দেশের প্রথম ইউপি নারী চেয়ারম্যান মারা গেছেন
হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলায় দেশের প্রথম ইউনিয়ন পরিষদের নারী জনপ্রতিনিধি শামসুন্নাহার চৌধুরী মারা গেছেন।
গতকাল শুক্রবার রাত আড়াইটার সময় ঢাকা বারডেম হাসপাতালে চিকিৎসারত অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত ছিলেন বাংলাদেশের প্রথম ইউনিয়ন পরিষদের নারী জনপ্রতিনিধি শামসুন্নাহার চৌধুরী।
জন্মসূত্রে পার্শ্ববর্তী জেলার মৌলভীবাজারের সন্তান হলেও বৈবাহিক সূত্রে হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলার একজন আলোকবর্তিকা নারী জাগরণের অগ্রদুত হিসেবে দেশব্যাপী সুনাম কুড়িয়েছেন তিনি।
জানা গেছে, তিনি আটাশি দশকের প্রথম নারী ইউপি চেয়ারম্যান হিসেবে বাংলাদেশ রেকর্ডসংখ্যক ভোটে নির্বাচিত হন। উপজেলার ১০নং মিরাশি ইউপি ও ৩নং দেওরগাছ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে ৩ বার নির্বাচিত হন তিনি। নারী ইউপি হিসেবে অসংখ্য অর্জনের মধ্যে শামসুন্নাহার চৌধুরী সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা স্বর্ণপদক পেয়েছেন বলেও জানা যায়।
এছাড়া তিনি চুনারুঘাট উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করাসহ একাধিক পদে দায়িত্ব পালন করেন।
তথ্য মতে জানা যায়, আশির দশকে চুনারুঘাট উপজেলার জনপ্রিয় এক তরুন জনপ্রতিনিধি সিরাজুল ইসলামকে (ওরফে চুনু চৌধুরী) বিবাহের মাধ্যমে সংসার জীবন শুরু করেন। ১৯৮৭ সালে কথিত আততায়ীদের হাতে নির্মমভাবে চুনু চৌধুরী খুন হন। পরিবার ও কুল-কিনারাহীণ ইউনিয়ন পরিষদের হাল ধরতে মাথা উঁচু করে দাঁড়ান তিনি।
পরবর্তীতে চুনারুঘাট উপজেলা পরিষদ ও ৩নং দেওরগাছ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু তাহের সঙ্গে দ্বিতীয় বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন তিনি।
গতকাল শুক্রবার বাদ আছর হাজারো মুসলিম জনতার উপস্থিতিতে আলিম উল্লাহ সিনিয়র আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তার দাফনকাজ সম্পন্ন করা হয়।
মৃত্যুকালে তিনি তার দুই পরিবারে ২ পুত্র সন্তান ও ৫ কন্যা সন্তানসহ অসংখ্য গুনগ্রাহী রেখে যান।
শামসুন্নাহার চৌধুরীর জানাজায় হবিগঞ্জ জেলার বিভিন্ন জনপ্রতিনিধি ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।