জহির রায়হানের অন্তর্ধান দিবস

বিনোদন সময় প্রতিবেদক
৩০ জানুয়ারী ২০২৫, ০০:০০
শেয়ার :
জহির রায়হানের অন্তর্ধান দিবস

‘একটি দেশ/একটি সংসার/একটি চাবির গোছা/একটি আন্দোলন/একটি চলচ্চিত্র...’- এই সেøাগান নিয়ে ১৯৭০ সালের এপ্রিলে পাকিস্তানে মুক্তি পায় একটি ছবি ‘জীবন থেকে নেয়া’। এর নির্মাতা জহির রায়হান। মুক্তিযুদ্ধ শেষ হলে জহির রায়হান ১৯৭১-এর ১৭ ডিসেম্বর ঢাকা ফিরে আসেন। বড় ভাই সাহিত্যিক-সাংবাদিক শহীদুল্লা কায়সার ১৪ ডিসেম্বর থেকে নিখোঁজ। জহির তার বড় ভাইকে খুঁজতে লাগলেন। এমন সময় খবর পেলেন, শহীদুল্লা কায়সার মিরপুরে আটক আছেন। জহির রায়হান মিরপুরে যান। ১৯৭২-এর ৩০ জানুয়ারির পর তার আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।

১৯৬৪ সালে জহির রায়হান নির্মিত উর্দু ছবি ‘সঙ্গম’ ছিল সমগ্র পাকিস্তানের প্রথম রঙিন ছবি। ১৯৬৫ সালে নির্মিত তার ছবি ‘বাহানা’ পাকিস্তানের প্রথম সিনেমাস্কোপ চলচ্চিত্র। ‘মনসামঙ্গল’ পুরাণ থেকে নির্মিত ‘বেহুলা’ ছবিটি মুক্তি পায় ১৯৬৬ সালের সেপ্টেম্বরে। আগস্টে মুক্তি পাওয়া সালাউদ্দিন নির্মিত ‘রূপবান’-এর পথ ধরে ‘বেহুলা’ও প্রচুর জনপ্রিয়তা পায়। এ দুটি ছবিই ছিল বাংলার লোকজ কাহিনি থেকে নির্মিত। বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের ভিত গড়ে দিয়েছিল ছবিগুলো। জহির রায়হান নির্মিত অন্য চলচ্চিত্রগুলো হলো- ‘কখনো আসেনি’, ‘সোনার কাজল’, ‘কাচের দেয়াল’, ‘আনোয়ারা’। এ ছাড়া প্রযোজক ও চিত্রনাট্যকার হিসেবেও তিনি কয়েকটি ছবির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। জহির রায়হান অন্যান্য ভূমিকাতেও সমুজ্জ্বল। প্রথম জীবনে বাম রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনে প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ করেছিলেন। ২১ ফেব্রুয়ারি সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দশ জনের খ- খ- মিছিলের প্রথমেই ছিলেন জহির। সাহিত্যিক হিসেবেও তিনি যথেষ্ট নাম কুড়িয়েছিলেন। তার লেখা কয়েকটি উপন্যাস হলো- ‘শেষ বিকেলের মেয়ে’, ‘হাজার বছর ধরে’, ‘আরেক ফাল্গুন’, ‘বরফ গলা নদী’, ‘আর কতদিন’, ‘কয়েকটি মৃত্যু’, ‘তৃষ্ণা’ প্রভৃতি।