সাতক্ষীরায় বিএনপির সম্মেলন ঘিরে সংঘর্ষে আহত ১৫, ১৪৪ ধারা জারি
সাতক্ষীরার আশাশুনির বুধহাটা ইউনিয়ন বিএনপির সম্মেলন ঘিরে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে উভয়পক্ষের কমপক্ষে ১৫ জন আহত হয়েছেন। আজ বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বুধহাটার বেউলা সাইক্লোন শেল্টার মাঠে এ ঘটনা ঘটে। পরে সম্মেলনস্থলে ১৪৪ ধারা জারির পাশাপাশি ওই এলাকায় পুলিশ ও সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
জানা গেছে, বুধহাটা ইউনিয়ন বিএনপির ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন আহ্বান করে বিএনপির একটি পক্ষ। আজ সকাল ১০টায় ইউনিয়নের বেউলা সাইক্লোন শেল্টার মাঠে কমিটি নির্বাচনে ভোটগ্রহন শুরু করা হয়। এসময় অপর পক্ষ সেখানে সমাবেশের ঘোষণা দিলে আশাশুনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কৃষ্ণা রায় সম্মেলনস্থলে ১৪৪ ধারা জারি করে মাইকে ঘোষণা দেন। ১৪৪ ধারা উপেক্ষা করে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে অপর পক্ষের শতাধিক নেতা কর্মী সম্মেলন স্থলে গেলে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়।
সংঘর্ষের সময় ইট-পাটকেল নিক্ষেপ, রড-লাঠি নিয়ে করা হামলায় আশাশুনি উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক পলাশ, উপজেলা যুবদলের সাবেক সহসভাপতি বকুল, ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি শফি, কল্লোল, দিপু, আশিক, শফিকুল ও আছাফুর ও অপর পক্ষের উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক রবিউল আওয়াল ছোট, যুবদল কৃষিবিষয়ক সম্পাদক রমজান আলী, যুবদলকর্মী আজমিনুরসহ কমপক্ষে সাতজন আহত হয়।
পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যর্থ হলে ইউএনও কৃষ্ণা রায়, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাশেদ হোসাইন অতিরিক্ত পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যদের নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে সবাইকে ছত্রভঙ্গ করে দেন। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এলাকা দখলে নিলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
সম্মেলন আয়োজনকারীদের মধ্যে উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব মশিউল হুদা তুহিন, যুবদলের সদস্যসচিব আবু জাহিদ সোহাগ বলেন, পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী সকাল ১টা থেকে তারা ভোটগ্রহণ করছিলেন। প্রতিপক্ষ পরিকল্পিতভাবে রড, লাঠি, ইট-পাটকেল নিয়ে হামলা করে সম্মেলন পন্ড করে দেয়। কর্মী ও জনগণ ক্ষিপ্ত হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুললে তারা ফিরতে বাধ্য হয়। এরপর তারা পুনরায় শান্তিপূর্ণভাবে ভোট শুরু করেন।
এ দুই নেতা বলেন, অধিকাংশ ভোটার ভোট দিয়েছেন। তবুও প্রশাসন ভোট দিতে আসা ভোটারদের তাড়িয়ে দিয়ে সম্মেলন পন্ড করা দিয়েছে বলে অভিযোগ করেন তারা।
অপরপক্ষের উপজেলা বিএনপির আরেক অংশের আহ্বায়ক আসিফুর রহমান তুহিন, সদস্যসচিব জাকির হোসেন বাচ্চু, যুগ্ম আহ্বায়ক খায়রুল আহসান বলেন, খুলনা বিভাগীয় টিমের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে নির্ধারিত তারিখের আগেই ত্যাগী নেতাদের বাদ রেখে গোপনে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী নিয়ে কমিটি গঠন করতে সম্মেলন শুরু করা হয়। এ সময় তাদের নেতাকর্মীরা উপস্থিত হলে হামলা চালিয়ে রক্তাক্ত করে প্রতিপক্ষরা।
ইউএনও কৃষ্ণা রায় বলেন, দুই পক্ষের সংঘর্ষের পর সম্মেলনস্থলে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এটি বলবৎ থাকবে। বর্তমানে ওই এলাকার পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে বলেও জানান তিনি।