মাদক বেচাকেনা নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে তরুণকে কুপিয়ে হত্যা

তালতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি
০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৪:০৬
শেয়ার :
মাদক বেচাকেনা নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে তরুণকে কুপিয়ে হত্যা

বরগুনার তালতলীতে মাদক বেচাকেনা নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে মো. আরাফাত খান (২২) নামের এক তরুণকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। গতকাল শনিবার রাত ৯টার দিকে উপজেলার শারীরিকখালী ইউনিয়নের কচুপাত্র বাজারে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর সাগর নামে একজনকে আটক করেছে পুলিশ।

নিহত আরাফাত খান উপজেলার শারীরিকখালী ইউনিয়নের বাদুরগাছা গ্রামের জলিল খানের ছেলে। তিনি পেশায় মোটরসাইকেল চালক। এ সময় নিহতের সঙ্গে থাকা হাবিব উল্লাহ গুরুতর আহত হয়ে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

নিহত আরাফাত খানের পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শহীদ সিকদার ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে মাদক কেনাবেচার অভিযোগ আছে। গত বৃহস্পতিবার শহীদ সিকদারের ছেলে সোহেল সিকদার ও আরাফাত সিকদার কচুপাত্রা বাজারে মাদক বিক্রি করছিলেন। তখন আরাফাত খান তাদের বাধা দেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়।

গতকাল শনিবার রাতে আরাফাত তার প্রতিবেশী হাবিব উল্লাহকে নিয়ে কচুপাত্রা বাজারে যাচ্ছিলেন-এ সময় শহীদ সিকদার, তার দুই ছেলে সোহেল সিকদার, আরাফাত সিকদার ও ভাতিজা বায়েজিদ সিকদারসহ ১০ থেকে ১২ জন মোটরসাইকেলের গতি রোধ করেন। তারা আরাফাত খানকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে ফেলে চলে যান। 

এ সময় আরাফাতের প্রতিবেশী হাবিব উল্লাহ গুরুতর আহত হন। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আরাফাত খানকে মৃত ঘোষণা করেন। আহত হাবিব উল্লাহকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন।

প্রত্যক্ষদর্শী বেল্লাল হোসেন বলেন, ‘আমি মারামারির খবর শুনে যাই। এ সময় আরাফাত খানের ওপর আরাফাত সিকদারের নেতৃত্বে হামলা করতে দেখতে পাই। আরাফাতকে রক্ষা করতে গেলে আমার হাতে আঘাত লাগে। পরে আরাফাতকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়।’

অভিযুক্ত আরাফাত সিকদারের বাড়ি উপজেলার পচাকোড়িয়া ইউনিয়নের কলা রং গ্রামে। ঘটনার পর থেকে তিনি ও তার পরিবারের সদস্যরা পলাতক রয়েছেন।

নিহত আরাফাতের বাবা জলিল খান বলেন, ‘আমার ছেলে মাদক সেবনে বাধা দেওয়ায় তাকে হত্যা করা হয়েছে। আমি এ হত্যার বিচার চাই।’

উপজেলা ছাত্রদলের সদস্যসচিব জহিরুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনার সঙ্গে আরাফাত সিকদার জড়িত থাকালে তার বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তালতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহজালাল বলেন, মোটরসাইকেল চালক আরাফাত খান হত্যার ঘটনায় সাগর নামে একজনকে আটক করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের সিগারেট খাওয়াকে কেন্দ্র করে এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে বলে জানা গেছে। তবে অধিকতর তদন্তের সাপেক্ষে বিস্তারিত জানা যাবে। 

লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বরগুনা সদর হাসপাতালে মর্গে পাঠানো হয়েছে বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।