এসিল্যান্ডকে ‘চাঁদা না দেওয়ায়’ চালক আটক, এরপর যা ঘটল
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা সহকারী কশিনারকে (ভূমি) সাপ্তাহিক চাঁদা না দেওয়ায় ট্রাক ও এক্সভেটর চালককে আটক করার অভিযোগে সুনামগঞ্জ-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করেছেন বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা। এ সময় ট্রাক শ্রমিকদের তোপের মুখে পড়ে আটক চালকদের ছাড়তে বাধ্য হন এসিল্যান্ড।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে সুনামগঞ্জ পৌর শহরের মল্লিকপুরের নতুন বাসস্টেশন এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
ট্রাক শ্রমিকরা জানান, নদীতে বালু-পাথর উত্তোলন বন্ধ থাকায় ট্রাক চালক ও শ্রমিকরা মাটি পরিবহন করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। এজন্য এসিল্যান্ডের নামে তার অফিসের নাজির কাম ক্যাশিয়ার মুরাদ মিয়া প্রতি মাসে ১০ লাখ টাকা হিসেবে সপ্তাহে আড়াই লাখ টাকা চাঁদা নেন। এই সপ্তাহের চাঁদা না দেওয়ায় আজ দুপুরে নাজির মুরাদ মিয়া এসিল্যান্ডকে সঙ্গে নিয়ে এসে একজন ট্রাক ও একজন এক্সভেটর চালককে আটক করেন। এ সময় খবর পেয়ে ক্ষুব্ধ ট্রাক শ্রমিকরা সুনামগঞ্জ-সিলেট মহাসড়কে আড়াআড়ি ট্রাক রেখে যানচলাচল বন্ধ করে দেন। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে যান চলাচল স্বাভাবিক হয় এবং শ্রমিকদের চাপের মুখে আটক চালকদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
শ্রমিকরা এসিল্যান্ড ও স্থানীয় গণমাধ্যকর্মীদের উপস্থিতিতে নাজির মুরাদ মিয়ার বিরুদ্ধে চাঁদা নেওয়ার অভিযোগ করেন। তবে নিজের বিরুদ্ধে করা অভিযোগ মিথ্যা দাবি করেছেন অভিযুক্ত নাজির মুরাদ মিয়া।
সুনামগঞ্জ জেলা ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আব্দল জাহান বলেন, ‘আমরা নিরীহ শ্রমিক। দীর্ঘদিন ধরে আমরা এসিল্যান্ডের যন্ত্রণা সহ্য করছি। পরে নাজিরের মাধ্যমে আমরা কনট্রাকে এসেছি। প্রতি সপ্তাহে আড়াই লাখ টাকা করে মাসে ১০ লাখ টাকা দেব। এই সপ্তাহে টাকা না দেওয়ায় আমাদের শ্রমিকদের ধরে নিতে চেয়েছিল। সব শ্রমিক আন্দোলনে নামলে বাধ্য হয়ে ছেড়ে দেয়।’
সুনামগঞ্জ জেলা ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক নুর উদ্দিন বলেন, ‘আমাদের শ্রমিকরা লেখাপড়া করেনি, তবে তারা কোনো অপরাধ করেনি। তারা ঠিকাদারের মাটি পরিবহন করতে ভাড়ায় কাজ করছেন। শ্রমিকরা জানিয়েছেন এসিল্যান্ডকে সাপ্তাহিক চাঁদা না দেওয়ায় ২ জন শ্রমিককে আটক করে নিতে চেয়েছিলেন। খবর পেয়ে আমরা এসিল্যন্ডের কাছে জানতে চাইলে তিনি আমাদের কথা শুনতে রাজী হননি এবং শ্রমিকদের নিয়ে যেতে চাইছিলেন। তখন শ্রমিকরা রাস্তা অবেরাধ করে বিক্ষোভ শুরু করলে শ্রমিকদের ছেড়ে দেওয়া হয়। ’
এ বিষয়ে কথা বলতে এসিল্যান্ড মো. ইসমাইল রহমানকে কয়েক বার ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। সরকারি মোবাইলের ওয়াটস্আপে বার্তা পাঠালেও সাড়া দেননি। তবে উপস্থিত গণমাধ্যমকর্মীদের তিনি বলেছেন, ‘তিনি কোনো চাঁদা নেননি। তার কার্যালয়ের কেউ যদি শ্রমিকদের কাছ থেকে চাঁদা নিয়ে থাকে এবং অফিসে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। ’