নির্বাচনের আগে গণহত্যার বিচার করতে বললেন জামায়াত নেতা রফিকুল

রাজশাহী ব্যুরো
০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৯:৩২
শেয়ার :
নির্বাচনের আগে গণহত্যার বিচার করতে বললেন জামায়াত নেতা রফিকুল

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই জুলাই-আগস্টে সংঘটিত গণহত্যার বিচার সম্পন্ন করার দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান।

আজ বুধবার দুপুরে রাজশাহী নগরীর একটি মিলনায়তনে জুলাই বিপ্লবের শহীদ স্মারকের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ বলেন।

রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবসহ দেশের ১০টি স্থানে অনলাইনে একযোগে স্মারকের মোড়ক উন্মোচন করেন জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান।

রফিকুল ইসলাম খান বলেন, ‘ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে গিয়ে দুই হাজারেরও অধিক লোক জীবন দিয়েছেন। ৩৮ হাজার মানুষ রক্ত দিয়েছেন, পঙ্গু হয়েছেন, এই গণহত্যার বিচার করতে হবে আগে। কিন্তু গণহত্যার বিচারের আওয়াজ এত পাই না। ১৮ কোটি মানুষের দাবি, এই গণহত্যার বিচার করতে হবে।’

প্রধান উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করে জামায়াত নেতা বলেন, ‘অবশ্যই নির্বাচন হতে হবে, তবে গণহত্যার বিচারের পর। গণহত্যার বিচার বাদ দিয়ে নির্বাচন, এ জাতি আশা করে না। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আপনারা নির্বাচন দেবেন, এর মধ্যেই গণহত্যার বিচার করতে হবে। এখনো ফ্যাসিবাদের দোসর সরকারের ভেতরে বাইরে বিভিন্ন জায়গায় আছে, তাদেরকে চিহ্নিত করুন, গ্রেপ্তার করুন, বিচারের আওতায় আনুন। আর প্রয়োজনীয় সংস্কার করে জাতীয় সংসদ নির্বাচন দিয়ে নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন।’

তিনি আরও বলেন, ‘আপনারা যারা উপদেষ্টা আছেন, তারা খুব আরামে আছেন। কিন্তু শহিদ পরিবারগুলো কীভাবে আছে সেই খোঁজ আপনারা রাখছেন না। জাতি সবই দেখছে, আপনারা কে কোথায় আন্দোলন করেছেন তা-ও আমরা জানি। কে কতটুকু আন্দোলন করেছেন তা-ও আমরা জানি। কাজেই শহিদ ও আহত পরিবারের দেখভাল করা ও তাদের সুচিকিৎসা গ্রহণের ব্যবস্থা করার আহ্বান জানাই।’

জামায়াত নেতা বলেন, ‘আপনারা (অন্তর্বর্তীকালীন সরকার) ক্ষমতায় বসেননি, আপনাদের ক্ষমতায় বসানো হয়েছে। আর যেন এ দেশে কোনো ফ্যাসিবাদের উত্থান হতে না পারে, এ ব্যাপারে ১৮ কোটি মানুষকে সজাগ থাকতে হবে। আর যেন এ দেশের ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে গিয়ে সন্তানদের জীবন দিতে না হয়, পঙ্গু হতে না হয় এ ব্যাপারে আমরা সবাই যত্নবান থাকব ইনশাআল্লাহ।’

তিনি বলেন, ‘কেউ তো এমপি, মন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী, ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য জীবন দেয় নাই। রিকশাওয়ালা, ঠেলাওয়ালা, ছাত্র, শ্রমিক ফ্যাসিবাদকে বিতাড়িত করার জন্য জীবন দিয়েছে। সাড়ে ১৫ বছরে আমরা রাজনীতিবিদরা চেষ্টা করিনি? আমাদের আন্দোলন কোনো যৌক্তিক পরিণতি লাভ করেনি সত্য কথা। এই ছাত্র, যুবক ভাইয়েরা আন্দোলন শুরু করেছে, আমরা সবাই সেখানে যুক্ত হয়েছি এবং সম্মিলিত আন্দোলনে ফ্যাসিবাদের বিদায় হয়েছে।’

প্রত্যেকটি শহিদ পরিবার থেকে কমপক্ষে একজনকে সরকারি চাকরিতে নিয়োগ করারও আহ্বান জানান জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি।

রাজশাহী মহানগর জামায়াতের আমির মাওলানা ড. কেরামত আলীর সভাপতিত্বে ও সহকারী সেক্রেটারি অধ্যাপক শাহাদৎ হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন রাজশাহী মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ আলী ইশা, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য মাঈন উদ্দিন ও রাজশাহী মহানগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক নজরুল হুদা।

আরও উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী মহানগর জামায়াতের নায়েবে আমির আবু মোহাম্মদ সেলিম, সাংগঠনিক সেক্রেটারি জসিম উদ্দিন সরকার, শিল্প ও বাণিজ্য সম্পাদক সারওয়ার জাহান প্রিন্স, প্রকাশনা সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম, অফিস সম্পাদক তৌহিদুর রহমান সুইট, প্রচার ও মিডিয়া সম্পাদক আশরাফুল আলম ইমন, সমাজ কল্যাণ সম্পাদক কামরুজ্জামান সোহেল, যুব সম্পাদক সালাহউদ্দিন আহমেদসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।