খোলাবাজারে ড্রামে ভোজ্যতেল বিক্রির ঘোষণার তীব্র নিন্দা সারোয়ার ওয়াদুদ চৌধুরীর
বাণিজ্য উপদেষ্টার খোলাবাজারে ড্রামে ভোজ্যতেল (সয়াবিন ও পাম্পওয়েল) বিক্রির ঘোষণার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন দুর্নীতি বিরোধী জাতীয় সমন্বয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক সারোয়ার ওয়াদুদ চৌধুরী।
আজ বুধবার বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক মানববন্ধনে তিনি এ দাবি করেন।
সারোয়ার ওয়াদুদ চৌধুরী বলেন, ‘রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের মাধ্যমে বিপ্লবী সরকার গঠনে জনগণের আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী দেশ বাঁচাতে সৎ নির্মোহ দেশপ্রেমিকদের নিয়ে উপদেষ্টা পরিষদ পূর্ণগঠন করতে হবে।’
তিনি দ্রুত সরকারী কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব জনসম্মুখে প্রকাশ করতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রতি অনুরোধ জানান।
আরও পড়ুন:
রাজধানীতে কিশোরীসহ ২ জনের মরদেহ উদ্ধার
আইন অমান্য করে বাণিজ্য উপদেষ্টা অস্বাস্থ্যকর, অনিরাপদ খোলাবাজারে নন ফুড গ্রেড ড্রামে ভোজ্যতেল (সয়াবিন ও পাম্পওয়েল) বিক্রির ঘোষণার জন্য অবিলম্বে উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি করেন।
দুর্নীতি বিরোধী জাতীয় সমন্বয় কমিটির সদস্য জাতিসংঘের সাবেক বিচারক ড. মো. শাহজাহান সাজুর সভাপতিত্বে মানববন্ধন সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক ড. সৈয়দ মোঃ সামছুদ্দীন, এড. হুমায়ন কবির ভুঁইয়া, সেতারা রেজভী লাকী, ঢাকা মহানগর উত্তরের যুগ্ম আহ্বায়ক শওকত আলী খান, সদস্য সচিব আবুল কালাম আজাদ, প্রকৌশলী মনির আহমেদ, প্রকৌশলী মোর্শেদ আমিন, আসাদ পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শামসুজ্জামান মিলন, জাতীয় তরুণ সংঘের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এ কে এম ফজলুল হক, নুরুল হুদা চৌধুরী মিলু, জাকির হোসেন খান, মাহফুজা আক্তার মনি, নাফিজ মাহবুব, আদিনা খান, কবি কাজী আলম, জুয়েল লাল সরকার, আনোয়ার হোসেন রুমি, বাংলাদেশ পেট ফ্লেক্স ম্যানুফ্যাকচারার্স এন্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের বিশ্বজিৎ সাহা, মজিবুর রহমান ইমন, এম হাফিজ উল্লাহ, হাজী বদরুল ইসলাম, হাজী সোহেল, গিয়াস উদ্দিন আরজু, শামসুল করিম নাসের, ফারুক পাঠান, আসাদুর রহমান রিপন, মাহমুদ আজম পলাশ প্রমুখ।
বাংলাদেশে ভোজ্যতেল ভিটামিন ‘এ’ সমৃদ্ধকরণ আইন-২০১৩ এবং ভোজ্যতেল ভিটামিন ‘এ’ সমৃদ্ধকরণ বিধিমালা- ২০১৫ অনুযায়ী সকল ভোজ্যতেলে নির্ধারিত মাত্রায় ভিটামিন ‘এ’ সমৃদ্ধকরণ বাধ্যতামূলক। সম্প্রতি আইসিডিডিআরবি’র গবেষণা বলছে, ড্রামে বাজারজাতকৃত ৫৯% ভোজ্যতেল ভিটামিন ‘এ’ সমৃদ্ধ নয় এবং ৩৪% ভোজ্যতেলে সঠিক মাত্রায় ভিটামিন ‘এ’ নেই। খোলা ড্রামের অনিরাপদ ভোজ্যতেল ব্যবহারের কারণে মানুষের মধ্যে বিভিন্ন দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা বাড়ছে।
আরও পড়ুন:
নির্বাচন নিয়ে কী ভাবছে এলডিপি?
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ১৮(১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী জনস্বাস্থ্যের উন্নয়ন এবং সুরক্ষার দায়িত্ব রাষ্ট্রের। আইন থাকলেও কোভিড এর কারণে বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে খোলা সয়াবিন তেল বাজারজাতকরণের সময়সীমা ৩১ জুলাই ২০২২ এবং খোলা পামঅয়েল বাজারজাতকরণের সময়সীমা ৩১ ডিসেম্বর ২০২২ পর্যন্ত সরকার বৃদ্ধি করে। উক্ত সময়ের পর শতভাগ ভোজ্যতেল ফুডগ্রেড বোতল, প্লাষ্টিক ফয়েল বা পাউচপ্যাকে বাজারজাতকরণ নিশ্চিত করার নির্দেশ দেওয়া হয়। আইন অনুযায়ী অনিরাপদ প্যাকেজিং অর্থাৎ ফুডগ্রেড বিহীন ড্রামে ভোজ্যতেল বাজারজাতকরণ দন্ডণীয় অপরাধ।
অথচ আইন ও বিধিমালা থাকা সত্ত্বেও সম্প্রতি বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘মাসখানেক হলো বাজার থেকে খোলা সয়াবিন তেল কিনে খাচ্ছেন এবং খোলা ও বোতলজাত সয়াবিনের মান একই শুধু দামেই তফাৎ।’
বাণিজ্য উপদেষ্টার এমন বক্তব্যে দুর্নীতি বিরোধী জাতীয় সমন্বয় কমিটি তীব্র প্রতিবাদ জানায়।