বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ত্রাস সৃষ্টিকারী জ্যোতি গ্রেপ্তার
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে প্রকাশ্যে হাতে রামদা নিয়ে ঠাকুরগাঁও শহরে ত্রাস সৃষ্টি করা জ্যোতিকে (৩২) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল শুক্রবার রাতে ঠাকুরগাঁও শহরের আশ্রমপাড়া এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার হওয়া জ্যোতি শহরের আশ্রমপাড়া এলাকার রূপকুমার গুহ ঠাকুরের ছেলে। তিনি মুক্তিযোদ্ধা কোটায় পুলিশ কনস্টেবল পদে কিছুদিন চাকরি করলেও পরে চাকরিচ্যুত হন।
২০২৪ সালের ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ঠাকুরগাঁও শহরের চৌরাস্তা এলাকায় প্রকাশ্য রামদা হাতে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালান জ্যোতি।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, জ্যোতির বিরুদ্ধে থানায় মামলা রয়েছে। তার বিরুদ্ধে নাশকতা, হামলা ও অস্ত্র আইনসহ বিভিন্ন ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ইলিয়াস রহমান বলেন, জ্যোতি খালি গায়ে হাতে বিশাল একটা রামদা নিয়ে ঠাকুরগাঁও শহরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়েছেন। ওই হামলায় বেশ কয়েকজন ছাত্র গুরুতর আহত হন। ঘটনার পর থেকে তিনি দীর্ঘদিন আত্মগোপনে ছিলেন। তার মতো আরও অনেকেই প্রকাশ্যে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সেদিন হামলা করেছিল, তাদেরকে গ্রেপ্তারের দাবি জানাই।
জ্যোতির গ্রেপ্তারের খবরে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরাসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষক রাজিউর রহমান বলেন, জুলাই বিপ্লবে ঠাকুরগাঁও জেলা শহরে প্রথম থেকেই চাকরির পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের পাশে থেকে আন্দোলনে সক্রিয় ছিলাম। নিজ চোখেই দেখেছি পুলিশ ও স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগের দোসররা কিভাবে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করেছে। আমি ব্যক্তিগতভাবে চাই আন্দোলনে হামলাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জ্যোতির নিজ এলাকার একজন বাসিন্দা বলেন, এলাকায় জ্যোতি নিজেকে স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা হিসেবে পরিচয় দিত। তিনি এলাকায় সন্ত্রাসী কার্যক্রম করতেন। ছাত্র আন্দোলনের সময় তিনি রামদা হাতে ছাত্রদের ওপর হামলা করেছিলেন। রামদাসহ তার ছবি ফেসবুকে ভাইরালও হয়। সেদিন থেকে তিনি ‘রামদা জ্যোতি’ হিসেবে পরিচিতি পান। এমন সন্ত্রাসী গ্রেপ্তারে এলাকায় কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে।
ঠাকুরগাঁও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুর রহমান বলেন, শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় জ্যোতির বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে তাকে আদালতে হস্তান্তর করা হবে।