যৌথবাহিনীর হেফাজতে যুবদল নেতার মৃত্যু, বিচার দাবি মির্জা ফখরুলের
কুমিল্লায় যৌথবাহিনী তুলে নেওয়ার পরদিন যুবদল নেতা তৌহিদুল ইসলামের (৪০) মৃত্যুর ঘটনায় বিচার দাবি করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ শনিবার সকালে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে তিনি এ বিচার দাবি করেন।
এতে মির্জা ফখরুল লিখেছেন, ‘যুবদল নেতা তৌহিদুল ইসলাম হত্যার বিচার চাই!’
এর আগে যুবদল নেতা তৌহিদুলের মৃত্যুর ঘটনায় দলের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজেও বিচার দাবি করেছে বিএনপি। গতকাল শুক্রবার রাতে এক পোস্টে এই ঘটনায় জড়িত সেনা সদস্যদের বিচার দাবি করা হয়।
গতকাল রাতে বিএনপির ফেসবুক পেজে দেওয়া পোস্টে বলা হয়, ‘এই নৃশংস বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত সেনাবাহিনীর সকল সদস্যের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।’
আরও পড়ুন:
রাজধানীতে কিশোরীসহ ২ জনের মরদেহ উদ্ধার
এর আগে কুমিল্লায় যৌথবাহিনী তুলে নেওয়ার পর হাসপাতালে তৌহিদুলের লাশ পেয়েছে তার পরিবার। শুক্রবার বেলা সাড়ে ১২টায় তার মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়। তবে কখন তার মৃত্যু হয়েছে সে তথ্য জানা যায়নি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে যুবদল নেতার মৃত্যুর তথ্য জানিয়েছেন তার ভাই আবুল কালাম।
তৌহিদুল কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলার পাঁচথুবী ইউনিয়নের পাঁচথুবী গ্রামের মোখলেছুর রহমানের ছেলে। তিনি ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক ছিলেন।
যুবদল নেতার ভাই আবুল কালাম বলেন, ‘আমার বাবা চার দিন আগে মারা গেছে। আমরা শোকে আচ্ছন্ন। বৃহস্পতিবার রাত আড়াইটার দিকে সেনাবাহিনীর তিনটি গাড়ি ও একটি লাল রঙের গাড়ি আমাদের বাড়িতে আসে। তৌহিদুল ইসলামের কাছে অস্ত্র আছে-এমন অভিযোগে তাকে ধরে নিয়ে যায়। আমার ভাই কখনো অস্ত্র আনতে পারে না। তার সম্পর্কে আমাদের পুরো এলাকা খুব ভালো করে জানে।’
আরও পড়ুন:
নির্বাচন নিয়ে কী ভাবছে এলডিপি?
তিনি বলেন, ‘আমরা বারবার বলার পরও তারা নিয়ে যায় আমার ভাইকে। বেলা সাড়ে ১২টার দিকে কোতোয়ালি মডেল থানা-পুলিশ আমাদের জানায়, তাকে গোমতী পাড়ের গোমতী বিলাশ নামক স্থান থেকে তারা উদ্ধার করেছে। সে নাকি হাসপাতালে আছে। আমরা কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে দেখি তার লাশ। তার শরীরের বেদম মারের আঘাতের চিহ্ন।’
পরিবারের সূত্রে জানা গেছে, তৌহিদুল চট্টগ্রাম বন্দরে একটি শিপিং এজেন্টে চাকরি করতেন। গত রবিবার তার বাবা মোখলেছুর রহমানের মৃত্যুর খবরে তিনি বাড়ি আসেন। আজ বাবার কুলখানি হওয়ার কথা ছিল। তৌহিদুলের মা প্রায় ২০ বছর আগে মারা গেছেন। সংসারে তার স্ত্রী ও চার কন্যা সন্তান রয়েছে।
এ ব্যাপারে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা যুবদলের সদস্যসচিব ফরিদ উদ্দিন শিবলু বলেন, ‘তৌহিদুল ইসলাম কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার পাঁচথুবী ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক ছিলেন। তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে। তার শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত রয়েছে। আমরা ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি এবং ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করছি।’
জানতে চাইলে কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মহিনুল ইসলাম বলেন, গতকাল রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো মামলা হয়নি, কোনো অভিযোগও আসেনি।