বনকর্মীদের ওপর হরিণ শিকারীদের হামলার চেষ্টা

শ্যামনগর (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি
২৮ জানুয়ারী ২০২৫, ১৭:০৯
শেয়ার :
বনকর্মীদের ওপর হরিণ শিকারীদের হামলার চেষ্টা

সাতক্ষীরার শ্যামনগরে মীরগাং টহল ফাঁড়ির বনকর্মীদের ওপর হামলার চেষ্টা চালিয়েছে একদল দুবৃর্ত্ত। গতকাল সোমবার রাত ৯টার দিকে ফাঁড়িতে ফেরার পথে উপজেলার হরিনগর বাজার সংলগ্ন পাউবোর বাঁধের ওপর এ ঘট ঘটে। এ সময় মীরগাং টহল ফাঁড়িতে কর্মরত বনকর্মীরা ভিন্ন পথে অপর একটি নৌযান নিয়ে চুনকুড়ি টহল ফাঁড়িতে আশ্রয় নেয়। হামলার ঘটনায় জড়িতরা স্থানীয় বিএনপি ও যুবদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বলে জানিয়েছে প্রত্যক্ষদর্শীরা। গত রবিবার সুন্দরবনের মধ্য থেকে জবাই করা হরিণ উদ্ধারের ঘটনায় ক্ষুব্ধ শিকারীদের পক্ষ নিয়ে তারা ঐ হামলার চেষ্টা চালায় বলে দাবি তাদের।

মীরগাং টহল ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম কিবরিয়া জানান, গতকাল সকালে তারা সুন্দরবন থেকে একটি জবাই করা হরিণ উদ্ধার করে। পরে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করে উদ্ধার করা হরিণ জমা দিতে সাতক্ষীরা আদালতে যায়। সারাদিনের কার্যক্রম শেষে রাত ৯টার দিকে অফিসে ফেরার পথে ১৬/১৭ জন যুবক তাদের ওপর চড়াও হওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় তারা চুনকুড়ি টহল ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্তকর্তার (ওসি) সহায়তা নিয়ে ভিন্ন পথে পালিয়ে জীবনে রক্ষা পান।

গোলাম কিবরিয়া আরও জানান, উদ্ধার করা হরিণ নিয়ে সাতক্ষীরা যাওয়ার পর একদল যুবক বনকর্মীদের সহায়ক সংগঠন সিপিজি দলের সদস্য পরিমল মন্ডলের বড় ভেটখালী গ্রামের বাড়িতে হামলার চেষ্টা করে। এ সময় আনিছুর, সাহেব আলী, আব্দুর রহিমসহ ১০/১২ জন পরিমলের স্ত্রী-সন্তানদের ভয়ভীতি প্রদর্শকসহ হুমকি দেয়। তিনি দাবি করেন উদ্ধার করা হরিণ নিয়ে সাহেব আলী ও আবিয়ারকে পালাতে দেখেছিলেন। যে কারণে হরিণ উদ্ধারের পর সংগত কারণে আসামি হওয়ার ভয় থেকে তারা বনকর্মীদের ‘টার্গেট’ করে হামলার চেষ্টা করছে। বিষয়টি তিনি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিছেন।

স্থানীয় গ্রামবাসী আবুল খায়ের জানান, হামলার নেতৃত্বে ছিলেন মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আবু জাবের মোড়লের ভাগ্নে বিএনপি কর্মী আনিছুর রহমান। এ ছাড়া যুবদল কর্মী সাহেব আলী ও আবিয়ারসহ চুনকুড়ি ওয়ার্ড বিএনপি কর্মী আব্দুর রহিম নিজেদের কর্মী সমর্থকদের জড়ো করেছিলেন হামলার জন্য।’

সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারী রেঞ্জার হাবিবুল ইসলাম জানান, সাতক্ষীরা থেকে ফেরার আগেই হরিণ উদ্ধারের সঙ্গে জড়িতদের ওপর হামলার বিষয়ে তারা হুমকি পেয়েছিলেন। যার পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টি তিনি থানা পুলিশকে অবহিত করে একটি জিডি করে আসার পরার্মশ দেন। কিন্তু রাত হয়ে যাওয়ার পাশাপাশি সারাদিনের দৌড়ঝাঁপে সহকর্মীরা ক্লান্ত থাকার কারণে পরের দিন বিষয়টি পুলিশকে জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে দলের প্রধান ও স্থানীয় বিএনপি কর্মী আনিছুর রহমান জানান, তিনি সুন্দরবনে যাতায়াত করেন না। তারপরও তাকে জড়িয়ে বনকর্মীরা মিথ্যা অভিযোগ দেওয়ায় তিনি লোকজন নিয়ে তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছিলেন। পরিমলের বাড়িতে তথ্য নেওয়ার জন্য যাওয়া হলেও ভয়ভীতি প্রদর্শনের বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন।