় লাথি মেরেছিল, তাদেরকে আওয়ামী লীগ বিচারপতি বানিয়েছিল। এদের কাছ থেকে জনগণ কিভাবে সুবিচার পাবে। আমাদের ১১ জন কলিজার টুকরাকে তারা নানাভাবে ঠান্ডা মাথায় বিচারের নামে হত্যা করেছে।
তিনি আরও বলেন, রাজনীতির সঙ্গে চাঁদাবাজি, দুর্বৃত্তের কোনো সম্পর্ক নেই। এ ধরনের অপকর্ম থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে জামায়াতের আমির বলেন, আগে যেমন চাঁদাবাজি ছিল, এখনও আছে। এ চাঁদাবাজি কারা করছে, তা বন্ধ করতে হবে।
জামায়াত বাংলাদেশের সবচেয়ে মজলুম দল উল্লেখ করে শফিকুর রহমান বলেন, ‘আমরা এখনো নিবন্ধন ফিরে পাইনি। জামায়াত একমাত্র দল যার নিবন্ধন কেড়ে নেওয়া হয়েছে। দলকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কারণ এই দল আল্লাহর আইন চায়। স্বাধীনতার ৫৪ বছরে কোনো অপকর্ম জামায়াত ইসলামীকে স্পর্শ করেনি। কিন্তু যে দলই অতীতে ক্ষমতায় এসেছে তারা দুর্নীতি, লুটপাট করেছে। জামায়াতের কারও বিরুদ্ধে সেই অভিযোগ নেই।’
এ সময় জামায়াত আমির বলেন, ‘যুদ্ধ এখনও শেষ হয়নি। কারো উস্কানিতে আমরা কারো ক্ষতি করতে দেব না। পলাতক সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা বেনজির এখন দেশের বাইরে থেকে ষড়যন্ত্র করছে। নানা ষড়যন্ত্র অব্যাহত রয়েছে।’ এ সময় তিনি দেশবাসীসহ দলীয় নেতাকর্মীদের এ বিষয়ে সতর্ক ও সচেতন থাকার আহ্বান জানান।
জেলা জামায়াতের আমির অধ্যক্ষ মাওলানা নুর মোহাম্মদ আনোয়ারীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মী সম্মেলনে জামায়াতের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও কক্সবাজার-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) হামিদুর রহমান আযাদ, সাবেক এমপি ও চট্টগ্রাম মহানগর জামায়াতের আমির শাহজাহান চৌধুরী, জামায়াতের কেন্দ্রীয় এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা মোহাম্মদ শাহজাহান, কক্সবাজার জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি জাহিদুল ইসলাম, জেলা এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি শামসুল আলম বাহাদুর, কক্সবাজার শহর জামাতের আমির আব্দুল্লাহ আল ফারুক, সাংগঠনিক সম্পাদক হেদায়েত উল্লাহ, জেলা কর্মপরিষদ সদস্য জাকের হোসাইন, সদর উপজেলা আমির খুরশিদ আলম আনচারী, শহর সেক্রেটারি রিয়াজ মুহাম্মদ শাকিল প্রমুখ। এ সময় কেন্দ্রীয় ও জেলা পর্যায়ের নেতা ও জেলার কর্মী সমর্থকরা উপস্থিত ছিলেন।
কর্মী সম্মেলনকে ঘিরে সকাল থেকে সম্মেলনস্থলে জড়ো হতে থাকেন দলটির নেতাকর্মী ও সমর্থকরা। সকাল ৯ টার মধ্যেই হাজারো মানুষে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় সম্মেলনস্থল।
এবারের কর্মী সম্মেলনে পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও অংশগ্রহণ করেন। তবে নারীরা কলেজের মাঠের বিপরীতে অবস্থিত ইলিয়াস মিয়া চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বসে নেতৃবৃন্দের কথা শুনেন।
বিপুল লোকের সমাগমকে শান্তিপূর্ণ, সুশৃঙ্খল ও নিরাপত্তার সঙ্গে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে সরকারি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি জামায়াতের নিজস্ব প্রায় এক হাজার স্বেচ্ছাসেবক নিয়োজিত ছিলেন।