স্কুলে ছাত্রশিবির, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদল করেন সাংবাদিক শাকিল
হত্যা মামলায় কারাগারে থাকা সাংবাদিক দম্পতি শাকিল আহমেদ ও ফারজানা রুপাকে নিয়ে ফেসবুকে দীর্ঘ স্ট্যাটাস দিয়েছেন আমার দেশ পত্রিকার বিশেষ প্রতিনিধি অলিউল্লাহ নোমান।
গতকাল মঙ্গলবার রাত ১১টা ৪৪ মিনিটে নিজের ভেরিফায়েড ফেসুবক পেজে এই স্ট্যাটাস দেন শাকিলের সঙ্গে একই স্কুলে পড়াশোনা করা নোমান। তার স্ট্যাটাসটি নিচে হুবহু দেওয়া হলো:
ফারজানা রূপার স্বামী শাকিলকে চিনতাম ছোটবেলা থেকে। আমার কয়েক বছরের জুনিয়র। তার স্কুল জীবনটা কেটেছে আমাদের এলাকায়। তার বাবা আমাদের এলাকায় একটি টেক্সটাইলে প্রশাসনিক কর্মকর্তা ছিলেন। বেশ পরহেজগার এবং ভাল মানুষ ছিলেন তিনি। তাদের সাথে আমাদের পারিবারিক একটা সম্পর্ক ছিল। এই সুবাদে তাদের বাসায় নিয়মিত যাতায়াত ছিল আমার।
শাকিলকে দেখতাম ছোটবেলায় পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়তে। অত্যন্ত ভদ্র ছেলে ও নামাজি। স্কুলে ভাল ছাত্র হিসাবে এলাকায় পরিচিত। ক্রিকেট খেলতেও দেখেছি।
আরও পড়ুন:
রাজধানীতে কিশোরীসহ ২ জনের মরদেহ উদ্ধার
একটি ভাল ছেলেও নৈতিক দিক থেকে এতটা অধপতন হতে পারে শাকিলকে না দেখলে বোঝা যেত না। শাকিল আমাকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে কিভাবে একটা ভাল ছেলের নৈতিক অধপতন ঘটে।
শাকিল স্কুলে ভাল রেজাল্ট করে ১৯৯০ সালে ঢাকা কলেজে ভর্তি হয়। আমি তখন বিএ পরীক্ষা দিয়েছি। মাস্টার্স পড়তে ঢাকায় এসে জানলাম শাকিল ছত্রদল করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। যদিও স্কুলে থাকতে দেখতাম শিবির করতে।
শাকিলের সাংবাদিকতা শুরু মুক্তকণ্ঠ দিয়ে। তখনো সম্ভবত ছাত্রজীবন শেষ হয় নি। মুক্তকণ্ঠ ছিল বেক্সিমকোর পত্রিকা। প্রখ্যাত ও প্রবীন সাংবাদিক কে জি মোস্তফা ছিলেন সম্পাদক। পত্রিকাটি বড় বাজেটে শুরু হলেও বেশি দিন টিকেনি।
আরও পড়ুন:
নির্বাচন নিয়ে কী ভাবছে এলডিপি?
সাংবাদিকতার সুবাদে দেখা হত তখন। আমি সবুজ বাংলা থেকে ততদিনে ইনকিলাবে। শাকিলও মুক্তকণ্ঠ থেকে একুশে টেলিভিশনে। প্রথম বেসরকারি চ্যালেল ছিল একুশে টেলিভিশন। একরকম স্টার সাংবাদিক শাকিল।
শাকিলের স্ত্রী ফারজানা রূপাকে চিনতাম দৈনিক মাতৃভূমির বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার হিসাবে। পর্যায়ক্রমে চ্যানেল আই/ এটিএন হয়ে এক পর্যায়ে ৭১ টিভি। শেখ হাসিনাকে ম্যাজিকের লেডি হিসাবেও তেলমারা খেতাব দিতে দেখেছি সংবাদ সম্মেলনে।
রূপার ম্যাজিকের লেডি পালিয়ে ভারতে চলে গেছেন। আর রূপা বন্দি কারাগারে। তার উপস্থাপনা এবং আওয়ামী ফ্যাসিবাদের বন্দনা দেখে তখন ভাবতাম হায় রে সাংবাদিকতা! ওরাই পেশাটাকে কলঙ্কিত করেছে।
শোনা যায় এই সাংবাদিক দম্পতি এখন হাজার কোটি টাকার মালিক।
আমি আসলে অথর্ব। তাদের আগে পেশায় যোগ দিয়ে প্রথম শ্রেনীর বেতন-বোনাসের পত্রিকায় চাকুরি করেও দিন আনি দিন খাই অবস্থা। পারিবারিক হাটবাজারের খরচের বাইরে এক পাউন্ড অতিরিক্ত খরচ করতে পাঁচবার ভেবে মাসিক আয়-ব্যয়ের হিসাব মিলাতে হয়। সাংবাদিকতা পেশায় তাদের হাজার কোটি টাকার সম্পদ যেন রূপার বয়ান অনুযায়ী শেখ হাসিনার ম্যাজিক থেকে পাওয়া!!!