মেলান্দহে বিএনপির কমিটিতে আ.লীগ নেতা, তৃণমূলে ক্ষোভ
জামালপুরের মেলান্দহে এক আওয়ামী লীগ নেতাকে ইউনিয়ন বিএনপির কমিটিতে সদস্য করা হয়েছে। এ ঘটনায় বিএনপির তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে। এর নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে ত্যাগী নেতাকর্মীকে মূল্যায়ন করে ফের কমিটি গঠনের দাবি জানান তারা।
উপজেলার কুলিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য পদে স্থান পাওয়া ওই আওয়ামী লীগ নেতার নাম গোলাম মতিউর রহমান মুক্তা। তিনি কুলিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য ও টনকী জোবায়দা জোব্বার উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।
এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে ওই ইউনিয়ন বিএনপির নেতারা বলছেন, ‘৫ আগস্টের আগে ওই নেতাকে দেখা গেছে আওয়ামী লীগের মিটিং ও বিভিন্ন কার্যক্রমে। আবার ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে হয়ে গেছেন বিএনপির নেতা। গা বাঁচাতে অনেকের মতো তিনিও আওয়ামী লীগ থেকে বিএনপিতে যোগ দিয়েছেন।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বিএনপি নেতা বলেন, ‘বিগত ১৭ বছর আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে থেকে সকল সুযোগ-সুবিধা নিয়েছেন আ.লীগ নেতা মুক্তা। তিনি কিভাবে এ কমিটিতে স্থান পেলেন। মুক্তাসহ গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর বিএনপি সেজে যারা দলে ঢুকে পড়েছেন, সেসব আওয়ামী লীগ কর্মীকে প্রতিহত করতে হবে। গত ১৭ বছর থেকে বিএনপির ইউনিয়ন নির্যাতিত নেতাদের বাদ দিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাকে দিয়ে ইউনিয়ন বিএনপির কমিটি ঘোষণা করায় আমরা ক্ষিপ্ত। কমিটি থেকে তাকে বাদ দিয়ে ত্যাগী নেতাকে অন্তর্ভুক্ত করার জোর দাবি জানাচ্ছি।’
কুলিয়া ইউনিয়নের ১ নং ওর্য়াড বিএনপির সভাপতি সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘এটা তো ঠিক হয়নি। তাকে বহিষ্কারে জন্য হট্টগোল হচ্ছে এখানে। এর মধ্যে আমিও আছি। এটা কোনোভাবেই সম্ভব না। এর প্রতিবাদ জানাচ্ছি। অনেক ত্যাগী সিনিয়র নেতারা কমিটি থেকে বাদ পড়েছেন।’
আপনারা জানার পরেও তিনি কিভাবে কমিটিতে স্থান পেলেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটা নেতা দিয়েছেন।’
এদিকে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. সাইদুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘২০২১ সালে ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের মাধ্যমে তাকে সদস্য করা হয়। ঐ কমিটির আমি সাধারণ সম্পাদক। কমিটি এখনো বলবৎ রয়েছে, বিলুপ্ত হয়নি। মানুষ তো আসলে বহুরূপী স্বার্থের জন্য এসব করে। এতদিন আওয়ামী লীগে থেকে সুযোগ সুবিধা নিয়েছেন তিনি। এটা আসলে তার ব্যক্তিগত অভিরুচি। তবে আমাদের কমিটিতে কয়েক বছর ধরে থাকলেন। এখন আবার বিএনপিতে যোগ দিয়েছেন। বিষয়টি আমার সভাপতিকে জানিয়েছি।’
অভিযুক্ত গোলাম মতিউর রহমান মুক্তা মুঠোফোনে বলেন, ‘কেউ হয়ত আওয়ামী লীগের কমিটিতে নাম দিয়েছে, আমি তা জানি না। স্কুলের প্রধান হিসেবে তখন বাধ্য হয়েই আওয়ামী লীগের কর্মসূচিতে যেতে হয়েছে। আমি অনেক আগে থেকেই বিএনপি করি।’
এ বিষয়ে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এড. শাহ মো. ওয়ারেছ আলী মামুন বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
বিএনপি কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির কোষাধ্যক্ষ এম রশিদুজ্জামান মিল্লাত বলেন, ‘এই ধরনের কোনো কার্যক্রম হলে অবশ্যই সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমাদের যদি কেউ অভিযোগ দেন, আর সেই অভিযোগ যদি প্রমাণিত হয়, তাহলে যারা কমিটি দিয়েছেন তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’